somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোনার দেশ কালোথাবা(১ম কিস্তি)

১৩ ই জুলাই, ২০০৯ দুপুর ১২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৪৯৮ সালের ২০ মে।অনেক দিন হল জাহাজ নিয়ে সমুদ্রে পাড়ি জমিয়েছেন নাবিক।ভারত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে এ প্রথম কোন পত্ররগীজ নাবিক ভারত উপমহাদেশে ভেসে আসলেন।জাহাজের রসদ ফুরিয়ে আসছে।পথিমধ্যে মহামারী লেগে প্রানহানির সাথে সাথে বিপুল খাদ্য অপচয় হয়ে গেছে।নাবিক চিন্তিত মনে জাহাজের মাস্তুলে দুরবিন দিয়ে তীরের খোজ করছেন.হঠাত নাবিকের কপালের চিন্তার রেখা দূর হয়ে মুখে হাসি ফুটল।উপকুলের চিনহ দেখা যাচ্ছে।মালাবার উপুকুলে জাহাজ ভীরল।জাহজের যাত্রীদের বিস্ময় চরমে উঠল।অপিরিচিত সমৃদ্ধ নগরীর শোভা দেখে লোভাতুর হয়ে উঠল বনিকদের মন।কিছুদিন ঘাটি গেড়ে থাকার বাসনা জাগল।এদিকে নিজ দেশে মুসল্মান অধিবাসীরা বিধরমী বনিকদের মেনে নিতে পারলনা।লড়াই বেধে গেল।
মুসলিম শাস্নের অধীনে থাকা একজন হিন্দু কালিকটের রাজা জামুরিন আশ্রয় দিলেন নাবিককে।প্রান নিয়ে নাবিক ফিরে যান।১৫০২ সালে আবার ফিরে আসেন নাবিক ।এবার জামুরিনকে পরাজিত করে দখল করে নেন কালিকট।এ নাবিকের নাম ভাস্কো দ্যা গামা।সমৃদ্ধ নগরী টি হল ভারত উপমহাদেশ।যার অন্যতম একটি অংশ ছিল বাংলাদেশ১৫০৫ সালে সেই নাবিকের উত্তরসুরী ফানসো দ্য আলমেডিয়া ১৫শ সৈন্য নিয়ে মালাবার উপকুলে এসে লুটপাট করত।১৫১০ সালে গোয়া অধিকার করে এদেশে প্রভাব বিস্তার করে ফানসো দ্যা আল বুকাক।আর এভাবেই সোনার দেশের কোমল বুকে পড়ে কালো শকুনের থাবা।
১৬০০ সালে এ দেশে বানিজ্য করার ছলে ইংরেজদের আগমন ঘটে।ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বানিজ্য করার অনুমতি নিয়ে গোপনে একে নেয় সোনার মাটির রক্ত শুষে নেয়ার নীল নকশা।১৬০২ সালে ডাচ,১৬০৪ সালে ফরাসী,১৬১২ সালে দিনেমার ,১৬৩৩ সালে স্পেনীয়,১৭২৩ সালে অষ্ট্রিয়,১৭৩১ সালে সুইডিশ ,১৭০৫ সালে ক্রুশীয় বনিক রা বানিজ্য জাহাজ নিয়ে এদেশে আসে।(আমদের জাতিসত্বার বিকাশ ধারা,আব্দুল মান্নান)
১৬৮২ সালের পর থেকে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর এজেন্ট রা দেশের ভিতর লুন্ঠন,বানিজ্যিক শত্রর্ব লংঘন ,সৈন্য সমাবেশ ইত্যাদি কাজে লিপ্ত হয়ে পরে,১৬৮৭ সালে সুবেদার শায়েস্তা খান কোম্পানীর বানিজ্য বন্ধ করে দেন।১৬৮৮ সালে ইব্রাহীম খানের নিকট ক্ষ্মা চেয়ে তারা আবার বানিজ্য করার অনুমতি নেয়।ইংরেজ্ রা তাদের কুচক্রি বানিজ্য বাস্তবায়নের জন্য দেশিয় হিন্দুদের সাহায্য নেয়।মুসলিম শাসনের অধিনে দীঘ দিন থাকা হিন্দুরা দেশের স্বাধীনতা বিক্রি করে দেয় ভীনদেশী লুটেরাদের সাথে নিজ স্বাথ্রর জন্য ।কোম্পানীর তাদের ব্যাবসার জন্য হিন্দুদের নিয়োগ করে।
১৭৪০ সালে আলীবর্দী খানের স্ময় মাথা চাড়া দিয়ে উঠে বিদেশী ডাকাতের দল।১৭৫৬ সালে নবাবের মৃত্যুর পর মসনদে বসেন নবাব সিরাজুঊদ্দলা ।তার বিশ্বস্ত কর্মচারী ইয়ার লতীফ,মীর জাফর ,জগত শেঠ ,বল্লব রায় ইংরেজদের সাথে চুক্তি করে ১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন পলাশীর আমবাগানে দেশের স্বাধীনতার সূর্য বিসর্জন দেয়।এভাবেই সুজলা সুফলা বাংলা পরাধীনতার শিকলে বাধা পড়ে।দেশ মাতার মর্যাদা ফিরিয়ে আনার জন্য ১৭৬৪ সালে মীর কাসিম ,১৮৩১ সালে তিতুমীর,ফকীর মজনু শাহ,বালাকোটে সৈয়দ আহমেদ,ফরায়েজী আন্দোলনের হাজী শরীয়তুল্লাহ ,১৮৫৭ সালে সীপাহি বিদ্রোহে মুসলমান রা জান প্রান দিয়ে লড়াই করে ।
কোম্পানী এ দেশে হিন্দু সেবাদাসদের সহায়তায় শুরু করে চরম নির্যাতন।ধন ভান্ডারে সুশোভিত দেশের কোষাগার খালি করে লর্ডক্লাইভ বনে যায় ইংল্যান্ডের সেরা ধনীতে।ইংল্যান্ডের পার্লামেন্ট ক্লাইভের বিরুদ্ধে ঘুষ ও দূর্নিতীর অভিযোগ আনলে ক্লাইভ নিজের সাফাই গেয়ে জানায়,
“পলাশীর যুদ্ধে জয় লাভের পর আমার যে অবস্থা হয়েছিল তা আপনারা ভেবে দেখুন।একজন বড় রাজার ভাগ্য আমার দয়ার উপর নির্ভ্র করছে।একটি সমৃদ্ধ নগরী আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমার মুখের সামান্য হাসিতে কৃতার্থ হবার জন্য ধনী মহাজন রা একে অন্যের সাথে প্রতিযোগীতা করছে।আমার দু পাশে স্বর্ন মনি মুক্তার সিন্দুক খোলা।সভাপতি মহোদয় আমি নিজেই ভেবে অবাক হই সে সমইয় আমি নিজেকে কিভাবে সংযত রেখেছিলাম।(Fourth parliamentry report 1773,p-535)_
নিজ স্বার্থ রক্ষার জন্য এ দেশীয় দালাল গোমস্তাদের সাহায্যে তারা প্রচন্ড লুটপাট চালায়।চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে জমির মালিকানা তুলে দেয়া হয় দেশীয় দালাল দের হাতে।নীল চাষের মাধ্যমে ,খাজনার পাহাড় চাপিয়ে
প্রজাদের নির্যাতন করে ইংরেজ প্রভুদের খুশি রাখত হিন্দু জমিদারগন।
এদেশ থেকে বিপুল পরিমান কাচা মাল নিয়ে ইংল্যান্ড এ করা হয় শিল্প বিপ্লব।দেশের অর্থনিতী ধংস করে দেয়া হয় কলে উতপ্নন কম দামে পোশাকের মাধ্যমে।সদ্য ক্ষমতা হারানো মুসলমানদের করা হয় বঞ্চিত।সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার গুলোকে ধংস করে দেয়া হয়।নিজ দেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য চেস্টারত মুসলমা রা ব্রিটিশ রোষানলে পড়ে পিছিয়ে পড়তে থাকে ক্রমাগত।
১৯০৫ সালের দিকে ঢাকাকে রাজধানী করে নতুন প্রদেশ করার ঘোষনা দেয়া হয়।নাম দেয়া হয় পূর্ব্বংগ ও আসাম।নতুন প্রদেশের অধিবাসিদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল মুসলমানরা।এলাকার অধিকাংশ ছিল বর্তমান বাংলাদেশ।নিজ প্রদেশে সায়ত্বশাসন পেয়ে মুসলমানরা নতুন প্রেরনায় জেগে ওঠে।কিন্তু দীর্ঘদিন শোষন করা হিন্দুরা এ বিভাগ কে দেখল নিজেদের স্বার্থের উপর চরম আঘাত হিসেবে।মুস্লিম প্রদেশে মুসল্মান রা নিজ নিজ ব্যাবসা বানিজ্যের প্রসার ঘটাবে ,নতুন কোর্টকাচারী গড়ে উঠবে,হিন্দু আইনজীবীদের ব্যাবসা কমে যাবে ,সংখ্যা লঘিষ্ঠ মুসলমানেরা মাথা উচু করে দাঁড়াবে এটা মেনে নিতে পারছিলনা বর্নবাদী হিন্দুরা।কংগ্রেস পন্থীরা,হিন্দু কবি সাহিত্যিক রা ,কায়েমী স্বার্থবাদীরা বঞ্জভঞ্জকে বাংলা মায়ের বিভাজন আখ্যা দিয়ে এ বিভাজন রদের জন্য প্রচন্ড আন্দোলন শুরু করে।স্বদেশি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী হামলা শুরু করে।কবি গুরু রচনা করেন “আমার সোনার বাংলা ।আমি তোমায় ভালবাসি।“
হিন্দুদের প্রচন্ড বিরোধীতার মুখে ১৯১১ সালে রাজা পঞ্চম জর্জ বঞ্জভঞ্জ রধ করে।মুসল্মান্দের সদ্য গজানো নতুন দিনের স্বপ্নগুলো ভেঞ্জে চুরমার হয়ে গেল।মুসল্মন্দের ক্ষোভ প্রশ্মনের জন্য ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষনা দেয়া হয়।এর ও প্রচন্ড বিরধীতা করে কলকাতার নব্য গজান বাবুরা।তাদের দাবী,”পুর্ব বাংলার কৃষক রা বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে কোনভাবে উপকৃত হবে না।“
শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়।বাংলাদেশী মুস্লমানেয়া উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়ে দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে।
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×