ড. আয়াদ আল ক্বরনী বলেন, "আমাকে যদি ৫০ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে উপদেশ দিতে বলা হয় তো আমি চারটি কথা বলবো.
.
● হতাশ হবেন না।
● সন্ত্রস্ত হবেন না।
● রাগ করবেন না।
● আল্লাহর নির্ধারিত তাকদির নিয়ে প্রশ্ন করবেন না।
.
.
❒ হতাশাঃ কোনোকিছু নিয়ে হতাশ হওয়া যাবে না। জীবনে দুঃখ-কষ্ট, মুসিবত আসবেই। এটাই দুনিয়ার নিয়ম। আপনি চারদিকে তাকিয়ে দেখুন? কেউ সুখী নয়। দুনিয়াটা শান্তির জায়গা না। এখানে আক্ষেপ, বেদনা, না পাওয়ার হতাশা থাকবেই। এটা মেনে নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। হতাশা আমাদের জীবনের গতি শ্লথ করে দেয়, আমাদের কর্ম উদ্দীপনা কমিয়ে দেয়। তাই হতাশাকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। বিশ্বাস করুন, আপনি কোন স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তাতে কাছের কিছু মানুষ ছাড়া কারো কোনো কিছু যায় আসে না। হতাশা ঝেড়ে ফেলুন, দেখবেন পৃথিবী অনেক সুন্দর।
.
.
❒ ভবিষ্যত নিয়ে সন্ত্রস্ত হওয়াঃ আগামীকাল কী হবে, ক্যারিয়ার কিভাবে করবো, চাকরি কোথায় হবে, বিয়ে কেমনে হবে ইত্যাদি নিয়ে দুশ্চিন্তা করা যাবে না। হ্যাঁ, আপনি পরিকল্পনা করবেন, কাজ করবেন তবে ফলাফল নিয়ে তটস্থ থাকবেন না। আপনার কাজ চেষ্টা করা। বাকি, ফলাফল তো সব আল্লাহর হাতে। তিনিই আমাদের জন্য উত্তম পরিকল্পনা করে রেখেছেন। তিনি আপনাকে, আপনার চেয়েও বেশি ভালবাসেন।
.
.
❒ রাগঃ রাগ বেশিরভাগ সময় আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু। নিজেকে রক্ষা করাে জন্য যেমন রাগ দরকার তেমনি অতিমাত্রায় রাগান্বিত হওয়া জীবন দূর্বিষহ করে তোলে। রাগী ব্যক্তিকে কেউ পছন্দ করে। মানুষ পছন্দ করে বিনয়ী, সুমিষ্ট ভাষী, শান্ত মানুষকে। ইনফ্যাক্ট রাগী মানুষরা ও শান্তদেরই পছন্দ করে। আমাদের মনোমালিন্য, ঝগড়া ইত্যাদির পিছনে দায়ী হলো রাগ। তাই রাগ ঝেড়ে ফেলুন। একটি হাদিসে এসেছে, জনৈক সাহাবী রঃ, রসূল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে নসীহত চাইতে আসলে তিনি পরপর তিনবার তাকে না রাগার উপদেশ দেন।
.
.
❒ তাকদিরঃ তাকদির জিনিসটা অনেক জটিল। আমাদের কপালে যা লিখা আছে তাই হবে। যা হওয়ার ছিল তাই হবে এবং যা হয়েছে তাই হওয়ার ছিল। তবে তাকদির দ্বারা অন্যায় কাজকে জাস্টিফাই করা যাবে না। আমি চুরি করবো, লুট করবো, লুচ্চামি করবো, গোনাহ করবো এগুলো আমার তাকদিরে ছিল এমনটা বলা যাবে না। কারণ আপনাকে একটি স্বাধীন সত্তা দেয়া হয়েছে। আপনি ভাল-মন্দ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন এবং সর্বাবস্থায় তাকদিরের উপর বিশ্বাস রাখবেন।
.
"আমার সাথে কেনো এমন হল, আল্লাহ্ আমার সাথে এমন কেন করলেন" – এসব বলা যাবে না। মনে রাখবেন এমনটিই হওয়ার ছিল এবং এর মধ্যেই আপনার জন্য খায়ের (ভাল) রয়েছে। তাকদিরের উপর পূর্ণ আস্থা থাকলে জীবন অনেক সহজ হয়ে যায়।
.
.
অতএব, এই চারটি বিষয়ে আমাদের খুব গুরুত্ব দেয়া উচিত। আমরা যদি মেনে চলতে পারি তো আমাদের জীবনটা হবে নির্মল, সুখময়। আল্লাহ্ তা'অালা লেখক এবং পাঠক সবাইকে মেনে চলার তৌফিক দিন। (আমীন)