বাংলাদেশে সমাজের সর্বোচ্চ শিক্ষিত মানুষদের মধ্যেও বড় অংশটিরই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু (যাদেরকে অটিজম রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী শিশু বলা হয়) এর সম্বন্ধে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ফেসবুকে কয়েক হাজার মানুষের আচরণ লক্ষ করলাম যারা মনে করে কোন মানুষ হাটা-চলাফেরা করলেই কিংবা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া-লেখা করলেই ভেবে নেওয়া হয় সে অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী হতে পারে না। অটিস্টিক শিশুরা যে রোগে আক্রান্ত হয় তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় Autism spectrum disorder (ASD) বলে। যে কারণে এই শিশুদের অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী শিশু বলা হয়। এই রোগটিতে আক্রান্ত মানুষদের ব্রেইনের বিভিন্ন অংশ অন্যান্য স্বাভাবিক মানুষের ব্রেইন এর বিভিন্ন অংশের মতো কাজ করে না। মানুষের ব্রেইন এর বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করে মানুষের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ করার জন্য। যেমন আপনার বাড়িতে আগুন লাগলে আপনার ব্রেইন এর একটি অংশ নির্দেশ প্রদান করে যে বিপদ আসন্ন; সুতরাং, এখনই এই বাড়ি ত্যাগ করতে হবে। কোন কোন অটিস্টিক রোগে আক্রান্ত মানুষের ক্ষেত্রে ব্রেইনের ঐ অংশটি আসন্ন বিপদের কথা যাচাই করতে পারে না। কিংবা ঘরে পরে থাকা হাতুড়ি দিয়ে নিজের মাথায় আঘাত করলে ব্যথা পাবে বা নিজের ক্ষতি হবে তা বুঝতে অক্ষম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অংক করতে ভালো বাসে পরীক্ষায় ১০০ এর মধ্যে সবসময়ই ১০০ পায় অথচ খুবই সাধারণ বিষয় ফেল করে। কোন-কোন শিশু শুকনো খাবার পছন্দ করে কিন্তু ভেজা খাবার কখনও হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে বিশ্বে জন্মানো প্রতি ১৬০ জন শিশুর মধ্যে ১ জন শিশুর মধ্যে অটিজম রোগের উপসর্গ পাওয়া যায়। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে যেখানে এই রোগ নির্ণয় অনেক সহজ লভ্য সেখানে প্রতি ৬০ জন শিশুর ১ জনের মধ্যে এই রোগের উপসর্গ পাওয়া যায়। উন্নত দেশগুলোতে অটিজম রোগ সম্বন্ধে জানার জন্য ব্যাপক গবেষণা শুরু হয়েছে। দুর্ভাগ্যক্রমে এই রোগ সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিকদের জানার পরিধি এখন খুবই সীমাবদ্ধ যে কারণে এখন পর্যন্ত এই রোগ নিরাময়ের জন্য পূর্ণ কোন চিকিৎসা আবিষ্কার হয় নি। তবে বৈজ্ঞানিকরা এই রোগের কিছু উপসর্গ সম্বন্ধে জানতে পেরেছেন। শিশুর জন্মের পরে যত দ্রুত এই উপসর্গ গুলো নিরাময় করার চেষ্টা করা যাবে তত দ্রুত এই সমস্যাগুলো কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। শিশুর বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যাগুলো স্থায়ী রূপ নিবে যখন সেই সমস্যাগুলো আর নিরাময় করা সম্ভাবনা অনেক কমে আসবে।
বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে খুব অল্প সংখ্যক অভিভাবক আছে যারা স্বীকার করে তাদের ছেলে কিংবা মেয়ে এর কোন প্রকার শারীরিক বা মানসিক সমস্যা রয়েছে। আমি নির্দিষ্ট করে বলতে চাইছি শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধীত্বর কথা। যেহেতু এই বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সমানে কোন আলোচনা হয় না বললেই চলে (অল্প কয়েক বছর পূর্বে আমি নিজেও জানতাম না) তাই এই বিষয়ে বাংলাদেশের সমাজে অনেক কুসংস্কার রয়েছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ হলও নিশো ও মাহজাবিন অভিনীত ঈদের নাটক "ঘটনা সত্য"। যে নাটকে বলা হয়েছে যে মা কিংবা বাবা বা উভয়ের পাপ বা খারাপ কাজের জন্য তাদের জন্মানো শিশিরা অটিজম রোগে আক্রান্ত হয়।
একজন নাট্যকার, নাটক পরিচালক, অভিনেতা ও অভিনেত্রীর অজ্ঞতার পরিমাণ কোন পর্যায়ে হলে এই ধরনের নাটক নির্মাণ করে ও একটা সমাজে মানুষের অজ্ঞতা কোন পর্যায়ে হলে এই রকম নাটক সেই সমাজে পরিবেশ করা হয় তা ভেবে নিজেই লজ্জিত।
Ashfaque Kabir নামে এক অভিভাবক অটিজম বাংলাদেশ নামক ফেসবুকে এই নাটকটি কি প্রভাব পড়তে পারে তা নিয়ে নিম্নোক্ত মন্তব্য করেছেন
"প্রতিবন্ধীতা কোন পাপের ফসল নয়, একথা বোঝানোর জন্য এত বছর ধরে কথা বলে যাচ্ছি আমরা সবাই। ৯ মাস যাবত সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নীচের ভিডিও আমাদের চ্যানেলে দেয়া হয়েছে তাতে ভিউ হয়েছে মাত্র ১০০০.আর একটি ভুল তথ্য সম্বলিত নাটক ১ দিনে ৮লাখ মানুষের কাছে পৌছে গেলো শুধুমাত্র তারা সেলিব্রিটি বলে।এতোদিনের এই যে সম্মিলিত প্রচেষ্টার অর্জন আবারও পিছিয়ে গেলো।যে মাকে প্রতিক্ষন অপয়া ভাবা হয় তার কষ্ট কি শুধুমাত্র একটা sorry বলাতে কমিয়ে দেয়া সম্ভব????? যারা আমাদের ভালো কাজের সংগে যুক্ত হতে পারবেন না তাতে অসুবিধা নাই কিন্তু সে কাজকে পিছিয়ে নিয়ে গিয়ে আমাদের ক্ষতি করবেন না।"
অটিজম নিয়ে বাংলা ভাষায় তথ্যপূর্ন একটি ডকুমেন্টারি রয়েছে সবাইকে অনুরোধ করবো সেই ডকুমেন্টারিটি দেখার জন্য নিম্নোক্ত লিংক থেকে:
আমার খুবই সীমিত অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে চাই অটিজম রোগে আক্রান্ত মানুষদের শারীরিক কিংবা মানসিক বৃদ্ধি স্বাভাবিক শিশুদের মতো না। কোন-কোন ক্ষেত্রে অটিজম রোগে আক্রান্ত শিশুদের আচরণে মাত্র ৫ থেকে ১০% পার্থক্য পাওয়া যায় অন্যান্য স্বাভাবিক শিশুদের সাথে। ক্ষেত্র ভেদে অটিজম রোগে আক্রান্ত শিশু, কিশোর কিংবা পূর্নাঙ্গ ব্যক্তির ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত সীমাবদ্ধতা দেখা যায় (অল্প কিছু উল্লেখ করলাম):
১) কাজের প্রতি মনোযোগ না থাকা, কোন স্থানে স্থির ভাবে বসে না থাকা,
২) Abnormal Motor skills (স্নায়ু জনিত বিভিন্ন কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতা): (Motor skills are divided into gross and fine. Gross motor skills include standing, walking, going up and down stairs, running, swimming, and other activities that use the large muscles of the arms, legs, and torso. Fine motor skills, on the other hand, involve the muscles of the fingers, hands, and wrists, and, to a lesser extent, toes, feet, and ankles.),
৩) Abnormal cognitive skills (অস্বাভাবিক জ্ঞানীয় দক্ষতা): চিন্তা করা, পড়তে পারা, মনে রাখার ক্ষমতা, শেখার ক্ষমতা, বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা, মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা
৪) Communication skills (অপর্যাপ্ত যোগাযোগ সক্ষমতা বা স্বাভাবিক ভাবে নিজের চিন্তা বা মনের ভাব প্রকাশ করতে পারার সীমাবদ্ধতা): মনোযোগ দিয়ে শোনা, আত্মবিশ্বাস, অন্যকে পরামর্শ দেওয়া কিংবা অন্যের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া, কোন পরিস্থিতিতে কোন ধরনের কথা বলতে হবে বা কথা বলার টোন কেমন হবে তা বিশ্লেষণের সক্ষমতা না থাকা, অন্যের প্রতি যথাযোগ্য পরিমাণ সনুভূতি কিংবা সম্মান না থাকা।
৫) Activities of Daily Living skills (নিজের দৈনন্দিন কাজ কর্ম করার সীমাবদ্ধতা): (নিজের কাপড় নিজে পড়তে না পারা, জুতার ফিতা বাধতে না পারা, চামচ দিয়ে খেতে না পারা, নিজের দাঁত মাজতে না পারা, কলম ঠিকমতো ধরতে না পারা, ইত্যাদি),
৬) Socialization (সামাজিক ভাবে মেলা-মেশার সীমাবদ্ধতা): (স্কুলে গিয়ে অন্য শিশুদের সাথে খেলাধুলা না করা, নিজের খেলাধুলার সামগ্রী বন্ধুদের সাথে শেয়ার না করা, অন্য বন্ধুদের খেলার সামগ্রী কেড়ে নেওয়া, অন্য শিশুদের সাথে আক্রমানাত্নক আচরণ করা) ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
৭) Unacceptable Behaviors: প্রচণ্ড রকমের অভিমান (কিছু বললেই ঘরের এক কোনে গিয়ে একা-একা বসে থাকা), নিজের ভয়ংকর রকমের ক্ষতিকরার চেষ্টা (নিজের মাথা বা শরীর দেয়ালের সাথে আঘাত করা, নিজের হাত দিয়ে নিজের শরীরে প্রচণ্ড ভাবে আঘাত করা, ইত্যাদি)
বেশিভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী শিশুদের উপরোক্ত সীমাবদ্ধতাগুলোর অল্প কিছু দেখা যায়। আপনাদের আর একটা তথ্য দেওয়া প্রয়োজন মনে করছি যে অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী শিশুদের উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো যে অন্যান্য ছেলে-মেয়ে অপেক্ষা কম থাকে তা না। কোন কোন ক্ষেত্রে কোন কোন শিশুর উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো খুবই অল্প বয়সে (৫ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে) অর্জন করে যা স্বাভাবিক ছলে-মেয়েরা ২৫ থেকে ৩০ বছরের পূর্বে অর্জন করতে পারে না। কোন কোন শিশু এমন অসাধারণ মেধে নিয়ে জন্মায় কিংবা কিছু সক্ষমতা অর্জন করে যা পৃথিবীতে আর কারো নেই। আমি নিচে ৩ টা উদাহরণ দিবো ৩ জন অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির এই রকম অসাধারণ প্রতিভার:
১) বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠতম তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞান গবেষণা ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলও কানাডার Perimeter Institute for Theoretical Physics (ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের (আমার পূর্বের বিশ্ববিদ্যালয়) আন্ডারে একটি উচ্চশিক্ষা গবেষণা ইন্সটিটিউট)। প্রয়াত পদার্থ বিজ্ঞানি স্টিফেন হকিং এই প্রতিষ্ঠানের ভিজিটিং শিক্ষক ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানে মাত্র ১৫ বছর বয়সে এক ছেলে পিইচডি শুরু করেছে (গবেষণার বিষয় কোয়ান্টাম গ্রাভিটি), নাম জাঁকব বার্নেট, যে নিজের জুতার ফিতা নিজে বাঁধতে পারে না; অন্য মানুষের সাথে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলে না বা মিশে না। মায়ের হাত ধরে ক্লাসে আসে, মায়ের হাত ধরে বাসায় যায়। তার দেখা-শুনা করার জন্য তার পরিবার আমেরিকা থেকে কানাডায় ওয়াটারলু শহরে চলে আসতে বাধ্য হয়েছে। কোন মানুষের আই কিউ স্কোর ১৩০ এর বেশি থাকলে সেই মানুষকে বলা হয়ে থাকে Very gifted। বিশ্বের মাত্র ২ % মানুষের আই কিউ স্কোর থাকে ১৩০ এর বেশি। উপরে বর্ণিত ছেলেটির আই কিউ স্কোর ১৭০ যা গত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম বৈজ্ঞানিক আলবার্ট আইনস্টাইনের আই কিউ স্কোর অপেক্ষা বেশি। আমেরিকার ইন্ডিয়ানা রাজ্যের হাই স্কুল (বাংলাদেশের কলেজ পর্যায়) এর গণিত সিলেবাসের পুরোটা শেষ করেছিল মাত্র ২ সপ্তাহে। ৮ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ক্লাসে যাওয়া শরু করেছিল। ৯ বছর বয়সে পদার্থ বিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ব লেখা শুরু করেছি ও ১০ বছর বয়সে সরা বিশ্বে পদার্থ বিজ্ঞানের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ গবেষণা জার্নাল ফিজিকাল রিভিউ এ গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে। বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম অনেক পদার্থ বিজ্ঞানী মন্তব্য করেছে যে এই ছেলে একদিন পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পাবে। Perimeter Institute for Theoretical Physics এর অফিসিয়াল ওয়েবসাই থেকে জাঁকব বার্নেট সম্বন্ধে জানতে পারবেন Jacob Barnett
কানাডার বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলে জাঁকব বার্নেটকে নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ শিরোনাম:
15-year-old Jacob Barnett: One of the world's most promising physicists
Teen prodigy finds home at Waterloo’s Perimeter Institute
Perimeter Welcomes Exceptional Young Talent
২) ড্যানিয়েল ট্যামিন নামে এক ব্যক্তি পাই এর মান দশমিকের পরে ২৫ হাজার ডিজিট পর্যন্ত বলতে পারে। মাত্র ৭ দিনে আইসল্যান্ডিক ভাষা শিখেছে। বিশ্বের অন্যতম পরিচিত অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হলেন কিম পিক। মাত্র ৩ সেকেন্ডে কোন বই এর দুই পৃষ্ঠা পরতে পারেন। শুধু পড়া না; উনি জীবনে যত বই পড়েছেন বা যত কিছু পরেছেন সকল কিছু মনে রাখতে পারেন ও বলতে পারেন। কোন বই এর কত পৃষ্ঠায় কি আছে তা বলতে পারেন। কিম পিকের অসাধারণ প্রতিভা নিয়ে হলিউডে ছবি তৈরি হয়েছে যার নাম রেইন ম্যান। নিম্নোক্ত লিংক থেকে বিশ্বের অন্যতম ১০ জন সেরা গড গিফটেড প্রতিভাবান অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অসাধারণ ক্ষমতার সম্বন্ধে জানতে পারবেন।
৩) আমি বর্তমানে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিভাগে পিএচডি করতেছি সেই বিভাগে লরি ব্রাডফোর্ড নামে একজন অধ্যাপিকা আছেন যিনি একজন অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। প্রচণ্ড ভালো শিক্ষিকা ও গবেষক। আমার বিশ্বাস তাকে দেখলে বা তার সাথে কথা বললে কিংবা তার ক্লাস করলে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একজন ছাত্র-ছাত্রীও মানতে চাইবে না যে অধ্যাপিকা লরি ব্রাডফোর্ড একজন অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। আমি যেহেতু আমার ডিপার্টমেন্টের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্বপালন করছি গত ২ বছর ধরে ও প্রতি মাসে ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকদের মিটিং এ উপস্থিত থাকি ও সকল কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করি তাই তার সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনেছি। দুর্ভাগ্যক্রমে তার ২ টি অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী সন্তান রয়েছে। ২ মাস পূর্বে তার সাথে ফোনে কথা হয়েছিল। কথা প্রসঙ্গে তিনি আমাকে জানিয়েছিলেন যে উনার কিছু অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী বৈশিষ্ট্যের কারণেই আজ কানাডার শীর্ষস্থানীয় ১৫ টি গবেষণা প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটির শিক্ষক হতে পরেছেন। প্রত্যেক অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী শিশু কিছু গড গিফটেড প্রতিভা বা বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়। মা-বাবারা যদি শৈশবেই সেই বৈশিষ্ট্যগুলো সনাক্ত করতে পারে ও ঠিক মতো পরিচর্যা করে তবে সেই শিশু শুধু সেই পরিবারের জন্যই না পুরো বিশ্বের জন্য সম্পদ হয়ে উঠে ও মানব কল্যাণে অবেদন রাখে নিজের অসাধারণ শিল্প, সাহিত্য, ও জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে।
আপনারা যারা আমার এই লেখা পড়তেছেন সেই সকল ব্লগারদের প্রতি বিনীত অনুরোধ এই লেখাটি সকলের মাঝে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন; অথবা, নিজেদের পরিচিত সকলে আলোচনা করুন; নিজেদের পরিবারে কিংবা পরিচিত মহলে কোন অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী শিশু/কিশোর-কিশোরী/ পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তি থাকলে তাদের সাথে মানবিক আচরণ করুন; তাদের পরিবারের সাথে মানবিক আচরণ করুন। সমাজকে সচেতন করুন, মানুষকে বলুন Autism spectrum disorder (ASD) বা অটিজম মানুষের অন্যান্য স্বাভাবিক রোগের মতোই একটি শারীরিক বা মানসিক সমস্যা। বৈজ্ঞানিকরা এই সমস্যা সম্বন্ধে খুব বেশি কিছু জানে না এখনও তাই এই রোগের পূর্নাঙ্গ চিকিৎসা আবিষ্কার হয় নি। তবে এই রোগের কিছু উপসর্গ সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিকরা নিশ্চিত হয়েছে; যে উপসর্গগুলোর কোন-কোনটি শিশুর শৈশব বয়স থেকে উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে সারিয়ে তুলা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৭:৫১