somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাল্পনিক_ভালোবাসা
বহুদিন আগে কোন এক বারান্দায় শেষ বিকেলের আলোয় আলোকিত উড়ন্ত খোলা চুলের এক তীক্ষ্ণ হৃদয়হরনকারী দৃষ্টি সম্পন্ন তরুনীকে দেখে ভেবেছিলাম, আমি যাদুকর হব। মানুষ বশীকরণের যাদু শিখে, তাকে বশ করে নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিব সারাটি জীবন।

আমার তৃতীয় ঈদের শুভেচ্ছা।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় পাঠক, এই পোস্টে কোন ধানাই পানাই হবে না, কথা হবে কাটছাঁট। তাই শুরুতেই সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদের শুভেচ্ছা পেয়ে অনেকেই হয়ত ভ্রু কুঁচকে ভাবছেন, ব্লগার কাল্পনিকের মাথাটা বুঝি গেছে! আজকে আবার কিসের ঈদ। আপনাদের আশ্বস্ত করেই বলছি, মাথা আমার ঠিকই আছে। আপনাদের জানিয়ে রাখতে চাই, আমার জীবনে ঈদ তিনটি - রোজার ঈদ, কোরবানীর ঈদ আর বিজয়ের ঈদ। ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি, আনন্দ। তাই গতকাল রাত থেকেই কেমন যেন একটা ঈদ ঈদ অনুভুত হচ্ছে। আজ ১৬ই ডিসেম্বর, আমাদের বিজয়ের দিন, আমার ব্যক্তিগত ঈদের দিন। সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা এবং ঈদ মোবারক।

কথায় বলে, মানুষের আনন্দ তার বয়সের ব্যস্তানুপাতিক। অর্থাৎ বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের মনের আনন্দও কমতে থাকে। আমি জানি না, এই তত্ব আমার বেলায় কতখানি প্রযোজ্য, তবে জ্ঞানবুদ্ধি হবার পর থেকে ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ আসলে আমি যে আনন্দ পাই, তা এখনও সেই শৈশবের মতই অমলিন আছে।

আমি যখন খুব ছোট ছিলাম, বাবা আমাকে স্টেডিয়ামে নিয়ে যেতেন, প্যারেড দেখতাম, ছত্রীসেনাদের মহড়া দেখতাম। ফেরার পথে বাবা আমাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে যেতেন, দেখাতেন কোথায় পাকবাহিনী আত্মসম্পর্ন করেছিল। আমার কেন যেন খুব আনন্দ হতো। যে গল্পগুলো বাবার মুখে শুনেছি, তা বাস্তবে দেখার আনন্দই ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশী হিসেবে নিজেকে গর্ব করার সুচনা লগ্ন ছিল সেটাই।

আমি আমার দেশকে নিয়ে ভীষন গর্ব করি। বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে তার সফলতা, ব্যর্থতার দায়ভার কখনই তার নিজের না, যদি সফলতা, ব্যর্থতার হিসেব কষতেই হয়, দেশটিকে যারা চালিয়েছেন, তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতেই হবে। একটা রাষ্ট্রের বয়স ৪৪ বছর, বলতে গেলে কিছুই না।

আমার বাংলাদেশ হচ্ছে গরীবের ঘরের মেধাবী সন্তান, যে কিনা সঠিক দিশারীর অভাবে মুখ থুবড়ে পড়লেও ভেঙে পড়েনি। প্রতিবার বিপুল বিক্রমে সে উড়ে দাঁড়িয়েছে, লড়াই করেছে সকল প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে।

অফুরন্ত, অমিত সম্ভবনার দেশ এই বাংলাদেশ। এই দেশের মানুষ প্রচন্ড স্বাধীনচেতা। আমরা পরাধীনতা থেকে মুক্ত হয়েছি, শোষকের বিরুদ্ধে স্বমস্বরে গর্জন করেছি। বিশ্বে দরবারে মাথা উঁচু করে বাঁচার সংগ্রাম করছি। এবার আমাদেরকে নজর দিতে হবে, নিজেদের মূল্যায়নের, নিজেদের জাতিগত সমস্যা থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে, দলীয় লেজুড়বৃত্তি বাদ দিয়ে দেশকে ভালোবাসতে হবে। কষ্ট করে যদি কেউ ছয় মাস সৎ ভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারেন, এই দেশ নতুন চেহারা পাবে, এই দেশে আর কোন পরগাছা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না, কেউ ভাবতে পারবে না কারো একক সম্পত্তি হিসেবে।

বাংলাদেশের মাটি আজ কিছুটা হলেও অভিশাপ মুক্ত হবার পথে। সকল প্রপাগান্ডা, মিথ্যেচার, বাঁধা, বিপত্তি এবং রাজনৈতিক আদর্শের লড়াই স্বত্তেও এই দেশের বিরুদ্ধে যারা ছিলেন, তাদের বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এই ঘটনা আমাদের অনেক কিছুই শিক্ষা দেয়, যেই অন্যায় করুক না কেন, তার কোন ক্ষমা নেই, নিস্তার নেই। পাশাপাশি, কেউ যদি তার দায়িত্ব অনৈতিকভাবে পালন করেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, একদিন না একদিন তারও শাস্তি হবেই। কথায় বলে, আজ যে ফকির, কাল সে রাজা।

এটা আমাদের সকলের দেশ। এটা আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। এই দেশের স্বাধীনতার জন্য জাতীয় নেতৃবৃন্দগণ যে যতটুকু অবদান, রেখেছেন, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। ভুল ত্রুটি মানুষেরই হবে। আমাদের নেতারা আমাদেরই সন্তান, আমাদের মতই মানুষ। তারা কেউই ভুলের বাইরে নয়। আমরা প্রতিহিংসার রাজনৈতিক খেলা আর দেখতে চাই না। আমরা একটি যৌথ প্রচেষ্টায়, বাংলাদেশের স্বার্থকেন্দ্রিক রাজনীতি চাই। আরো চাই আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ক্ষমতার জন্য, নিজের দেশের মানুষের উপরই ভরসা করুন, অন্য কারো নয়।

পরিশেষে আমার একটা প্রিয় গানের কিছু অংশ আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা।
তোমার মুক্তকেশের পুঞ্জ মেঘে লুকায় অশনি,
তোমার আঁচল ঝলে আকাশতলে রৌদ্রবসনী!
ওগো মা, তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফিরে!
আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি
তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী!


৩৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×