somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ রাহীম উদ্দিন
বৃহত্তম বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একজন মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রশিক্ষক আমি। একজন শৌখিন লেখকও বটে। শখের বশে কবিতাও লিখেছি এক সময়। বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় ও বিভাগীয় পত্রিকায় এবং ব্লগে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে অনিয়মিতভাবে বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করি।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ব্যাংক শিল্পে আমাদের প্রত্যাশা

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(২০১৯ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ‘জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক দিবস’র তালিকায়- টেকসই উন্নয়ন, আর্থিক ব্যবস্থা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ব্যাংকিং শিল্পের অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ প্রতিবছর ৪ঠা ডিসেম্বর ‘আন্তর্জাতিক ব্যাংক দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।)

আচ্ছা, যদি এমন হয় যে, আপনি এমন একটা সুপারশপে গেলেন যেখানে কোন নিরাপত্তারক্ষী নেই, নেই কোন কোষাধ্যক্ষ। তাৎক্ষণিক আপনার প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে গেল প্রবেশদ্বার এবং আপনার মোবাইলে চলে এলো আপনার নামসম্বলিত স্বাগতবার্তা। প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত কোন ডিভাইসের সাহায্যে (অথবা, হতে পারে আপনার মুঠোফোনের মাধ্যমে) আপনাকে জানানো হলো সেদিন কোন কোন পণ্যেবিশেষে ছাড় চলছে। অতঃপর আপনি আপনার প্রয়োজনীয় পন্য নিয়ে দোকান থেকে বের হয়ে গন্তব্যস্থলে রওনা হলেন কাউকে কোন মূল্য বা হিসাব প্রদান ছাড়া। ভাবছেন সবকিছু কি তাহলে বিনামূল্যে! না, তা নয়। দোকানের বর্হিগমণদ্বার ত্যাগের সাথে সাথেই আপনার ব্যাংকিং হিসাব থেকে লেনদেন সম্পন্ন হয়ে যাবে যা আপনি তাৎক্ষণিক আপনার মোবাইলে বা ই-মেইলে পাঠানো বার্তার মাধ্যমে জানতে পারবেন। আপনার পরিচয়পত্রের সঙ্গে যুক্ত ডেটাবেইসে রাখা আছে সব তথ্য। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে এসব কিন্তু অসম্ভব কোনো কল্পনা নয় আর।

একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে এসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস, মেশিন লার্নিং, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), বায়োটেকনোলজির সঙ্গে অটোমেশন প্রযুক্তির মিশেলে শুরু হয়েছিল যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব (২০১৪-২০২০), বলা হয়ে থাকে এই শিল্প বিপ্লবের শেষ পর্যায়ে এখন শুধু আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে কতটা সার্থকভাবে মানব বুদ্ধিমত্তার (Neural Network) সক্ষমতা আনয়ন করা যায় তার ধোয়ামোছা চলছে (তথ্যসুত্র AIPA, JAPAN)। অর্থনৈতিক প্রযুক্তিতে ব্লকচেইন এবং এআই একটি উন্নয়নশীল জাতির অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন করার সক্ষমতা রাখে। খুব সহসা যে প্রশ্নটা আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায় তা হচ্ছে, এই বিপ্লব মোকাবিলায় বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আমরা কতটুকু প্রস্তুত?

প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে ব্যাংকিং সেবার ধরন যেমন বদলেছে তেমনি বেড়েছে এর পরিধি। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সময়ে ব্যাংক খাতে বেশ কিছু পণ্য বা সেবা জনপ্রিয় হয়েছে। যেমন- অনলাইন ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কার্ড সেবা, এসএমএস সার্ভিস, অটোমেটেড ক্লিয়ারিং, এজেন্ট ব্যাংকিং, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (EFT), আরটিজিএস (RTGS), মোবাইল অ্যাপ ইত্যাদি। এসব সেবা ব্যবহারের মাধ্যমে এখন খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এমনকি এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে তাৎক্ষণিকভাবে অর্থ পাঠানো, মোবাইল টপ-আপ ও বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে। এর মধ্যে এটিএম কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা মোবাইলে অ্যাপের মাধ্যমে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (রকেট, বিকাশ, নগদ ইত্যাদি) সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন ফিনটেক প্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি এর প্রমাণ দেয় । ফলে ব্যাংকগুলোকে এখন ফিনটেক প্রতিষ্ঠানের সাথেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন আর্থিক খাত বর্তমান অবস্থার তুলনায় আগামী এক দশকে আরও পরিবর্তিত হবে যা বিগত কয়েক দশকে ঘটেনি। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের দেশের অনেক ব্যাংকগুলোতে এখনও রয়েছে মান্দাত্তার আমলের দাপ্তরিক ও প্রলম্বিত গ্রাহকসেবা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোন গ্রাহককে হিসাব নাম্বার খুলতে বা লোন প্রাপ্তিতে জটিলতার সম্মূখীন হতে হয় প্রযুক্তিগত অবকাঠামোগত উন্নয়নের অভাবে। আধুনিকায়ন ও আইওটি ব্যবহারের সল্পতার কারণে সময় ক্ষেপণ হয় গ্রাহক সেবায় আর নানাবিধ কাগজপত্রাদি যেমন- পে স্লিপ, সত্যায়ন পত্র, নমিনি স্বাক্ষর, গ্যারান্টরের স্বাক্ষর, সহকর্মীর স্বাক্ষর, চেয়ারম্যান বা মেম্বারের স্বাক্ষর, সত্যায়িত ছবি ইত্যাদি ইত্যাদি জোগারের সেকেলে কার্যক্রমে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষের দেশীয় ব্যাংকিং সেবার প্রতি যথারীতি রয়েছে অনাগ্রহতা। তথাপি ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (EFT) বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মতো আধুনিক সুবিধাদির অপ্রতুলতা রয়েছে রাষ্ট্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে। গ্রাহক কৃর্তক তার আর্থিক লেনদেনের একটা সামান্য উপাত্ত (satement) পেতেও চতুর্থ প্রজন্মের একটা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাকে দন্ডস্বরুপ দিতে হয় অতিরিক্ত ফি। অধিকন্তু, লেনদেন সক্রান্ত এসএমএস ফি, লোন গ্রহণের সময় গ্রহীতা কৃর্তক স্টাম্প চার্জ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক সিআইবি রির্পোট চার্জও গুণতে হয় বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের কোন গ্রাহককে। সব ক্ষেত্রে একজন গ্রাহককেই গুণতে হয় নানাবিধ সারচার্জের ভোগান্তি। এসময়ের অন্যতম প্রধান আলোচ্য, সর্বাধিক ব্যবহার্য্য ও সর্বোচ্চ মূল্যবান বিষয় হচ্ছে ডাটা। ডাটা অ্যানালাইটিক্স এর মাধ্যমে ব্যাক্তির ব্যক্তিত্ব, পেশাদারিত্ব, সামাজিক কর্মকান্ড, গন্তব্যস্থান, লেনদেনের বিগত সময়ের তথ্যসহ সকল কিছু নিমেষেই পর্যবেক্ষণ করা যায় কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার বা আইওটি মাধ্যমে। তথাপিও, আরব্য রজনীর গল্পের মতো করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকার পরও অনাদায়ী রাঘববোয়াল ঋণগ্রহীতার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে, একজন সাধারণ ব্যাক্তিকে ভোগান্তির চরম শিকার হতে হয় ভিন্ন স্বাক্ষী ও স্বাক্ষর প্রমাণের দৌঁড়ে। অথচ, একজন ডাটা অ্যানালিষ্ট (Data Analyst) অথবা অনলাইনে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পর্যবেক্ষণে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায় দ্রুততম সময়ে।

গণচীনে ২০১৫ সালে আলিবাবা গ্রুপ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ডিজিটাল ব্যাংক এসএমই পর্যায়ে ঋণ প্রদান শুরু করে থাকে। তারা স্মার্টফোনের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করে। এরপর মাত্র ১ মিনিটের মধ্যে বেশকিছু উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং স্বয়ংক্রিয় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে ঋণ অনুমোদন দেয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকের একাউন্টে অর্থ চলে যায়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কোনো মানব সম্পদের ব্যবহার করা হয় না। আর এই ব্যবস্থায় মন্দ ঋণের হার ১ শতাংশের কাছাকাছি। এই ব্যাংক পদ্ধতি চীনের অর্থব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং এ ব্যাপারে অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ভাবাতে বাধ্য করেছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভারের কারণে এমনটি ভাবা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ ব্যাংক ব্যবস্থার বেশিরভাগ সেবা হবে অনলাইনভিত্তিক ২৪/৭ এবং তাৎক্ষণিক। এছাড়া ব্যাংকগুলো প্রতিটি গ্রাহককে চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজড বা বিশেষায়িত সেবা দিতে সক্ষম হবে। এসব কিছু বিবেচনায় বর্তমান ব্যাংকগুলোর জন্য ভবিষ্যতে অত্যন্ত শক্ত প্রতিকূলতা অপেক্ষা করছে। সর্বশেষ সুবিধাসম্বলিত গ্রাহকবান্ধব মোবাইল অ্যাপ না থাকলে সেই ব্যাংকের বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ভবিষ্যতে অস্তিত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত কঠিন হবে।

প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও উয়ন্নয়নের পাশাপাশি এতদসত্বে এটাও উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় বড় ধরনের সাইবার হামলার প্রস্তুতির ঘটনা ধরা পড়েছে যার তথ্য পাওয়া যায় ১৮-০২-২০২১ তারিখ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল কর্তৃক সাইবার হামলার শঙ্কায় ব্যাংকিং খাতে সতর্ক র্বাতায়। সাইবার অপরাধ তদন্তে সরকারের বিশেষায়িত সংস্থা বাংলাদেশ কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের (বিডিসার্ট) পর্যবেক্ষণে বিষয়টি জানা যায়। হামলার প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করা হয়েছিল এ সংক্রান্ত বিষয়ে। জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ তিনটি ব্যাংক এবং একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও সার্ভার লক্ষ্য করে দফায় দফায় হামলার চেষ্টা চালায় হ্যাকাররা। তারা সফল না হলেও ওই চেষ্টাকে আরও বড় হামলার প্রস্তুতি হিসেবে দেখেছিলেন প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা বিশ্লেষকগণ। মানি লন্ডারিং রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বল ডিজিটাল নিরাপত্তাব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রায় হাজার কোটি টাকার রিজার্ভ চুরির কলঙ্কের কথা তো বলাই বাহুল্য। বিকাশের মতো আধুনিক সেবা প্রদানকারী ফিনটেক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কোড (PIN) জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনাতো ঘটে চলেছে হরহামেশাই। প্রযুক্তিগত অদক্ষতা ও অনানুধিকায়নের কারনে দেশের চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকের এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে অনাকাঙ্ক্ষিত অর্থ চলে যাওয়া একুশ শতকের এসময়ের আরেকটা অনন্যোপায় হতাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়াও নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমাদের দেশের চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলোতে প্রতি ছয়মাস অন্তর অন্তর নতুন পাসওয়ার্ড (যা পূর্ববর্তী তিনটি পাসওয়ার্ডের সাথে মিল হতে পারবে না) সৃষ্টির যে বিড়ম্বনা তা এড়াতে গুগল বা অ্যামাজনের মতো হাল আমলের টু-স্টেপ ভেরিফিক্যাশন অথবা মাল্টিফ্যাক্টর অথেন্টিক্যাশন পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রকৃতপক্ষে পরিবর্তন যে মাধ্যমেই আসুক আর যেভাবেই আসুক না কেন, এখানে সবচেয়ে লাভবান পক্ষ হলো গ্রাহক। স্বাভাবিকভাবে গ্রাহক সেদিকে ঝুঁকবে যেখানে স্বয়ংক্রিয় বা তাৎক্ষণিক সেবা পাওয়া যাবে। ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যাংকগুলোর ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। জাপানে একটা প্রচলমিত মিথ আছে, ‘যখন বাতাস বয়, কুপারদের তখন আয় হয়’। (কুপার হচ্ছে একধরনের পেশাজীবী যারা পানীয় সংরক্ষণের বিশেষ ধরণের পাত্র তৈরী ও বিক্রয় করে।) ব্লকচেইন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ডাটা অ্যানালিটিক্স এর মতো সব প্রযুক্তি বাতাসে বিশ্ব শ্রমবাজারে ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে ২০২৫ সালের মধ্যে ব্লকচেইনের আন্তর্জাতিক মার্কেটসাইজ দাঁড়াবে ৬৭ বিলিয়ন ডলারে আর এআই এর মার্কেট সাইজ দাঁড়াবে ১২৬ বিলিয়ন ডলারে। আর এসব লেনদেনের আধুনিকায়ন হবে ক্রিপ্টো কারেন্সি। ইতোমধ্যে বর্তমান বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকানায় (এলন মাস্ক) যুক্ত হয়েছে বিট কয়েন। অথচ আশ্চর্যের বিষয়, আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও বিট কয়েনের মতো অধিক জনপ্রিয় ক্রিপ্টো কারেন্সির ব্যপারে খোলাসা করে কিছু বলছেন না। পরিতাপের বিষয় যে, Google Pay, Apple Pay এর মতো সমগ্র বিশ্বের বহুল প্রচলিত ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা (in-person contactless transactions on mobile devices) আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পর্যন্ত ব্যাপকহারে ব্যবহৃত হচ্ছে যা আমাদের দেশে আজও ভাবতেই পারছিনা আমরা। ব্যাংক কর্তৃক ডুয়াল কারেন্সি বা PayPal সেবার অপ্রতুলতার কারণে বিশ্বের বিশ্বস্ত বিপন্ন প্রতিষ্ঠান Amazon, Alibaba এবং বর্তমান সময়ের শিক্ষা-ব্যবসা-সেবা সকল পর্যায়ের বহুল জনপ্রিয় মাধ্যম ZOOM সাবক্রিপশন পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠে। জেপি মর্গানের ‘ওনিক্স’ বা ‘জেপি কয়েন’ যেখানে ব্লকচেইন ব্যবহার করে ডকুমেন্ট প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে সার্ভিস অটোমাইজেশন করে ফেলছে, আমাদের ফিন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলো সেখানে দূরালাপে কাস্টমার সেবা, দস্তা দস্তা কাগজের ভাঁজ বা ফেসবুক মেসেঞ্জার চ্যাটবট নিয়েই তৃপ্ত। সময়ের সাথে এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হলে একটি ব্যাংকের আজকে যা সম্পদ কালকে তা বোঝা হিসেবে দেখা দিতে পারে। পিডব্লিউসি (মাল্টিন্যাশনাল প্রফেশনাল অ্যাকউন্টিং সেবা প্রতিষ্ঠান) জানিয়েছে, স্বয়ংক্রিয়করণ প্রযুক্তির জন্য ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ৮০ কোটি বর্তমান চাকরি হারিয়ে যাবে। সুতরাং এই ধরণের প্রযুক্তি বাতাসে দক্ষতা অর্জন বাংলাদেশের লক্ষ্য হওয়া উচিত। অন্যথায় নব্বইয়ের দশকের সাইবার ক্যাবল নিয়ে পূর্বসূরী সরকারের উদাসীনতার যে খেসারত পরবর্তী প্রজন্ম এখনো দিয়ে যাচ্ছে তার পুনরাবৃত্তিতে এ জাতি হারিয়ে যাবে সভ্যতার অতল গহ্বরে।


মোহাম্মদ রাহীম উদ্দিন
কলামিস্ট
(AIFTG Certified, AIPA, Japan
Scholar & member, AOTS, Japan
[email protected])

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:০৯
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×