LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা ওষুধ দেবো কোথা?"
/সেদিন পরিচিত এক ছোট ভাই জানান দিল যে, এলাকার x বারের চেয়ে y বারটা নাকি ভালো। কারণ মদ পরিবেশনের সাথে স্বল্পবসনা মেয়েদের নর্তন কুর্দনের সু-বন্দোবস্ত থাকলেও, y বারের মেয়েরা আরও বেশি সুন্দরী ও আকর্ষণীয়।
/ওদিকে দেশি মদ তৈরির কারখানা কেরু এন্ড কোং এর উৎপাদিত পণ্য সমূহের বিক্রি বাট্টা ও তদসংশ্লিষ্ট লাভ বছর বছর বাড়ছে। আখের অভাবে চিনি উৎপাদনকারী কারখানা বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু কেরু কোম্পানির আখের অভাব হয় না।
/এখনকার জামানায় ছেলেমেয়েরা যে প্রেম করে, সেই প্রেমের কত শতাংশ অশরীরী প্রেম? ফিজিক্যাল যে মেয়ে হয় না সে নাকি কমিটেডই না।
/শুনেছি এখনকার ঘুষখোরেরা নাকি শুধু পয়সা খেয়ে সন্তুষ্ট হয় না, ওদের মেয়ে মানুষও লাগে।
/গণপরিবহনে যাতায়াতকারী কর্মজীবী মহিলারা কি যৌন-নিপীড়নের শিকার হন না?
/কর্মক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কর্তৃক কর্মজীবী মহিলাদের কি যৌন হেনস্তার শিকার হতে হয় না?
/যেকোন সময়ের চাইতে ইমারজেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিলের বিক্রি এখন অনেক বেশি। এই প্রোডাক্ট তো সচরাচর বিবাহিতরা ব্যবহার করে না। কারণ বিবাহিতদের তো হারানোর কিছু নেই। তাহলে বাকি রইল কারা?
/মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাদের শিশু শিক্ষার্থীদের কওমে লুতের ঘটনাও শোনান আবার প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করে শিশুদের বুঝিয়ে দেন যে sodomy বিষয়টা কি রকম।
/আমাদের ব্যবসায়ীরা ঠিক রমজান মাসেই জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে (যেখানে দাম কমিয়ে মানুষের উপকার করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার কথা) প্রভূত আর্থিক লাভ হাসিল করেন। কারণ অর্থ অর্জনের যাবতীয় কল্যাণকর বিষয়ে তাদের ঈমান দেখার মতো। সারা বছর ব্যবসা করে ওনারা যত না লাভবান হন, রমজানে আরও বেশি লাভবান হন। ব্যবসায়ীদের কাজ কারবার দেখলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে কারা মুসলিম নাম ধারণ করেও আদতে টাকা পয়সার ইবাদত করে।
/গ্রামাঞ্চল তো বটেই, শহরেও (মূলতঃ শিক্ষিতদের সংখ্যা যেখানে বেশি), মা ও বোনদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার ঘটনা অসংখ্য। অথচ মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে মেয়েদের সম্পত্তি প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হয়েছে।
আমরা মুসলমান নামটাও ধারণ করবো। আবার,
-মদ খাবো,
-ঘুষ খাবো,
-বিবাহিত হয়ে বা না হয়েও একাধিক মেয়ের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবো, তাদের শয্যাসঙ্গিনী করব, মনের মত তাদের ব্যবহার করবো যেমনটা নিত্য পণ্য ব্যবহার করি,
-মাদ্রাসার প্রগতিশীল শিক্ষকরা শিশুকামিতা প্র্যাকটিস করে যাবেন,
-রমজানে ব্যবসায়ীদের টাকা পয়সার ইবাদত দেখব,
-মা বোনদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করবো।
ইসলামী মূল্যবোধের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক প্রায় সবকিছুই স্বাভাবিকীকরণ করে এবং সেই সাথে তা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইতোমধ্যেই আপাদমস্তক গ্রহণযোগ্য করে বসে আছি।
ইসলামী মূল্যবোধের যাবতীয় পোশাক আশাক একে একে বিসর্জন দিয়ে আমাদের অবস্থা রূপকথার ঐ নগ্ন রাজার মতো। শেষ পর্যন্ত যার গায়ে পরিধেয় কিছুই ছিল না। বোধোদয় হওয়ার পর, সেই নগ্ন রাজা এখন LGBTQ নামক গাছের পাতা দিয়ে লজ্জা নিবারণের (প্রকারান্তরে মোছলমান পোরমানের) জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০