somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের বাঙালীরা কী প্রমাণ করলো?

০৩ রা জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭১-১৯৭৫ এর সময়কাল ছিলো যুদ্ধ (প্রথাগত যুদ্ধ) বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের সময় এবং সেই সাথে আভ্যন্তরীণ যুদ্ধের সময়ও বটে। এই সময়কালেই দুষ্টুরাষ্ট্র, হলদে পাখি আর মধ্য প্রাচ্যের বেদুইন রাজা, এদের করা অসহযোগ আন্দোলনকে সামাল দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তার ওপর দেশে সশস্ত্র বাহিনীতে পশ্চিম পাকিস্তান ফেরত অমুক্তিযোদ্ধাদের আত্তীকরণ, এমনকি বাঙ্গালী সেনা অফিসাররা যারা পুরো নয়মাস পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাদের সাথে একাত্ত হয়ে নিজেদের জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল, তাদেরকেও সশস্ত্র বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া, এসব কর্মকাণ্ডই মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের মধ্যে ক্ষোভ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল। বেসামরিক প্রশাসনের আমলারা যারা আন্তরিকতার সাথে গোটা নয় মাস পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের চাকরি করে গেছেন, মুক্তিযুদ্ধে যোগদান তো দূরের কথা, কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকারও প্রয়োজন বোধ করেননি, তারাও যথারীতি চাকরিতে বহাল থাকলেন। ঐ সময়, কি সামরিক, আর কি বেসামরিক প্রশাসন, সর্বক্ষেত্রেই মুক্তিযোদ্ধারাই কোণঠাসা অবস্থায়। রাজনৈতিক অঙ্গন ছিল সে সময়ের জাসদ, সর্বহারাদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে উত্তাল। মোটে ৪ বছর। সে সময় দেশ কতটা পুনর্গঠিত হয়েছিলো সে নিয়ে মানুষের দ্বিমত থাকতে পারে, কিন্তু সে সময়ে যে রাজাকার ও অমুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন হয়েছে, সে নিয়ে কারো দ্বিমত বা সন্দেহ নেই।


এরপর ১৯৭৫-১৯৯০। উর্দিধারীদের সামরিক শাসন। খুব খারাপ। ১৫ বছর কী কম সময়? যাই হোক আন্দোলন করে সেই শাসনেরও অবসান ঘটানো হলো এক সময়।

এরপর ১৯৯০-২০২৪। উর্দিবিহীন বেসামরিক শাসনকাল। মূর্খ রাজনীতিবিদ, অর্থলোভী ব্যবসায়ী আর সুবিধাবাদী বেসামরিক আমলাকূলের সম্মিলিত শাসনের সময়কাল। ৩৪ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের মণ্ডা মেঠাই তৃপ্তি সহকারে আকণ্ঠ খাচ্ছি, খেয়েই যাচ্ছি। ১৯৭১-১৯৯০। এই ১৯ বছরে আমজনতা প্রতিবাদ করতে পারতো। মাঠে ময়দানের আন্দোলন, জনতা আত্মবিশ্বাসের সাথেই করত। কিন্তু গত ৩৪ বছরে, গণতন্ত্রের সুশীতল ছায়াতলে অবস্থান করা আমজনতার, ঐ আত্মবিশ্বাস লুপ্ত হয়ে গেছে। সামরিক সরকার তাদের শাসনামলে যা করতে ব্যর্থ হয়েছে, আমাদের তথাকথিত বেসামরিক গণতান্ত্রিক সরকারসমূহ তাতে ১০০ ভাগ সফল।

সামরিক শাসনকে গ্লোরিফাই করার কিছুই নেই। তারপরও এই সামরিক শাসনের সময়ের ১৫ বছরে দেশে দুটো গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাত গড়ে উঠতে পারলে, অঙ্কের ঐকিক নিয়মে গণতন্ত্রের ৩৪ বছরের শাসনকালে ন্যূনতম নতুন আরও চারটি রপ্তানি খাত কী গড়ে উঠতে পারতো না? মূলতঃ ও দুটো খাতই ভেঙ্গে খাওয়া হচ্ছে, এখন পর্যন্ত।

পুরো ৫৩ বছর স্বশাসন করে, কারো অধীনে না থেকে, কারো গোলামি না করে, বাংলাদেশের বাঙালীরা কী প্রমাণ করলো?

বাঙালীর জাত হলো চাকরের জাত। সে যখন অন্যের অধীনে থেকে, অন্যের চাবুক আর বেত্রাঘাতে চলে, তখন সে ঠিকঠাক মতো চলে। আর যখন সে নিজেই প্রশাসক হয় বা রাজসিংহাসনে আসীন হয়, তখন সে সবকিছুই লেজেগোবরে অবস্থা করে ফেলে। তা সে আদমজী জুট মিলই হোক কিংবা গোটা একটা দেশ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:২১
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঠকানোটাই ভাল শিখেছি আমরা

লিখেছেন ফেনা, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৭



এই বিশাল মহাকর্ষীয় বস্তু সবকিছু নিজের দিকে টেনে নেয়—এমনকি আলোও পালাতে পারে না। কিন্তু কৃষ্ণ গহ্বরের ভিতরে কী ঘটে? সেখানে সময় ও স্থান কেমন আচরণ করে? এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরব বিশ্বে নারীরা অপমানিত? আমার অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬



বহুদিন ধরে একটি কথা শুনে আসছি—“নারীরা আরব দেশে অসম্মানিত অবস্থায় থাকে।”
কিন্তু আমি আরব দেশে গিয়েছি, থেকেছি, এবং প্রায় দুই মাস ধরে একাধিক জেলায় ঘুরেছি।
সত্যি বলছি—আমি সেখানে কোথাও নারীদের অসম্মানিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় দাবিদাওয়া নিষ্পত্তি সংস্থা : অরাজকতার পালে নতুন হাওয়া!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:০৩


বাংলাদেশে আজকাল দাবি না জানালে কেউ আর মানুষ থাকে না—ছাত্র, শিক্ষক, গৃহিণী, পুলিশ, পিয়ন, কবি, কুস্তিগির, সবাই 'অধিকার' চায়। তবে অধিকার মানে এখানে মোটেই দায় বা কর্তব্য নয়, বরং ছিনিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্পা এবং দেহ ব্যবসায়ীদের কথা শুনলে রেগে যাবেন না

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৬:৪৯



পুরো পৃথিবীতে স্পা এর সংখ্যা ১ লক্ষ ৮১ হাজার। এইসব স্পা-গুলোর বেশির ভাগই গড়ে উঠেছে ইউরোপে। এশিয়া - প্যাসিফিকের দেশগুলোতেও স্পা-এর সংখ্যা কম নয়। ৫১ হাজারেরও বেশি। বাংলাদেশে স্পা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার মিরর ডোল, নিজের মনের অশান্তি অন্যের উপর চাপিয়ে দিয়ে ফ্যাসিস্টের মতো আচরণ করবেন না

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৩৫

ব্লগার মিরর দৌলাকে বলছি।
আপনাকে কিছু কড়া কথা আজ বলবো। ব্লগে বর্তমানে আপনার কোন অবদান নেই। সামুর যে ব্লগপেইজটা আপনি চালান, সেখান থেকে সব পোষ্ট আপনি ড্রাফটে নিয়েছেন। সেটা আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×