যদি কোনদিন পৃথিবীর পথ ধরে-
হেটে চলতাম, এই আমরা দুজনে
অনাদিকাল ব্যাপী! কপোতের মতন,
ডানা দুটি মেলে দিয়ে আদিগন্তে! আর
থাকতাম শুধু তুমি আমি যে সেথায়,
আর কেউ পেত না ঠাঁই। হঠাৎ দুটি-
অচেনা পশু ডাক শুনে তোমার চিত্ত
হত অধীর। মাথা লুকোতে এই বুকে!
আবার শুনতে পাখি ডাক। মুগ্ধ হয়ে
বলতে,“ওটা কী পাখি এমন ডাকছে?”
দীঘল রাত! সেই বনপথ-হেটেই
যেতাম শুধু;অবিশ্রান্ত ঝিঁঝিঁর ডাক-
শেয়ালের হাক,কোলা ব্যাঙের ওই
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ-শুনতে হত। একঘেয়ে
তবু লাগত না! কারণ সব কিছু যেন,
আমাদের জীবনে নতুন। তবে হেঁটে
যেতে যেতে তুমি হতে ক্লান্ত! আমি
সমস্ত বনানী তন্ন তন্ন করে খুঁজে
তোমার জন্যে এনে দিতাম জল!আর-
সে জলে তুমি মিটিয়ে নিতে তৃষ্ণা!
ক্ষনিকের বিশ্রাম! কোন চাঁদনী রাতে
চন্দ্ররাণী ছড়িয়ে দিত আলো!তোমার
রুপমা সে আলোকে ধারণ করে হত,
উজ্জ্বল।সে আলোত অবগাহন করে-
আমরা এগোতাম সামনে।হাটতাম
বনানীর সীমা ছেড়ে দূরে-ওই দূর
পাহাড় চূড়ায়! স্নিগ্ধ তার ঝর্ণাধারা-
তোমার চোখ দুটিকে কেড়ে নিত।তাই-
তুমি বলতে-“ওর জল আমার চাই”।
আমি অধীর হয়ে ছুটতাম, তোমায়
এনে দিতে ঝর্ণার জল। পথিমধ্যে-
ক্লান্তি এসে ভর করত এই আমাতে!
তখন বিশ্রাম নিতাম। দেখতাম এ
বিধাতার কোন সৃষ্টি!(তোমার লাবণ্য)
আর এভাবেই পেতাম নতুন পথে
চলবার শক্তি। এভাবে চলতে হত
অনেকটা পথ,অবশেষে শৈলধারা-
আমার পায়ে দিত ধরা। তোমার সেই
আনন্দ কে দেখত;সহাস্যে তুলে জল
মাখতে চোখে মুখে-ধুতে তব অধর-
চিবুক নেত্র পল্লব।তখন আমার-
বিমুগ্ধ হৃদয় সুন্দরকে দেখে নিত;
একান্ত একাগ্রতায়।(যদি হেটে যেতে
পারতাম-একদিন এই মধু পথে!
কোনদিন,কোন কাজের একটু বিরামে।
তোমায় এভাবে পাশে নিয়ে কোনদিন!
তাং:০৮-০৫-০৭
উৎসর্গ : বাংলা কাব্য জগতের নির্জনতম কবি জীবনানন্দ দাশকে ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১২ রাত ১২:৫৬