মানুষ বলে বয়ষ বাড়লে বুদ্ধি বাড়ে। আর সেটা অবাস্তব না। একটা শিশু যখন ছোট থাকে তখন তাকে নিয়ে কত চিন্তা ! কোথায় পড়ে গেল, কি খেলো, কাঁদছে কেন এমন হাজারো চিন্তা নিত্য ঘুরে-ফিরে পিতা-মাতার মনে। এর কারণ শিশুটি এই পৃথিবীর কিছুই বোঝে না। সে জানে না এই জগতটা কতই না কঠিন। একদিন সে বড় হয়, জীবনকে জানতে-বুঝতে-চিন্তে শেখে। তখন সেই মাতা-পিতারা মনে কিছুটা হলেও শান্তির নীড় পান।
আমাদের প্রত্যেকের জীবন এই নিয়মে চলে আসছে। আমিও তার ব্যাতিক্রম নই।
আমরা সামাজিক জীব।বুঝতেই পারছেন আমাদের অর্থাৎ মানুষের কথাই বলছি। সামাজিক হিসেবে আমরা বিশেষত বাংলাদেশের মানুষেরা কতটা উপযোগী? শুধু মৌলিক চাহিদার আবেদন মেটলেই কি আসল মানুষ হওয়া যাবে? না। জীবন শুধু চলার জন্য সৃষ্টি নয়, চলার সামগ্রী পেলেই জীবন তার সমুদ্র পাড়ি দিতে পারবেনা।
আমরা আছি কোথায় এখন? যেখানে সবুজ ঘাসের তলে অগ্নি-পিঁপড়া খেলা করে, যেখানে দখিনা বাতাসে নিকৃষ্ট হায়েনার দল অবুঝ শিশুকেও খেতে পিছপা হয়না, মানুষের অস্তিত্ব যেখানে মুখথুবড়ে পালানোর চেষ্টা করে, আজ আমরা সেখানে। বড় ভয় হয় আমার। চারদিকের রাশ আনন্দের মাঝে আজ এ কোন কানাকানি। দেশ আজ কোন পথে হাটছে?
মানুষ আজ আর মানুষের জন্য নয়, জীবন আজ আর জীবনের জন্য কাঁদে না। মানুষ আজ কাঁদতে ভুলে গেছে, আর যেটুকু কাঁদে তাও মায়াকান্না । কি হচ্ছে এসব? কেন হচ্ছে এসব?
আজ আমি যথেষ্ট বড় হয়েছি। নিজের কাজ নিজেই করার সাধ্যমত চেষ্টা করি। বাবা-মা আমাকে এখন প্রাপ্ত বয়স্ক ভাবেন। আমার পথে কম সাহায্য করেন। আমার জীবনকে আমাকেই বুঝতে দেন। কিন্তু কিছু বোঝার আগেই আমি কি বুঝব তাইতো ভুলে গেছি। চারদিকের এও আলোর তলে এত আঁধার দেখে আমি ভড়কে যাচ্ছি। যা বুঝি তার প্রায় সবটুকুই আবার ভুলতে বসেছি। আলোর চেয়ে আঁধারকেই আমি যে অনেক বেশিই উপলব্ধি করছি!
আসলে আমি যেন আবার সেই আগের অবুঝ শিশু হয়ে যাচ্ছি !! দিনে দিনে আমি আমার আমিকেই হারাতে বসছি…