somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর বেশিরভাগই(৯৮%) কুসংস্কার !! - প্রমাণ দেখুন

০১ লা জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কথায় কথায় আমরা বিভিন্ন সময়ে বলি, “আরে এটা কুসংস্কার!!” আমরা কমবেশি বা মোটামুটি জানি কুসংস্কার কি। কিন্তু কখনো কি ভেবেছি যে বিষয়টাকে কুসংস্কার বলছি তা আসলেই কি সবসময় কুসংস্কার ছিল?? পৃথিবীর কতটুকু কুসংস্কার?? কতটুকুতে যুক্তি-তর্ক খাটে?? যা যা বাস্তব যুক্তিসম্মত নয় সেগুলো কি কুসংস্কার নয়?? আমরা তবে কেন সেগুলো মানছি?? এমন অসংখ্য প্রশ্ন রাখা যায়।আসুন প্রশ্নের কিছু উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা যাক। :)
কুসংস্কার কি??
বিজ্ঞানভিত্তিহীন, বর্তমান যৌক্তিকতাহীন, গুটিকয়েক মানব সমর্থিত ও বিশেষ সময়ের জন্য উপযোগী কোন বিশেষ ধারণা যা বংশপরম্পরায় বা কোন বিশেষ কাহিনী দ্বারা সংঘটিত ও পরিচালিত এবং যা সাধারণত অলৌকিকভাবে সংঘটিত তাকেই সাধারণত কুসংস্কার বলে। এছাড়া অতীতে প্রমাণিত ও পরবর্তীতে ভুল প্রমাণিত কোন কিছুও পরে কুসংস্কার বলে বিবেচিত হয়।
পৃথিবীর বেশিরভাগ কুসংস্কার!!
হ্যাঁ , পৃথিবীর বেশিরভাগই কুসংস্কার। যুক্তি ও বিজ্ঞানভিত্তিক উদাহরন দ্বারা আমি তা প্রমাণ করে দেব।
আসুন শুরু করি। :|
আমি কুসংস্কারের যে সংজ্ঞাটা দিয়েছি তা ভালভাবে পড়েছেনতো?
প্রথমে আসুন সাধারণ কথাগুলো নিয়ে ভাবি। ধরুন আপনি গ্রামের একজন মানুষ। গ্রামের কথা বলছি কারণ সেখানকার মানুষ সহজ-সরল, অলৈকিকত্বে একটু বেশি বিশ্বাসী। এমন অনেক প্রমাণ আছে যে ঝাড়-ফুঁকে অনেক রোগী প্রাণে বেঁচেছে। কেন,কি কারণে হতে পারে সে ব্যাপারে আজ আলোচনা করব না। যাই হোক, আপনার গ্রামে হাতের কাছে কোন ডাক্তার নাই। আপনার আপনকারো ডায়রিয়া রোগ হল। নিরুপায় আপনি দ্রূত ডাকলেন একজন কবিরাজকে। তিনি যা ঝাড়ফুঁক দিলেন আর যা যা করতে বললেন তাতে ধরুন আপনার রোগী ভাল হয়ে গেল। আপনি সন্তুষ্ট। আবার ধরুন আপনার রোগী ভাল হয়নি, তাহলে আপনাকে অন্য বিজ্ঞান-ভিত্তিক পথ মানে এম, বি, বি, এস, ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হতে হল। তখন আপনি ওই ঝাড়-ফুঁককে কুসংস্কার বলে আখ্যায়িত করবেনই। তাহলে দেখলেনতো সাধারণ ক্ষেত্রে কুসংস্কার কিভাবে সৃষ্টি হয়!!
এবার আসুন অন্য উদাহরণ দিই। বিজ্ঞানী ডাল্টনের নাম আপনারা নিশ্চয় শুনেছেন। “ডাল্টনের পরমাণুবাদ”-এ তিনি বলেছিলেন ‘পরমাণু অবিভাজ্য’। কিন্তু অনেকেই জেনে থাকবেন এটা এখন সম্পূর্ণ প্রমাণিত যে, ‘পরমাণূ ভাঙলে -ইলেকট্রন,প্রোটন,নিউট্রন মৌলিক কণিকা সহ কিছু ক্ষেত্রে অস্থায়ী কণিকা পাওয়া যায়(!!)’ তাহলে কি দেখলেন, ডাল্টনের তত্ত কি এখন কিছুটা হলেও কুসংস্কার নয়??? তাঁর তত্তে আরও কয়েকটি ভুল আছে। সেগুলো এখন নাই বললাম। এছাড়া তার তত্তে বাকি যে তথ্যগুলো আছে আপনি কি বলতে পারবেন যে ভবিষ্যতে সেগুলও ভুল প্রমাণিত হবেনা???
মহাবিজ্ঞানী নিউটন তার তত্তে বলেছেন একটি স্থির বস্তুর সাপেক্ষে অপর একটি বস্তু গতিশীল না স্থির তা বোঝা যায়। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানী আইনস্টাইন বলেছেন এ পৃথিবীর কোন কিছুই স্থির নয়, সব কিছুই আপেক্ষিক। তার মানে নিউটন যে তত্ত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এটা তার সম্পূর্ণ বিপরীত। (কিভাবে বিপরীত তার ব্যাখ্যা আগামী কোন লেখায় বুঝিয়ে দেব) দুটি ভিন্ন মতামত কখনোই একসাথে সঠিক হতে পারেনা। কিন্তু এদুটি তত্ত নিয়েই যথেষ্ট প্রমাণ আছে। তাহলে নিশ্চয় কোন একটি ভুল। এবং অদূরভবিষ্যতের কুসংস্কার নয় কি???

যদি মেডিক্যাল সাইন্সে আসি তবে দেখব, নামকরা চিকিতসক “ইবনে সিনা” যে শল্য-চিকিত্‌সার ব্যবস্থাপত্র তৈরি করেন তা আজ প্রায় সম্পূর্ণ অচল। আধুনিক সেবা ব্যবস্থা আজ অনেক ভাল। তাই কেউ যদি ইবনে সিনা’র প্রচলিত নিয়মে চিকিত্‌সা দেন তবে তা কুসংস্কার আচ্ছন্ন সেবা বলে গণ্য হবে। বিশ্বাস হয় না, করেই দেখুন।
বিজ্ঞানী গ্যালিলিও পৃথিবীর সাথে সূর্যের যে ঘূর্ণণ তত্ত দিয়েছিলেন আজ আমরা তা মেনে নিয়েছি। কিন্তু তার পুর্ববর্তী সময়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারণা প্রচলিত ছিল!! কিন্তু আজ আমরা জানি যে তা কুসংস্কার ছিল।
আমরা সবাই জানি যে আলো সবচেয়ে দ্রুত গতিতে চলে। কিন্তু জেনে থাকবেন যে কদিন আগেই বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন ‘নিউট্রিনো’ নামে একটি কণা আছে যে আলো অপেক্ষা অধিকতর দ্রুত চলতে পারে। তাহলে এটাও এখন ভুল প্রমাণিত হতে চলেছে। আর তা কদিন পরের কুসংস্কার।
পৃথিবী নিয়ত রূপ পাল্টাচ্ছে। আজ আমরা বিজ্ঞানের যুগে বাস করছি। ভেবে দেখেছেন এই বিজ্ঞান আমাদের বই-পত্রে যে যুক্তি পেশ করে তা কতটুকু বাস্তব সম্মত?? আপনি তার কতটুকুর যুক্তি খুঁজে পান?? জানি বলবেন খুবই কম। তাহলে এই বিশাল বিশ্বাস যার উপর গড়ছেন আপনার মনোজগতে তার বাস্তবমুখী বিস্তরণ কতটুকু?? আর এসব তত্ত তো দিন দিন আপডেট হচ্ছে। হচ্ছে পরিবর্তন। নির্দিধায় সেই কুসংস্কারকে আপনি তথা আমরা মেনে চলছি কিভাবে?? না না!! আমি আপনাকে বিজ্ঞান বিমুখী করার একদম ইচ্ছাপোষণ করছিনা, আর তা সম্ভব নয় এবং উচিতও নয়। আর অবশ্য আমি নিজেও বিজ্ঞানের উপরে সারাক্ষণ পড়ছি। আমি শুধু আমার চিন্তাকে আপনার সাথে শেয়ার করছি।
সমাজ যেভাবে চলে এসেছে তার বিভিন্ন পরতে পরতে চলে এসেছে পরিবর্তন । আর তার ফলেই সৃষ্টি হয়েছে কুসংস্কারের। এমন হাজারো উদাহরণ আছে যাতে করে প্রমাণিত হবে যে পৃথিবী গড়ে উঠাছে কুসংস্কারকে ভিত্তি করে। কিন্তু দুএকটি বিষয় আছে যা সারা জীবনই সঠিক এবং সত্য।
সত্য কিছু বিষয়ঃ
মণীষীদের কথাঃ সততাই সর্বোত্‌কৃষ্ট পন্থা- কথাটি সারা জীবনই সত্য হিসেবে থাকবে। এর কোন পরিবর্তন নেই। আর তাই এটি কখনোই কুসংস্কার হিসেবে পরিগণিত হবে না। তাহলে এটাও বলা যায় যে মণীষীদের কথা অপরিবর্তনীয় ও কুসংস্কারযোগ্য নয়।
ধর্মঃ আমি মুসলমান। তাই আমার ধর্মের কথাটাই আমি জানি। আমাদের ধর্ম-গ্রন্থ “কোরান শরীফ” নাযীল থেকে এ পর্যন্ত অপরিবর্তনীয় আছে।
এমন দুএকটি বিষয় আছে যা কুসংস্কারযোগ্য নয়, হবেও না।
তাহলে একদম সংক্ষিপ্তাকারে এটা প্রমাণ হল যে, এ মহাবিশ্বের প্রায় ৯৮% ই কুসংস্কার!!! আপনি একমত তো??
লেখাটি আমার নিজস্ব ব্লগেও প্রকাশ করেছি। আমার ব্লগটিতে যেতে দয়াকরে এখানে ক্লিক করুন :D
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৫
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×