somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার অনুবাদ করা প্রথম বই বের হচ্ছে এবারের বইমেলায় :) :) :)

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনুবাদ করে ফেলেছিলাম বেশ আগেই। প্রুফ দেখে শেষ করতে করতেই অনেক দিন চলে গেলো।অবশেষে সকল প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে বের হতে যাচ্ছে আমার অনুবাদকৃত প্রথম বই। খুবই ভালো লাগছে, আমার একটা স্বপ্ন পুরণ হলো। এই বইয়ের সাফল্যের উপর নির্ভর করবে, এরপরে আরো কাজ করব কিনা।

ছোটবেলা থেকেই দেশি-বিদেশী বই পড়তে পড়তে বড় হয়েছি (আমার নিক দেখলেও একটা ধারণা পাবেন যে আমি আসলেই বইয়ের পোকা :P )। আমি পড়ার বই থেকে শুরু করে, বাজারের ফর্দ, রাস্তায় পড়ে থাকা ছেড়া পেপারের টুকরো সবই পড়ি (আমার পড়ার লিস্ট নিয়ে আরেকদিন লিখবো :) )। ছোটো বেলায় শুধু বাংলা্য় লিখা বই পড়তাম এবং বাংলায় অনুবাদ করা বিদেশী বই পড়তাম। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়ে মনেই হতো না যে, ভিনদেশি ভাষায় লেখা বই পড়ছি, এমন সুন্দর অনুবাদ। বাসায় যেসব বই ছিলো বেশীর ভাগই বাংলায় ছিলো, হাতেগোণা অল্প কিছু বই ছিলো ইংরেজিতে। তখন সাহস হতো না ঐগুলা পড়ার। এরপর যখন ধীরে ধীরে ইংরেজির প্রতি ভীতি একটু কমলো তখন থেকে ইংরেজী ভাষার বইও পড়া শুরু করলাম । ইংরেজিতে পড়া আমার প্রথম বই আর কিছুই না, বিখ্যাত 'Harry Potter and the Philosopher's Stone'। এরপরে আর থেমে থাকি নি, পড়েই চলেছি।

পড়তে পড়তে মনে হলো এখন মনে হয় একটু লিখতেও পারবো। আগেও কিছু কাজ করেছিলাম ছোটোখাটো, কিন্তু পুরো বই অনুবাদ করার সাহসটা একটু
বেশি হয়েই গেলো কিনা, তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এরমধ্যেই হঠাৎ একদিন বাংলাবাজার চলে গেলাম বাতিঘর প্রকাশনীর নাজিম ভাইয়ের সাথে দেখা করতে। (নাজিম ভাই তখন The Da Vinci Code অনুবাদ করে বেশ জনপ্রিয়, এরপরে নিজেই প্রকাশনী খোলেন, বাতিঘর প্রকাশনী।) উনার সাথে দেখা করতে যাওয়ার সময়ই আমি একটি বই নিয়ে যাই উনাকে দেখাবো বলে। আমি ভেবেছিলাম, উনি হয়তো আমাকে পাত্তাই দেবেন না। কিন্তু উনার সাথে দেখা হওয়ার পর ধারনা পাল্টে গেলো। উনি আমাকে বেশ উৎসাহই দিলেন এবং পরে আবার দেখা করতে বললেন। এরপরে বেশ কিছুদিন কথা বলার পরে একটা বই থিক করা হল অনুবাদের জন্য। সেটাই অনুবাদ করলাম । প্রথম দিকে একেকটা পেজ অনুবাদ করতে ঘন্টা খানেক লেগে যেত, যদি পাঠক না বুঝে এই ভেবে। এরপর আস্তে আস্তে গতি বাড়ল। অবশেষে অনেক ঝক্বি ঝামেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো প্রাথমিক অনুবাদের কাজ। এরপর টাইপিং এর জন্য পাঠানো হলো। টাইপিং করে যখন আমাকে দেয়া হল ফার্স্ট প্রুফ দেখার জন্য, দেখে মনে হল বেটা টাইপিস্ট নিজেও একজন অনুবাদক X( নাহলে এমন ধরনের অদ্ভুত সব ভুল করে রেখেছে, দেখে মেজাজই খারাপ হয়ে গেলো। এরপর আরো দুইবার প্রুফ দেখলাম। তারপরে নাজিম ভাই ফাইনাল প্রুফ দেখে যেসব জায়গায় পরিবর্তন করা দরকার, করে দিলেন। তারপর থেকে অপেক্ষায় ছিলাম কবে বই আকারে বের হবে??

হঠাৎ আজকেই নাজিম ভাই ফোন করে বললেন, "তোমার বইতো রেডি, কালকে থেকেই মেলায় পাওয়া যাবে।"
আমিতো তখন পারলে আকাশে উড়ে যাই, কিন্ত শেষ মুহুর্তে আর উড়লাম না, ভাবলাম বইটা কেমন হল দেখেই যাই :):)

অনেক প্যাচাল পারলাম, আর না।

বইয়ের নাম : বয়েজ ফ্রম ব্রাজিল (The Boys from Brazil)

মূল বইয়ের লেখক: ইরা লেভিন (১৯২৯-২০০৭)



সারসংক্ষেপ: নাজি হন্টার ইয়াকভ লিভারম্যান হঠাৎ মাঝরাতে একটা ফোন কল পায়। ব্রাজিল থেকে এক যুবক তাকে ফোনে জানায়, এইমাত্র সে প্রাক্তন নাজিদের এক গোপন মিটিঙে আড়ি পেতে জানতে পেরেছে “এনজেল অফ ডেথ নামে” দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়কার কুখ্যাত এক প্রাক্তন নাজি নেতা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চুরানব্বইটি হত্যাকান্ড ঘটানোর প্ল্যান করেছে। লিবারম্যান প্রথমে অবিশ্বাস করলেও তার সাথে কথা বলার মাঝখানে যুবক খুন হয়ে গেলে তদন্তে নামে সে। তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে এমন এক লোহমর্ষক সত্যা যা বদলে দিবে ইতিহাসের গতি ধারাকে, পৃথিবীর বুকে আবারো ফিরিয়ে আনবে নারকীয় হিটলার যুগ। লিবারম্যান তার সমস্ত শক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে একসময় আক্ষরিক অর্থেই মুখোমুখি হয় স্বয়ং হিটলারের। লিবারম্যান কি পারবে তার সমস্ত সত্বা দিয়ে লড়াই করে পৃথিবীকে খোদ হিটলারের হাত থেকে রক্ষা করতে? জানতে হলে পড়ুন ইরা লেভিনের পৃথিবী কাঁপানো সাসপেন্স থ্রিলার “বয়েজ ফ্রম ব্রাজিল”।

হিটলারের কনসেনট্রেসান ক্যাম্পের লোহমর্ষক পরীক্ষা, অবিশ্বাস্য পটভূমি এবং দূর্দান্ত এক কল্পবৈজ্ঞানিক কাহিনীর সমন্বয়ে রচিত বইটিতে বর্নিত হয়েছে এক বিশাল ষড়যন্ত্রের পটভূমি, যা পড়ে পাঠক অবিশ্বাসে কেঁপে উঠবেন।



এই বইটি থেকে সিনেমাও তৈরি করা হয় The Boys from Brazil

তার বই থেকে আরও কিছু সিনেমা তৈরি করা হয়েছে।

Rosemary's Baby (Director: Roman Polański)
Deathtrap
Sliver
The Stepford Wives
A Kiss Before Dying
No Time for Sergeants
Revenge of the Stepford Wives




বইটি পাওয়া যাবে বাতিঘর প্রকাশনীর স্টলে। স্টল নং: ৭৮ (বট গাছের পাশে)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৬
৩১টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×