somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুরা "এখলাস"- পবিত্র কোরআনের ছোট কিন্তু বেশ লাভজনক ও অর্থ বহুল একটি সুরা...

৩১ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুরা এখলাস
পবিত্র কোরআনের ১১২ নং সুরা
মক্বায় অবতীর্ণঃ আয়াত সংখ্যা ০৪


بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ

قُلۡ هُوَ اللّٰہُ اَحَدٌ
اَللّٰہُ الصَّمَدُ
لَمۡ یَلِدۡۙ وَ لَمۡ یُوۡلَدۡ
وَ لَمۡ یَکُنۡ لَّهّ کُفُوًا اَحَدٌ



বাংলা অনুবাদ:
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

(১) বলুন, তিনি আল্লাহ, এক বা অদ্বিতীয়,
(২) আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,
(৩) তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি
(৪) এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।


শানে-নুযূলঃ
মুশরিকরা মুহাম্মদ (সা: ) -কে আল্লাহ্‌ তাআলার বংশপরিচয় জিঞ্জেস করেছিল, যার জওয়াবে এই সূরা নাযিল হয়। অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে যে, মদীনার ইহুদীরা এ প্রশ্ন করেছিল। কোন কোন রেওয়ায়েতে আছে যে, তারা আরও প্রশ্ন করেছিলঃ আল্লাহ্‌ তাআলা কিসের তৈরী, স্বর্ণ-রৌপ্য অথবা অন্য কিছুর? এর জওয়াবে সূরাটি অবতীর্ণ হয়েছে।

সুরার ফজীলতঃ
হযরত আনাস (রা·) থেকে বর্ণিত- জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা·)-এর কাছে এসে আরজ করল, আমি এই সূরাটি খবু ভালোবাসি। তিনি বললেন, ‘এর ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে দাখিল করবে।’
হযরত আবু হোরায়রা (রা·) বর্ণনা করেন- একবার রাসূলুল্লাহ (সা·) বললেন, ‘তোমরা সবাই একত্রিত হয়ে যাও। আমি তোমাদের কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ শুনাবো।’ অতঃপর যাদের পক্ষে সম্ভব ছিল, তারা একত্রিত হয়ে গেলে তিনি সূরা এখলাস পাঠ করে শুনালেন। তারপর বললেন, ‘এ সূরাটি কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।’

আবু দাউদ, তিরমিযী ও নাসায়ীর এক দীর্ঘ বর্ণনায় বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তাকে বালা-মুসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট হয়।’

ওকবা ইবনে আমের (রা·)-এর বর্ণনা মতে- রাসূলুল্লাহ (সা·) বলেন, ‘আমি তোমাদের এমন তিনটি সূরার কথা বলছি, যা তাওরাত, যবুর, ইঞ্জিল ও কোরআনসহ সব কিতাবেই রয়েছে। রাত্রিতে তোমরা ততক্ষণ ঘুমাতে যাবে না যতক্ষণ সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস না পাঠ কর।’ ওকবা (রা·) বলেন, সেদিন থেকে আমি কখনও এ আমল ছাড়িনি।

সূরা এখলাস কোরআন শরীফের ক্ষুদ্রতম সংক্ষিপ্ত সূরা হলেও এর সার-শিক্ষা-গৌরব-মাহাত্ম্য অতি অসাধারণ। এই পবিত্রতম সংক্ষিপ্ত সূরায় অংশীবাদিতা, পৌত্তলিকতা, অবতারবাদ, পিতৃত্ববাদ ও পুত্রত্ববাদ প্রভৃতি আল্লাহ সম্বন্ধীয় যাবতীয় ভ্রান্ত বিশ্বাসের প্রতিবাদ করে যেভাবে আল্লাতায়ালার একত্ব, অদ্বিতীয়ত্ব ও সত্য রূপ প্রকাশ করা হয়েছে তার কোন তুলনা নেই।

এজন্যই সূরা এখলাস সমগ্র কোরআন শরিফের এক-তৃতীয়াংশ বলে বর্ণিত হয়েছে।
হযরত রাসূলুল্লাহ (সা·) থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘সূরা এখলাস পাঠ করলে সমগ্র কোরআন শরিফের এক-তৃতীয়াংশ পাঠের পুণ্য লাভ করা যায়।’


হযরত রসূলুল্লাহ (সা·) প্রত্যহ শয়নকালে ‘সূরা এখলাস’, ‘সূরা ফালাক’ ও ‘সূরা নাস’ এ তিনটি সূরা পড়ে নিজের দু’হাতে ও শরীরে ফুৎকার প্রদান করতেন। তিনি আরও বলেন, ‘যারা প্রতি দিবস ও রাতে ওই সূরাত্রয় তিনবার করে পাঠ করে, তারা জগতের সব বিপদ-আপদ ও অনিষ্টকারিতা থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে।’

এছাড়াও
কবর জিয়ারতে, বিশেষ কোন দোয়ার আগে সুরা ফাতিহার সাথে সুরা এখলাস পড়ার কথা কিতাবে পাওয়া যায়।
অযুর সাথে ২০০ বার পড়ার দ্বারা রহমত,রিজিক, আল্লাহর গোস্বা দূর ইত্যাদির কথা ও পাওয়া যায়।

সংক্ষিপ্ত তাফসীরঃ

এই সুরাকে সুরায়ে তাওহীদ ও বলা হয়।
এখানে প্রথম শব্দ বলুন এর মধ্যে আল্লাহর রাসুল এর রেসালাতের প্রতি ইশারা করা হয়েছে। এতে আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষকে পথ পদর্শনের আদেশ রয়েছে। আল্লাহ এমন এক সত্তার নাম, যিনি চিরকাল আছেন ও থাকবেন। তিনি সর্ব গুনের আধার ও সকল দোষ থেকে পবিত্র।

"সামাদ" শব্দের অনেক অর্থ বিদ্যমান। কিন্তু আসল অর্থ হলো সেই সত্তা, যার কাছে মানুষ নিজ নিজ অভাব ও প্রয়োজন পেশ করে এবং যার সমান মহান আর কেউ নাই।

"লাম ইয়ালীদ ওয়ালাম ইউ-লাদ" এখানে যারা আল্লাহর বংশ পরিচয় জানতে চেয়েছিল্‌, তাদের জবাব দেয়া হয়েছে। সন্তান প্রজনন সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য- স্রষ্টার নয়।

"অলাম ইয়া কুল্লাহু কুফুয়ান আহ্বাদ্ব" - অর্থ্যাৎ, কেউ আল্লাহর সমতুল্য নয় এবং আকার-আকৃতিতে কেউ তার সাথে সামঞ্জস্য রাখে না।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের এ থেকে ফায়দা নেবার তৌফিক দান করুন। আ-মী-ন

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৮
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×