somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেই ভদ্রলোক (অথবা ভদ্রমহিলা) ছাতা আবিষ্কার করেছেন...... তাকে অনেক থ্যাংকস। :) :) :) :)

০৩ রা জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুপুরে বের হওয়ার পর পড়লাম বৃষ্টিতে। পুরোই ভিজে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ছাতা বহন করার ঝামেলার চেয়ে বৃষ্টিতে ভেজাটাই আমার কাছে সহজ মনে হয়। তাই কখনোই ছাতা নিয়ে ঘুরি না!
কিন্তু আজ মনে মনে একটা ছাতা চাইছিলাম কারন পকেটে কিছু কাগজ পত্র ছিল ভিজে যাবে তাই। ভিজেও গেছে।

ছাতা যে কতটা উপকারী তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। একটা ছাতা থাকলেই বেঁচে যেতাম ঝামেলা থেকে।
এই মহান ছত্র বা ছাতা যে কে আবিষ্কার করেছে তা নানা ইতিহাস ঘেঁটেও খুঁজে পেলাম না। তবে ছোট বেলায় 'সিন্দবাদ' সিরিয়ালের কোন এক পর্বে দেখেছিলাম তার সহযোগী 'ফিরোজ' একটা ছাতা বানিয়ে তা উপহার দিয়ে এক রাজা কে পটিয়ে ফেলতে। তখন ভাবতাম সে ই বুঝি ছাতা বানিয়েছে।

সে যাই হোক ইতিহাস থেকে যদ্দুর জানলাম আজ থেকে অন্তত সাড়ে ৩ হাজার বছর আগেও ছাতার ব্যবহার ছিল। প্রাচীন মিশরে একেবারে শুরুর দিকে তাল পাতার সাথে লাঠি লাগিয়ে রোদ থেকে বাঁচার জন্য প্যারাসলের (parasol) ব্যবহার ছিল। পরে এর আরো উন্নতি হয়। এখানে বলে রাখা ভাল ইংরেজিতে ছাতার ব্যবহারিক দুইটি নাম রয়েছে, রোদের বেলায় প্যরাসল এবং বৃষ্টির বেলায় আম্ব্রেলা (umbrella) ।

মরু অঞ্চল হওয়ার কারনে আফ্রিকা আরব এই সব অঞ্চলে পানিরোধি ছাতার (আম্ব্রেলা) উদ্ভব হয়নি। এর উদ্ভব হয় খুব সম্ভবত চীনে আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ১১ শতকে। তারা শুধুমাত্র রাজকীয় লোকজনের জন্য সিল্কের ছাতার ব্যবহার করতো।

একসময় খ্রিঃপূঃ ১ম শতকে এটি যায় গ্রীস এবং রোমে। সেখানে এটি ছিল মেয়েদের সামগ্রী। তারা রোদ থেকে বাঁচতে এবং ফ্যাশনের অংশ হিসেবে এই প্যরাসল ব্যবহার করতো। তাদের ছাতা বন্ধ ও খোলা ও যেত। এর পর কালে কালে তা সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।

মজার ব্যাপার হলো ১৭৯০সালের আগে ইংল্যান্ডে ছাতা শুধু মাত্র নারীদের পণ্যই ছিল। ছেলেরা ছাতা ব্যবহার করবে এটা কেউ সহজ ভাবে নিত না। মেয়েরা চাইলে এখন এটা তাদের পন্য বলে আন্দোলন করতে পারে। প্রথম পুরুষ হিসেবে লেখক জোন্স হ্যনয়ে (Jonas Hanway) প্রায় ৩০ বছর জনসম্মুখে খোলাখুলি ভাবে ছাতা ব্যবহার করেন এবং নারী পুরুষে সমতা আনেন! আমরা তাঁকে পুরুষ জাগরনের পথিকৃৎ বলতে পারি।
এক সময় ছাতা ছেলে মেয়ে সবার সাধারন পন্য হিসেবেই প্রচলিত হয়ে যায়।

অন্যদিকে ১৯২৮ সালে Hans Haupt's প্রথম পকেট ছাতার প্রচলন করে। আর ১৯৬৯ এ Bradford E Phillips প্রচলন করে আধুনিক ফোল্ডিং সিস্টেমের ছাতা।
আর ১৮৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত জেমস স্মিথ এন্ড সন্স কে (James Smith and Sons) ধরা হয় প্রথম পুর্নাংগ ছাতার দোকান হিসেবে। মজার ব্যপার হলো দোকানটা এখনো আছে। 53 New Oxford Street, London, England এই ঠিকানায় গিয়ে দেখে আসতে পারেন।

আর এই যুগে এসে শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই নাকি প্রতি বছর প্রায় ৩৩ লাখ ছাতা বিক্রি হয়। এটা শুনে ভাবছি ছাতা বিজনেসে নেমে পড়বো। তাই বিশ্ববিখ্যাত কিছু ছাতা কোম্পানির নাম দিয়ে দিলাম নিচে। Gartner, Cutter and Buck, Homebasix, Callaway Golf,Sportbrella, Travel Smart, Shed Rays, Windjammer, Walk Safe, Kate Spade, Tina T, Rainkist, Leighton, Kikkerland, Suntec, Adidas।

এখন তো ছাতার নানা রকমের ব্যবহার দেখা যায়। বৃদ্ধের লাঠি, মহিলার পর্দা, গোয়েন্দা কাজে, অস্ত্র হিসেবে, উড়তে আরো কত কি। আজ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে দেখলাম একটা ছাতা পরীক্ষা করছে যেটাতে ২০০ কিঃমিঃ গতির বাতাস দেওয়ার পরেও অক্ষত আছে, আরো কত কি। আসলে ছাতার প্যাঁচাল অনেক বড়। অত বলে লাভ নাই কেউ পড়ে না।
:)
তবে এতো ইতিহাস ঘেঁটে ও যা পেলেম না তা হল, পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ছাতা হল ব্যাঙের ছাতা আর প্রথম ছাতার ব্যবহার করা হয় আমাদের এই বঙ্গ দেশে; কলা পাতা আর বড় কচু পাতা। যার ব্যবহার এখনো আছে।
:)
যত যাই বলি ছাতার সাথে কিন্তু আমাদের মানুষের জীবনের অনেক দার্শনিক মিল রয়েছে। সেটা নিয়ে আরেকদিন পটর পটর করা যাবে। শুভ রাত্রি।

#MUAZView this link

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৩৭
৮টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×