শান্তিতে সর্বপ্রথম নোবেল
পেয়েছিলেন হেনরী ডুনান্ট, রেডক্রস
প্রতিষ্ঠা করার কারনে। রেডক্রস সেই
১৮৬৭সাল থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন
দেশে ত্রান ও
স্বাস্থ্যসেবা পরিচালনা করে এসেছে,
বিশেষত যুদ্ধবিধবস্ত বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ
পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির পরিমান
কমাতে এবং আহত মানুষদেরকে সুস্থ
করে তোলার কাজে। প্রথম ও দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের পরপর রেডক্রস এতটাই
জোরালো ভূমিকা পালন করেছিল
যে এই প্রতিষ্ঠানটিও দুই যুদ্ধের পর দুইবার
এবং ষাটের দশকে একবার মোট তিনবার
শান্তিতে নোবেল অর্জন করে।
যাই হোক, হেনরী ডুনান্টের পর আরও
অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন
শান্তিতে নোবেল। যেমন, মার্টিন
লুথার কিং পেয়েছেন নিগ্রোদের উপর
অত্যাচার এবং বৈষম্যের
বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদ
এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার কারনে,
মাদার তেরেসা পেয়েছিলেন
সমাজের নিম্নবর্গের মানুষদের
এবং ঘৃনিত বলে অভিহিত
কুষ্ঠরোগীদের
অকাতরে সেবা প্রদানের জন্য, লি ডাক
থো পেয়েছিলেন প্রায় ১৮বছর
ধরে চলা ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান
ঘটানোর স্বীকৃতিস্বরুপ, ইয়াসির
আরাফাত পেয়েছিলেন ফিলিস্তিন-
ইসরায়েল এর মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ
থামিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যেগ
নেয়ার জন্য। আমাদের ড. মুহাম্মাদ ইউনুস
ও তার প্রতিষ্ঠান গ্রামীন ব্যাংকও
নোবেল পেয়েছিলো শান্তিতে,
গরীব মানুষদের ক্ষুদ্র ঋন
দিয়ে স্বাবলম্বী করার
প্রক্রিয়া উদ্ভাবনের জন্য।। এছাড়াও
শান্তিতে নোবেল
পেয়েছে ইউনিসেফ, ইউএনএইচসিআর,
এমনেস্টি এবং ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন,
বেশ বড়-সড় কিছু কাজের জন্য।।
এত ইতিহাস বলার কারন, অবাক বিস্ময়
নিয়ে শুনতে ও
দেখতে হলো আজকে যে মালালা নামের
আমার চাইতে চার বছরের
ছোটো একটি মেয়ে শান্তিতে নোবেল
পেল। শুনেছি সে নাকি শরীরের কোন
এক অঙ্গে গুলি খেয়েছিলো অজ্ঞাত
মানুষের হাতে, অত:পর এক গুলি খেয়েই
সে নাকি হিরোইন অফ দ্য ওয়ার্ল্ড
হয়ে যায়, প্রতি দুই মাস পরপর একের পর এক
পুরষ্কার জিততে থাকে,
এবং গুলি খাওয়ার তিন বছর কি চার বছর
পর আজ সে শান্তিতে নোবেল
জয়ী নারী।।
আমার প্রশ্ন, সে এমন
কি করেছে পৃথিবীর জন্য, মানবজাতির
জন্য? কোনো দৃঢ় ভাষন, মানবজাতির
কল্যানের জন্য কোনো রোডম্যাপ,
কোনো চাক্ষুস কর্মকান্ড?? বলা হয়
সে নাকি নারী অধিকার কর্মী, কয়জন
নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে তার
মাধ্যমে? কোন এলাকায়
সে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায়
নিয়োজিত ছিল, ঐ এলাকার
কয়টা পরিবারের নারীদের অবস্থার
উন্নতি হয়েছে?? একটা বই
লেখা হয়েছে ইংরেজিতে তার
নামে, বইটা পড়লে স্পষ্ট বোঝা যায়
যে বইটা ডক্টরেট করা কারও লেখা,
মালালার নয়।।
যখনই আমেরিকা কোনো না কোনো বড়
অথবা বিতর্কিত কাজ
করতে গিয়েছে গত কয়েক বছরে, তখনই
মালালাকে জনসম্মুখে নিয়ে আসা হয়েছে,
জনগণের দৃষ্টি মালালার
দিকে ফিরিয়ে তার
তলে তলে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির
জন্য। মালালাকে নোবেল
দেয়াটা আজকেও কেবলই একটি ছুতো,
আই এস এর
বিরুদ্ধে ইরাকে আমেরিকা যা করছে তা থেকে দৃষ্টি ফেরানোই
এর উদ্দেশ্য।।