somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঠুলি আবিষ্কার

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ দুপুর ১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হবুচন্দ্র রাজা আর গবুচন্দ্র মন্ত্রী, দু'জনে মিলে (?!) জুতা আবিষ্কার করেছিলেন। শিক্ষিত জনগণ অফ যান, কারণ এখন আমি ইতিহাস আবিষ্কার করছি। কলম এখন আমার কব্জায়।

তো, জুতা আবিষ্কার করেই তাঁরা ক্ষান্ত হন নাই। দুইদিন বাদেই হবুচন্দ্র রাজা প্রাতঃভ্রমণের সময় রাজদীঘিতে স্নানরতা কামিনীদের দেখে প্রবলভাবে তাড়িত হলেন। কোনমতে উত্থান সামলে তিনি গবুচন্দ্রকে বললেন, "মন্ত্রী গবু, ক্যামন যেন লাগে, কী করা যায়?"
গবুচন্দ্র মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললেন, "মহারাজ, আসলেই সমস্যার ব্যাপার, চলেন দরবারে গিয়ে পাঁচজনকে জিজ্ঞেস করি, এ ব্যাপারে কী করণীয়।"
দরবারের অন্যান্য মন্ত্রীরাও মাথা চুলকে বললেন, "ভালোই সমস্যার ব্যাপার। তাহলে মহারাজ, এক কাজ করুন, রাজ্যে ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে ঘোষণা করে দিন, এখন থেকে ভোরবেলা আর কোন নারী কাপড় খুলে গোসল করতে পারবে না।"
হবুচন্দ্র ঢ্যাঁড়া পেটালেন, রাজ্যশুদ্ধু নারী কাপড় পরেই ভোরবেলা স্নান করতে লাগলো।

তার কয়েকদিন বাদে আবারও হবুচন্দ্র প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছেন গবুচন্দ্রের সাথে। রাজদীঘিতে কাপড় পরেই কামিনীরা স্নান করছে, কিন্তু ভেজা কাপড় তাদের কমনীয় রমণীয় শরীরে লেপ্টে গিয়ে এক অপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা করেছে। হবুচন্দ্র খানিকক্ষণ জুলজুলিয়ে তাকিয়ে থেকে বললেন, "মন্ত্রী গবু, ওখানটায় ক্যামন যেন লাগে। কী করা যায়?"
গবুচন্দ্র মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললেন, "মহারাজ, আসলেই সমস্যার ব্যাপার, চলেন দরবারে গিয়ে পাঁচজনকে জিজ্ঞেস করি, এ ব্যাপারে কী করণীয়।"
দরবারে অন্যান্য মন্ত্রীরা বললেন, "আসলেই তো সমস্যার ব্যাপার, মহারাজ, এক কাজ করুন, ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে ঘোষণা দিন, এখন থেকে রাজ্যে সবাইকে অস্বচ্ছ জলরোধী বস্ত্র পড়ে গোসল করতে হবে।"
ঢ্যাঁড়া পেটাতে রাজার তেমন পয়সা খরচা হয় না, রাজ্যশুদ্ধ নারীরা রঙবেরঙের জলরোধী বস্ত্র এঁটে গোসল করতে লাগলেন।

তারও দু'দিন পর হবুচন্দ্র গবুচন্দ্র সমভিব্যাহারে প্রাতঃভ্রমণে বেরোলেন। রাজদীঘিতে কামিনীরা রামধনুর সাতরঙা জলরোধী বস্ত্র পড়ে গোসল করছে, বহু কষ্টে।
খানিকক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থেকে হবুচন্দ্র চাপা গলায় বললেন, "মন্ত্রী গবু!"
গবু বললেন, "জি্ব মহারাজ?"
হবু কাতর গলায় বললেন, "তুমি তো জানো, আমি কী কল্পনাপ্রবণ!"
গবু বললেন, "জি্ব মহারাজ!"
হবু বললেন, "আমার তো এখনও ঐ দৃশ্যই চোখে ভাসছে! আমি তো সামলাতে পারছি না গবু! একটা বিহিত কর!"

দরবারে ফিরে মন্ত্রীরা অনেক জল্পনা কল্পনা করলেন। কেউ বললেন, এখন থেকে রাজ্যে নারীদের গোসল নিষিদ্ধ করা হোক। কেউ কেউ বললো, নারীদের প্রকাশ্যে গোসল নিষিদ্ধ করা হোক। কেউ কেউ বললো, রাজ্যে নারীই নিষিদ্ধ করা হোক। সবাই তাদের দিকে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে একটুতফাতে সরে বসলো, যত্তোসব হোমো!
গবুচন্দ্র অনেক ঝুনা মাল, তিনি সেই জুতার আবিষ্কারক মুচিকে এত্তেলা দিয়ে পাঠালেন।

মুচি এসে বিনীতভাবে বললো, "মহারাজ, এ তো আপনার আবিষ্কৃত জুতা পদ্ধতিতেই সমাধান করা সম্ভব!"
হবুচন্দ্র ভড়কে গিয়ে বললেন, "কিভাবে?"
মুচি হাতজোড় করে বললো, "ভোরবেলা রাজদীঘিতে প্রাতঃভ্রমণ করতে যাবেন না মহারাজ। আর যদি নিতান্ত যান, চোখে ঠুলি এঁটে যাবেন। এই যে দেখুন, আমি চীনা পান্ডার চামড়ার তৈরি ঠুলি তৈরি করে এনেছি আপনার জন্য!"
হবুচন্দ্র খানিকটা ভেবে উৎফুল্ল হয়ে বললেন, "আরে আমার মনেও তো ছিলো এ চিন্তা, ব্যাটা ক্যামনে পারিলো জানিতে?"

সেদিন থেকে হবুচন্দ্র ভোরবেলা ময়দানে হাঁটতে যান, মাঝে মাঝে রাজদীঘির দিকে গেলে চোখে ঠুলি এঁটে রাখেন। কামিনীরা আবারও আগের পদ্ধতিতে গোসল করে আর গুনগুন গান গায়, পাখিরা ফুলের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে তাদের সাথে সুর মেলায়।

(সম্প্রতি ব্লগে পর্দাবুর্খা নিয়ে প্রবল চিল্লাফাল্লা হচ্ছে। এই গল্পের সাথে ঐ প্রসঙ্গের কোন মিল নাই, থাকলে কাকতালীয়, হে হে হে)
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭



ছবি সৌজন্য-https://www.tbsnews.net/bangla




ছবি- মঞ্চে তখন গান চলছে, মধু হই হই আরে বিষ খাওয়াইলা.......... চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গান।

প্রতি বছরের মত এবার অনুষ্ঠিত হল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪। গত ২৪/০৪/২৪... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

×