সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন আজিমপুর যাওয়া হয়। যাওয়ার সময় ফার্মগেট হয়ে লেগুনাতে করে নিউ মার্কেট গেলেও আসার সময় বাসে চড়ে আসি। সব সময় প্রথম দিকের সিটেই বসা হয়। এমনই একদিন বসে আছি, ড্রাইভার খুব আক্ষেপের সাথে এক মাঝ বয়সী যাত্রীর সাথে বলছিলো ছাত্ররা বিনা ভাড়াতে চড়ে। কোথায় এমন নিয়ম আছে ছাত্রদের বিনা ভাড়ায় চড়ার(!) না উঠালে তাৎক্ষনিক কিছু বলে না কিন্তু সামনে গেলে দল-বল নিয়ে বাস ভাংচুর করে। তাতে অনেক ক্ষতি হয়। কথাটা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই এক ছাত্র উঠল। টিকিট চাইতেই বলল ছাত্র(!)
আজকেও একই কাহিনী হল। সিটি কলেজে থেকে একটু সামনে গেলে এক ছেলে উঠল। কন্ডাক্টর টিকিট চাইলে উত্তর দিল ছাত্র। ড্রাইভার-কন্ডাক্টর মুখ চাওয়া চাওয়ি করল। কিছুক্ষন পরে আরেক জন। টিকিট চাইলে একই উত্তর। বসুন্ধরার সামনে থেকে দুই জন উঠলেও সেই একই উত্তর দিলো। ড্রাইভারের ধৈর্য্যের বাধ মনে হয় ভেংগে গিয়েছিল। সাতরাস্তা পার হয়ে পলিটেকনিক্যালের সামনে এলে কিছু ছাত্র হাসিমুখে রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে হাত নাড়লে ড্রাইভার না থামিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। একটু সামনে এগোলে সিগনালে পড়লে একটা দুজন ছেলে-মেয়ে উঠলো। নিষেধ করলেও জোর করে উঠে বলে সামনে থেকে টিকেট কাটবো। ড্রাইভার কোথায় যাবেন জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেয় ,"সামনে।"
এমন একটা প্রবাদ আছে যে, চোখ রাঙান ভাত কুত্তাও খায় না কুকুরকে নিকৃষ্ট প্রানী বলা হয়। সেই কুকুরকেও যদি চোখ রাঙিয়ে অথবা মুখ ভার করে এক থালা ভাত দেওয়া হয় তাহলে নাকি সে খায় না। আমি নিশ্চিত ছাত্ররা যদি স্টুডেন্ট বলার পরে কন্ডাক্টর-ড্রাইভারের মুখের দিকে তাকাতো তাহলে নুণ্যতম লজ্জা যার আছে সে বিনা ভাড়ায় চড়তে পারতো না।
খুব অবাক লাগে এসব ছাত্র(!)দের এসব কান্ড দেখলে। মাস শেষে এরাই বাবার কাছ থেকে খরচের টাকা কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে। বাবার সেই রক্ত পানি করা টাকা দিয়ে সারা রাত গার্লফ্রেন্ড-জানের সাথে কথা বলে কিন্তু ৫/১০ টাকা দিয়ে টিকেট কাটার টাকা থাকে না!
বেহায়া, নির্লজ্জ ফকির ছাড়া আর কোন বিশেষণ পেলাম না এদের জন্যে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০১০ বিকাল ৪:২৫