প্রিয় ব্লগার মলাসইলমুইনা'র প্রকাশিত বইগুলোর মাঝে একটি। একুশে বইমেলা-২২ এ প্রকাশিত। বইটি তখনি আমার হাতে এসেছে এবং পড়েও শেষ করেছিলাম কিন্ত দু'কথা বলা হয়নি বলি বলি করেও! বন্ধু আমার হয়ত ধরেই নিয়েছেন আমি ভুলে গেছি বইটির কথা। আসল কথা হল সকল সময় নিয়ে নেন আমার কন্যাদ্বয়। তাদের দাবীদাওয়া আর হুকুম তামিল করতে করতেই নিজের সকল সময় শেষ! যাহোক সবই সময়ের চাহিদা। কথা বলতে বসেছি বই নিয়ে সে কথাতেই আসি
প্রবন্ধ এবং গল্পের সম্মিলনে 'অষ্টধা'। বইটিতে প্রতিটি প্রবন্ধের পরেই সেই সম্পর্কিত একটি করে গল্পের ধারনাটি অভিনব বটেই। অত্যন্ত চমতকার লেগেছে প্রগল্পের এই ধারনাটি।
আমার মত কম ধৈর্যশীল পাঠক যাদের কাছে প্রবন্ধ একটু রস কম কষ বেশি বলে মনে হয় তাদের জন্যে এই ধারনাটি অত্যন্ত আনন্দদায়ক। একই মলাটে একাধিক স্বাদ পাওয়া যায়।
বইটির ৮নং প্রবন্ধ ছিল- মানব থেকে ঈশ্বর হয়ে ওঠার কাহিনী নিয়ে। ২০১১সালে জাপানের ফুকুশিমায় ৭মাত্রার ভূমিকম্পে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের এক্সিডেন্টের পরে রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রনের মত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে স্বেচ্ছায় নিজেকে নিবেদন করেন বাহাত্তর বছর বয়সী ইয়াসেটেরু ইয়ামাদা।
এই প্রবন্ধটির সাথে সামঞ্জস্য রেখে যেই গল্পটি সেটি হল 'ধূসর বেলা'। এখান মোটাদাগে একজন বিত্তশালীর জীবনের শেষ সময়ের অবস্থা দেখা যায় যা খুঁজলে আমাদের আসপাশে দেখতে পাই। আবার সুক্ষ্ম ভাবে দেখানো হয়েছে এই ব্যক্তিটিই কারো একজনের জীবনে ঈশ্বরের ভূমিকায় এসেছিলেন।
ফিজিওগনোমি: ফিজিওগনোমি সম্পর্কে জেনেছি এই প্রবন্ধটির মাধ্যমেই। চোখ, নাক তথা চেহারা দেখে অপরাধী শনাক্তকরণের বিষয়টিকে বলা হয় ফিজিওগনোমি। মজার বিষয় হল প্রবন্ধটির সাথে ৩টি ছবি দেওয়া আছে তা দেখে আমি আমার নাক, চোখ মিলিয়ে কোন ক্যাটাগরিতে পরি তা বের করার চেষ্টা করেছি যদিও ব্যর্থ হয়েছি। তবে চুপিচুপি বলে রাখি নাকের ছবি দেখে মনে হয়েছে লেখকের ভাষায় হাবাগোবা ক্যাটারিতে পরে গেছি!
ভালোবাসার ঘ্রাণ: এটি একটি প্রগল্প। একজন বয়স্ক ব্যক্তি তার অদ্ভুত ধরনের ঘ্রাণ পান। আসপাশে ভালোবাসা কিংবা বিচ্ছেদ ঘটলে তিনি আগে থেকেই টের পান একটি ঘ্রাণের মাধ্যমে। গল্পটি লেখকের 'আকাশ গঙ্গার তারা' বইটিতেও ছিল। কিছু গল্প, কিছু লেখা থাকে যা পড়লেও তা ভালোলাগার আবেশ থাকে অনেক সময় জুড়ে এটি তেমনি একটি লেখা।
আমি যে কোন বই হাতে নিলে মূল অংশ পড়ার আগে উৎসর্গটা দেখি খুব আগ্রহ নিয়ে। এই বইটির উৎসর্গটুকু এত চমতকার যে কয়েকবার পড়েছি। আমি পড়তে পড়তে যেন বন্ধুপত্নীর আনন্দে উজ্জল চেহারা দেখতে পাচ্ছিলাম।
***************
এত চমতকার বইটি সম্পর্কে হয়ত অনেকে জানেন না। ব্লগার মনিরা সুলতানা আপা সুন্দর লিখেছেন এই বইটি নিয়ে। আপার পোস্টের লিংক যুক্ত করেছি আমার এই লেখায় যাতে কেউ সহজেই দেখতে পারেন।
পাঠের আলোচনায় ব্লগারদের বই
জাগৃতি প্রকাশনি থেকে প্রকাশিত বইটি রকমারী.কম থেকে কিনেছিলাম আমি কেউ চাইলে যার যার সুবিধা মত সংগ্রহ করতে পারেন। বইমেলা আসছে সামনে এখন থেকেই বাকেট লিস্টে বই নেওয়া শুরু করেছেন হয়ত অনেকেই, আমি অন্তত তাই করি কারন আজকাল আর মেলায় যাওয়ার কথা চিন্তাই করা যায় না। বইমেলা হয় ঘরে বসেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:০০