somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে সরকারী পদক্ষেপ নিয়ে কিছু কথা:

১৩ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন নই। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর সাম্প্রতিক আক্রমণ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিদেশি ভাইরাস, বিচারপতির রায়ের খসড়া চুরি—এগুলো প্রমাণ করে যে দেশি ও বিদেশি শত্রুরা বাংলাদেশের ক্ষতি করতে প্রস্তুত। এই শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলাই এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা প্রয়োজন

সাইবার ক্রাইম কী?
সাইবার অপরাধ’ বলতে মূলত ইন্টারনেট এবং কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধকে বুঝানো হয়। সাইবার ক্রাইম বা অপরাধ আমাদের বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়।
সাইবার অপরাধসমূহ:
সাইবার অপরাধের মাঝে রয়েছে
ভাইরাস আক্রমণ
ম্যালওয়্যার স্প্যামিং (malware spamming)
ভুয়া পরিচয়ে মেইলে বা ফোনের মাধ্যমে কোন চক্রে ফাঁসানো
ইমেইল বা ব্লগ বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে হুমকি দেয়া
কারো নামে সোশাল মিডিয়াতে/ ওয়েবসাইটে বা ব্লগে মিথ্যা প্রচারণা চালানো
ক্র্যাকিং – ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি
লগ ইন অ্যাকসেস চুরি
ব্যালেন্স ট্রান্সফারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ
ইন্টারনেটে মাদক বা অবৈধ কিছুর ব্যবসা করা
পাইরেসি- সদ্য প্রকাশিত গান ও সিনেমার এমপিথ্রি বা মুভি ফাইল প্রচার করা
কপিরাইট – কারও নিজস্ব লেখা বা ছবি নিজের বলে প্রচার করা
পর্ণোগ্রাফি
ওয়েবসাইট বা ই মেইল হ্যাক করা
কাউকে ব্ল্যাকমেইল করা
ধর্মীয় সহিংসতা ছড়ানো / দেশকে অস্থিতিশীল করার মত বিভ্রান্তি ছড়ানো ।
সাইবার ক্রাইম বিষয়ক সরকারী পদক্ষেপের মনে হচ্ছে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার বলছে – সাইবার ক্রাইম বন্ধ করতে চায় এবং এইটা সত্য যে বাংলাদেশের দ্রুত বাড়তে থাকা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান কম থাকায় এরা নানান ভাবে বিপদে পড়বে। সরকারের দায়িত্ব হলো নাগরিকের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া – এবং তথ্য প্রযুক্তির বিকাশমান যুগে পুরনো আইনে তা সম্ভব নয় বলে দেশে দেশে সাইবার ক্রাইম বন্ধের আইন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে সরকারী পদক্ষেপ :
‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০১৫’ নামে
আইনটির খসড়া দ্রুত চূড়ান্ত করবে তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। আইনে সাইবার অপরাধ
অজামিনযোগ্য হিসেবে গণ্য হবে, যার
সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবনের প্রস্তাব
করা হয়েছে। এতে জাতীয় সাইবার
নিরাপত্তা এবং সাইবার অপরাধ
প্রতিকার, প্রতিরোধ, দমন, শনাক্তকরণ,
তদন্ত ও বিচারের যথাযথ ব্যবস্থা
থাকবে।
সাইবার হামলা হলে তাৎক্ষণিক
ব্যবস্থা নিতে নতুন আইনের অধীনে
সৃষ্টি করা হচ্ছে ‘বাংলাদেশ সাইবার
ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’ নামে
বিশেষ টিম। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে
বিদেশে বসেও অপরাধ করলে এ দেশে
বিচার করা যাবে। অপরাধী বিদেশি
নাগরিক হলেও দেশে বিচার করার
বিধান থাকছে এ আইনে। তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ
আহমেদ পলক সমকালকে বলেন, সাইবার
অপরাধ ও সন্ত্রাস এবং সাইবার
নিরাপত্তার বিষয়টি দেশে
একেবারে নতুন। সাইবার আক্রমণের
মাধ্যমে কোনো দেশকে পঙ্গু করে
দেওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সিএসআইআরটি) :
এদের কাজ কি হবে?

রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ায়- ওয়েবসাইটগুলোতে এমন বিষয় সনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়াই হরে এই দলের মূল কাজ।

কারা কমিটিতে আছে?
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের এই দল গঠন করা হয়েছে। কমিশনের সদস্য, মোবাইল ফোন অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, পিএসটিএন, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে ও সাইবার ক্যাফের প্রতিনিধিদের এই দলে রাখা হয়েছে।
কি শাস্তি হবে?

১) টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৬৯ ধারা অনুযায়ী এই শাস্তি দেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।
২) কোনও ওয়েবসাইটে ক্ষতিকর কিছু থাকলে তাৎক্ষণিক ভাবে তা বন্ধ নাও করা হতে পারে জানিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসাই এই টিমের মূল লক্ষ্য।
৩) তবে গুরুতর কোনও অপরাধ বা যা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ, সে ক্ষেত্রে এ টিম কমিশনকে জানিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে জানান তিনি।
তিন বিশেষজ্ঞের নজরদারি –
সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে বিটিআরসি’র তিন জন সাইবার ক্রাইম (বিটিআরসি সহকারী পরিচালক পদমর্যাদা) বিশেষজ্ঞ পুরোদমে কাজ শুরু করেছেন।
বিটিআরসি ভবনে একটি কক্ষে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সর্বক্ষণ এ নজরদারি করা হবে বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাইবার নিরাপত্তার ওপর শিক্ষাক্রম শুরু করতে হবে, যাতে আমাদের দেশেই দক্ষ সাইবার নিরাপত্তা জনশক্তি গড়ে ওঠে। তাতে আমাদের সাইবার নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা আরও মজবুত হবে এবং বিদেশি মুদ্রা অর্জনের আরেকটি পথ হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×