somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিয়ের লৌকিকতা

১৫ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিয়ে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। একজন নারী ও পুরুষ উভয়েই একসাথে বৈধভাবে জীবন যাপন করার জন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের মাধ্যমে জীবনে প্রবেশ করে সম্পূর্ণ নতুন একটি পর্যায় এবং পরিবর্তন যা আমাদের অনেককেই মেনে নিতে হয়। একটি প্রবাদ বাক্য আছে, স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক জন্ম-জন্মান্তরের। কিন্তু আসলেই কি তা জন্ম-জন্মান্তরের? ইদানিং যেভাবে মানুষের ঘটা করে বিয়ে অনুষ্ঠান কার্যাদি সম্পন্ন করেন কিন্তু তা টিকে থাকে ক'জনার?

বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হলেও বিয়ে-শাদীতে আধুনিকতার নামে যে অপচয় ও অশ্লীলতায় যেনো কিছু কিছু মানুষ অনেক এগিয়ে। আবার আরেকটি বিষয় হচ্ছে বিলাসিতা ও অপচয়। যাইহোক, যে যাই করুক না কেন সাধ্যমতো এটা তার অবশ্যই আপন আপন ব্যক্তিগত ব্যাপার।

দেনমোহর মুসলিমদের বিয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। আইন অনুসারে পাত্রপক্ষের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী নির্ধারণ হওয়ার কথা। রীতিমতো অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে আমাদের সমাজের অধিকাংশ। যার ফলে বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি, ভাঙছে সংসার ও নানা অপ্রীতিকর ঘটনা। অতিরিক্ত দেনমোহর আদায় সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। ইসলামিক দৃষ্টিতে দেনমোহর নির্ধারণ হতে হবে পাত্রের আর্থিক সামর্থ্য, যা শুরুতে বা পরবর্তীতে আদায়যোগ্য। কিন্তু পারিবারিক সমঝোতা, বিশেষ করে বরের আর্থিক সামর্থ্য ও উভয় পক্ষের সম্মতি এসবের ঊর্ধ্বে হচ্ছে লৌকিকতা। আজকাল আমাদের দেশে কাবিন যেন একটা লোক দেখানো ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের বিয়েতে কাবিন এর সাথে বরের অর্থনৈতিক সামঞ্জস্য একেবারেই খাপছাড়া। বরের পরিবারের সামাজিক অবস্থান ও লোক দেখানোকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। আর ইসলামের বিধিমালা ও ক'জন মেনে চলে? অবশ্যই দেনমোহর হল স্ত্রীর প্রতি সম্মান সূচক স্বামীর একটি আবশ্যিক দেনা। দেনমোহর স্ত্রীর অধিকার সংরক্ষণ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এটা বরপক্ষের জন্য না হয় সহনীয় আর কনে পক্ষের জন্য না হয় শোভনীয়!

ছোট একটি ঘটনা বলি, কিছুদিন আগেই আমার নিকট আত্মীয়র (বরপক্ষ) বিয়ের মাত্র এক বছরের মধ্যে ডিভোর্স হলো। এবং ডিভোর্সটা এসেছিল কনেপক্ষের তরফ থেকে। মা বাবার প্রথম সন্তান হওয়াতে অনেকটা শখের বশেই বিবিএ ও এমবিএ শেষ করার পর পরই বিয়ে হয়। যদিও বরের একদম নতুন চাকরি তারপরও খুব ঘটা করে বিয়ের সমস্ত অনুষ্ঠান, এনগেজমেন্ট, গায়ে হলুদ, বিয়ে, বৌভাতের আয়োজন করেন বরের বাবা মা। বরের অর্থনৈতিক অবস্থানের চেয়ে সামাজিক অবস্থান ও পারিবারিক সম্মান রক্ষার্থে বেশ মোটা অংকের কাবিন হয়। দুঃখজনক হচ্ছে বিয়ের কাবিন নামায় অলংকারের কোন উসুল দেখানো না হওয়াতে সামাজিক ও লোকলজ্জার ভয়ে ডিভোর্সের পর পর কোন কিস্তি ছাড়াই বরের বাবা এক চেকের মাধ্যমে সেই টাকা প্রদান করেন।

অনেক মেয়ের পরিবার মনে করেন বিয়েতে দেনমোহরের টাকা যদি বেশি হয় তাহলে তালাক হলে মেয়ে ওই টাকা দিয়ে কিছু করবে। অদ্ভুৎ ব্যাপার সংসারই যদি না টিকে তাহলে দেনমোহরের টাকা দিয়ে কি হবে? আগেকার দিনের বিয়েতে দেনমোহরের পরিমাণ কম ছিলো, লোক দেখানো চাকচিক্য এসব কিছুই ছিল না কিন্তু বিয়েটা টিকে থাকতো আমরণ। দেনমোহর নিয়ে ভাবতে অবাক লাগে এই যদি হয় জীবন মরনের সঙ্গীর সাথে চুক্তির নমুনা তাহলে যেকোনো পক্ষই প্রতিপদে হেস্তনেস্ত হবে। এই আধুনিক যুগে বিবাহ নিবন্ধনের চুক্তিটি সময়োপযোগী করে তৈরি করতে হবে। নইলে এতো আয়োজন সবই হবে বৃথা।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:০৯
৩১টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×