somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উড়োজাহাজ ভ্রমণ ও মজার কিছু অভিজ্ঞতা।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবণে এখনো বড় কিছু আশা করিনি, কোন উচ্চকাঙ্খা বা কোন উচ্চবিলাসী অভিলাস নেই বিন্দুমাত্র, কোন কিছু পাবার উদগ্রীভ অদম্য ইচ্ছা নেই, যাই পেয়েছি তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে চায়। জীবণে শুধু মাত্র একটি ইচ্ছা পোষণ করেছি যেন আল্লাহ সুস্থ ও ইজ্জতের সহিত বাচিয়ে রাখেন।



বিদেশ যাব, উড়োজাহাজ ভ্রমণ করবো এই রমক কোন ইচ্ছা বা স্বপ্ন কোন দিনেই ছিলনা। কিন্তু দুঃখ জনক আমার কপাল, প্রিয় দেশ, বাবা, মা, সবকিছু ত্যাগ করে বিদেশ পাড়ি দিতে হয়েছে।

এতদুঃখ আর হতাশার মাঝে কিছু মজার অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম উড়োজাহাজ ভ্রমণ করার সময়।


২০০৬ সালের ৭ ই মার্চ সর্বপ্রথম কুয়েতের উদ্দেশ্যে রওনা হই বাংলাদেশে বিমানের একটি ফ্লাইটে চড়ে। প্রথমে বিমানে করে চট্টগ্রাম হতে ঢাকা, পরে অন্য ফ্লাইটে করে ঢাকা হতে কুয়েতে রওনা হই। ঢাকা হতে ফ্লাইট উড্ডয়নের সময় ফ্লাইটে হতে বাংলায় বার বার ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ফ্লাইটটি সর্ব প্রথম ঢাকা হতে কুয়েত যাবে, পরে কুয়েত হতে সৌদিয়ার জিদ্দায় যাবে। যারা কুয়েত যাবেন তার কুয়েত এয়ারপোর্টে নেমে যাবেন ও সৌদিয়ার জিদ্দাগামী যাত্রীরা ফ্লইটে বসে থাকবেন।



কুয়েতে এয়ারপোর্টে বিমান ল্যান্ড করার পর কুয়েতগামী সকল যাত্রীরা নেমে পড়েন। যাত্রীরা সবাই কুয়েত এয়ারর্পোটের ইমেগ্রেশন করা জন্য লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। এক জন, এক জন করে ইমেগ্রশন করে যাত্রীরা বিমান বন্দর ছেড়ে যাচ্ছেন, এবার আমার সামনের যাত্রীর পালা, ঐ ব্যাক্তি আমার সাথে একই ফ্লাইটের বাংলাদেশ বিমানের যাত্রী ছিল ও বাংলাদেশী নাগরিক ছিল, ইমেগ্রেশন অফিসার ও পুলিশ ঐ যাত্রীর পাসপোর্ট ভিসা পরীক্ষা করার পর জানতে ও বুঝতে পারলেন তার গন্তব্য কুয়েত নয়, তার গন্তব্য সৌদিয়া আরবে, ইমেগ্রেশন পুলিশ ও অফিসার ব্যাপারটি বুঝতে পারেন এটি ঐ যাত্রীর ভূল , পুলিশ বার বার তাকে বুঝাতে চেষ্টা করতেছে। এটি কুয়েত , সৌদিয়া নয়, মজার ব্যাপার হলো ঐ বাংলাদেশী যাত্রী বার বার উল্টা কুয়েত ইমেগ্রেশন পুলিশকে প্রশ্ন করতেছিল

ভাই কি সমস্য, ভাই কি সমস্য। কি হয়েছে,



কেউ কারো কথা কিছু বুঝতেছেনা। বিরক্ত হয়ে ইমেগ্রেশন পুলিশ ঐ যাত্রীকে এক পার্শ্বে দাড়ীয়ে রাখেন ও ইশারা দিয়ে আমাকে ঢাকলেন। এগিয়ে গেলাম ইমেগ্রেশন বক্সের দিকে।

কুয়েতি ইমেগ্রেশন পুলিশ ও অফিসার আমাকে জিজ্ঞসাকরলেন।

নাম কি ?বাবার নাম কি? ইথ্যাদি প্রযোজনীয় তথ্য।

আমার ইমেগ্রেশন হবার পর আমি ঐ যাত্রীর দিকে এগিয়ে যায়, এবং পুরো ব্যাপরটি তাকে বুঝিয়ে বলি, এটি কুয়েত, আপনি যাবেন সৌদিয়া আরবের জিদ্দায়, তারাতারি যে পথে ধরে এখানে এসেছেন ঠিক এই ভাবে সেই পথেধরে ফ্লাইটে চলে যান। তার পর কি হয়েছে জানিনা, জানিনা ঐ যাত্রী ঠিকমত তার গন্তেব্যে পৌছতে পারেছে কিনা।



২য় ঘটনাটি ঘটে ২০১১ সালের সেপ্টম্বর ৬ তারিখ। কুয়েত হতে দেশে যাচ্ছি, ওমান এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে করে, প্রথমে কুয়েত হতে ওমানের রাজধানী মস্কেটে তার পর মস্কেট হতে চট্টগ্রামে, ৬ সেপ্টম্বর ২০১১ কুয়েত সময় রাত ১০ টার দিকে মস্কেটে আমার ফ্লাইট অবতরণ করে, ফ্লাইট হতে নেমে এয়ারর্পোটের যাত্রী ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করতে থাকি, এই সময় দেখি আরো বাংলাদেশী যাত্রী আমর মত অপেক্ষা করতেছিল, এদের মাঝে অনেক কুয়েত, সৌদিয়া, ওমান, আমিরাত ইথ্যাদি দেশ হতে বাংলাদেশী যাত্রীরা ওমান এয়ারওয়েজ করে চট্টগ্রামে যাবার জন্য অপেক্ষ করতেছিল, যেখানে বসে অপেক্ষা করতেছিলাম ঠিক সেখান হতে ওমান এয়ারর্পোটের রানওয়ে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল, এমন অবস্থান দেখি বাংলাদেশ বিমানের একটি বড় ফ্লইট রানওয়েতে অবতরণ করে, তখন এক চট্টগ্রাম গামী যাত্রী খুশিতে উৎফুল্ল হয়ে বলে উঠলেন ফ্লইট এসে গেছে , কিছুক্ষণের মধ্যে রওনা দিব। ঐ যাত্রী আমার পার্শ্বে বসাছিল, কিন্তু ওমান এয়ারওয়েজ এয়ারর্পোটের ফ্লাইট সিডিউলের ডিসপ্লের্বোডে দেখাচ্ছেন
ফ্লাইট নেম - ওমান এয়ারওয়েজ
গন্তব্য - মস্কেট টু চিটাগাং।

ঐ যাত্রীকে জিজ্ঞসা করলাম , ভাই আপনি কোথায় যাবেন, উত্তর দিল চট্টগ্রামে।

আবার তাকে জিজ্ঞাস করলাম আপনি কোন ফ্লাইটে করে চট্টগ্রাম যাবেন।

উত্তর দিল, কেন ঐ যে বাংলাদেশ বিমান।

আবার তাকে জিজ্ঞসা করলাম , আপনার টিকেট দেখুন ভাল করে।

ঐ যাত্রীদেখল এবং আমাকেও দেখাল, টিকেটে স্পষ্ট লিখা আছে ওমান এয়ারওয়েজ।

পুরোব্যাপারটি তাকে বুঝিয়ে বল্লাম, ভাই এটি একটি ইন্টার ন্যাশেনাল এয়ার র্পোট, এখানে বাংলাদেশের ফ্লাইট সহ বিশ্বের সব দেশের ফ্লইট আসা যাওয়া করে, আপনি ফ্লাইট না দেখে আপনার টিকেট কি লিখা আছে তা দেখুন, এবং কোন এয়ারওয়েজ লিখা আছে তাতে, এই রকম আন্দাজে কাজ করবেন না।



৩য় ঘটনাটি ঘটে ১০ ই মার্চ ২০১৩।
কুয়েত এয়ার ওয়েজে একটি ফ্লাইটে করে ঢাকা হতে কুয়েতের উদ্দেশ্যে রওনা হবার জন্য ফ্লাইটের অভ্যন্তরে প্রবেশ করি, আমার সিটের দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছি, আরো অনেক যাত্রী ছিল, যে যার যার সিট খুজে খুজে বসতে শুরু করলো, এক পর্যায়ে দেখলাম একটি অনুমাণিক ১৭/১৮ বছরের তরুণী ও তার সাথে এক বয়ষ্ক মহিলা ফ্লইটের জানালার পার্শ্বে সিটে বসেথাকতে , কিন্তু ঐ তরুণী ও বয়ষ্ক মহিলাটিকে অন্য এক পুরুষ যাত্রী তাদের সিট হতে তুলে দিতে, কারণটি জানতে চায়লাম ঐ পুরুষ যাত্রীর নিকট ব্যাপরটি কি? উত্তর দিল এটি আমার সিট, আমার বোর্ডারিং কার্ডে আমার সিট নাম্বার লিখা আছে, দেখলাম পুরুষ যাত্রীর কথা সত্য।

আসলে ব্যাপাটি দেখলাম ঐ তরুণীটি ফ্লইটের জানালার পার্শ্বে বসতে চেয়েছিল, কিন্তু র্দুভাগ্য বশত তাদের সিটটি পড়েছিল ফ্লাইটের মাঝখানের সারিতে। যাক কাউকে আর কিছু বললাম না, আমার সিটের দিকে চলে গেলাম , কি আর্শ্চয ! আমার সিটটি একেবার জানালা পার্শ্বের সারিতে। আবার এলাম ঐ তুরুণী ও মহিলা যাত্রীর কাছে, তাদের কাছে অফার দিলাম সিট পরির্বন করে জানালান পার্শ্বে সিটে বসতে। রাজী ছিল ঐ মহিলা ও তরুণী যাত্রী, কিন্তু আমার পাশের অন্য এক যাত্রী সে তার সিট ছাড়তে রাজী না। এখানে উল্লেখ্য প্রতি সারিতে ২ টি করে সিট ছিল ঐ কুয়েত এয়ার ওয়েজের ফ্লাইটে, আমি সহ আরো ৩/৪ জন যাত্রী আমার পার্শ্বের যাত্রীকে অনেক অনুরোধ করলাম সিটটি ছেড়ে দিতে, কিন্তু বেটা আহম্মক কোন অবস্থায় সে তার সিটটি ছাড়তে রাজি হলোনা, শেষ পর্যন্ত ঐ মহিলা ও তরুণীর জানলার পার্শ্বে বসার সুযোগ হলোনা। যাক বুঝলাম সাবার স্বাধ জানালার পার্শ্বে বসে উড়োজাহাজ ভ্রমণের।



সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:৩০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×