- নেশা ধরেছ? নেশাখোরের মতো কথা বলছ!
- নেশাখোররা এত সুন্দর কথা বলে? নেশা করাটা মন্দ নয় তবে।
- চুপ!
- আচ্ছা চুপ।
- কী?
- হু?
- কী দেখছ?
- তোমার চোখে দেখে নিচ্ছি শার্টের কলারটা ঠিক আছে কিনা। এক কাজ করো, একটু কাঁদো তো! ভেজা চোখে রিফ্লেকশানটা ভালো পাব।
- চুপ! আমি গেলাম। হাত ছাড়ো!
- না!
- ছাড়বেনা?
- না। ছাড়ব না। এ কী? হাসছ যে? আমি কিন্তু সত্যি বলছি, আমি আজ হাত ছাড়ছি না।
- ছাড়বে না কেন?
- আদেশ আছে।
- আচ্ছা।
- তোমার জ্ঞান কেমন?
- কম।
- একটা প্রশ্ন করি!
- আচ্ছা।
-মহাবিশ্বের সীমানা আছে?
- জানি না।
- আছে তো কোথাও একটা।
- নেই। মানে নাও থাকতে পারে।
- কেন বলছ?
- আমার হাত কে যদি মহাবিশ্বের শেষ বলো, আমার হাত কোথায়?
- আমার হাতে।
- আর তোমার হাত?
- আমার শরীরে।
- তোমার শরীর?
- হাহাহা! বুঝতে পারছি! তুমি বুদ্ধিমান। তাই হাত ধরে বসে আছি, বুদ্ধি ট্রান্সফার হচ্ছে। না না! হাসির কথা বলিনি একদম। হাসবে না!
- আচ্ছা হাসব না।
- শোনো, একটা প্রশ্ন করি।
- আচ্ছা।
- ধরো এক মিটার লম্বা একটা রাস্তা। এর এক পাশে এক খোরগোশ, আরেক পাশে এক দেয়াল। খোরগোশ চায় দেয়াল ছুঁতে। কিন্তু একটা সমস্যা আছে।
- কী সমস্যা?
- খোরগোশ তো চলে ছোট্ট ছোট্ট লাফ দিয়ে। এই খোরগোশটি লাফ দেয় একটি অদ্ভুত ছন্দে।
- কেমন?
- মোট পথ যতটুকু, খোরগোশটি এক লাফে তার ঠিক অর্ধেক পথ পেরোয়। কিন্তু এর মানে এই না যে সে এক লাফে আধ মিটার পেরোনোর পর, আরেক লাফেই দেয়াল ছুঁবে।
- বুঝেছি! এক লাফে আধ মিটার পেরোলে রাস্তা বাকি আরো আধ মিটার। এবার এক লাফে পেরোবে আধ মিটারের অর্ধেক। ঠিক?
- সত্যিই বুদ্ধিমান তুমি। এবার বলো, খোরগোশ দেয়াল ছুঁবে কয়টি লাফে?
- দেয়াল ছুঁতে পারবে না।
- কেন?
- ১ তো ভাগ হতেই থাকবে, খোরগোশ বেচারার পথ আর শেষ হবে না!
- বলতে চাইছ এ পথ অসীম?
- হ্যাঁ!
- কিন্তু আগেই বলেছি পথটা এক মিটার লম্বা! অসীম বলো কী করে?
- কী বোঝাতে চাচ্ছ?
- মহাবিশ্বের সীমানা আছে?
- না নেই! তুমি চুপ করো!
- আচ্ছা চুপ করলাম। কিন্তু শোনো!
- কী?
- তোমার মনে আছে? যেদিন প্রথম তোমার হাত ধরি?
- হু।
- এক অদ্ভূত কান্ড হলো! আমি তো ধরেছি জোড়ে, তোমার হাতের কোষগুলো গেল মরে।
- এসব কী কথা?!
- সত্যি বলছি, আমি স্পষ্ট শুনেছি। আশেপাশের কোষেরা করল বিদ্রোহ, আমি নাকি খুব জোড়ে চেপে ধরেছি!
- সত্যিই কিন্তু!
- শোনো পরের কথা! তোমার কোষেদের দাবি মিটিয়ে গেলাম গভীরে। জানো, তোমার রক্তেরা খুব ভালোবাসে তোমাকে। অচেনা লোক আমি। আমায় দেখে ঘিরে ধরল। আমি ভয়ই পেলাম কিছুটা। আর রাজ্যের প্রশ্ন তাদের! পরিচয় পেয়ে অবশ্য বেশ আদরও করল।
- তুমি থামবে?
- না। শোনো আমার কথা!
- বাজে বকছ তুমি!
- আচ্ছা, শোনো, কথা আর অল্প বাকি। তো গেলাম আরো গভীরে! সেখানে দেখা তিন ভদ্রলোকের সাথে। একজন অবশ্য কিছুটা অভদ্র, আর মহাব্যস্ত। সারাক্ষণ ঘুরেই যাচ্ছে ভবঘুরের মতো! ঘুরতে ঘুরতেই কিছু কটু কথা বলল। বড্ড স্যাডিস্টিক!
- কী বলল সে?
- তোমার শুনে কাজ নেই। পরে কী হলো শোনো! গেলাম দ্বিতীয় ভদ্রলোকের কাছে! তিনি আরেক আজব পাবলিক! কোনো কথাই বলল না! কত ডাকলাম, উনি যেই সেই, নির্বিকার।
- অনেক হয়েছে! থামো! আমি যাই, হাতটা ছাড়ো প্লিজ!
- না! তুমি বসো। আসল কথা বলাই হয়নি! আমার অসহায়ত্ব দেখে এগিয়ে এল একজন, বলল, 'ওকে ডেকে লাভ নেই, ও নিউট্রন! কেমন যেন একটু। কথা বার্তা বলে না খুব। আর প্রথম যে বেকুবটাকে দেখলেন, সে ইলেকট্রন। অলটাইম রানিং'এ, বুঝলেন?! হাহাহা!'
- সে কে?
- প্রোটন সাহেব। জানো, উনি অনেক সুন্দর কথা বলেন। তোমার ব্যাপারেও বললেন অনেক। শেষে বললেন তোমার হাতটা যেন না ছাড়ি! এখন বলো ওনার কথা ফেলি কী করে!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:০৬