একটা মেয়ে! পৃথিবীর প্রায় সকল ছেলের কাছেই রহস্য। আসলে তারা রহস্য খুব ভালোবাসে। কিংবা বলা যায় (আমার মতে) তারা যা করে তাকেই রহস্য বলে চালিয়ে দেয়া যায়। প্রকাশ্য দিবালোকে মনে মনে ওরা যা ভাবে, যেভাবে হাসে, কিংবা যখন নিজের চুলোগুলো নিয়ে এলোমেলো করে, তার যৌক্তিক কারন থাকা সত্ত্বেও, ছেলেরা ঠিকই অত্যন্ত দক্ষভাবে এর ভিতর থেকে রহস্য খুঁজে নেয়।
*আরে, মেয়েটা এভাবে তাকালো কেনো ??
*এদিকে তাকালো কেন ?
*আরে কেমনে চুল ধরে নাড়চাড়া করছে, বুকের ভিতরে যেয়ে লাগছে!
*আরে, এদিকে তাকায়া হাসলো কেন?
*শালার এমন একটা মেয়ে যদি বিয়া করতে পারতাম!!! ইশশশশ......
কথাগুলোতে অনেকের আপত্তি থাকতেই পারে, কিন্তু, আমার কাছে কথাগুলো সত্য মনে হয়েছে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেয়েরা ছোটবেলা থেকে নিজেকে নিয়ে খুব গোছালো হয়। অনেকটাই নিজের মতো করে। ধীরে ধীরে নিজের অজান্তেই নিজের মতো করেই নিজের জন্য একটা জগত গড়ে ফেলে। সেই জগতটায় প্রবেশের অধিকার কেউ পায় না, সেখান থেকে কেউ কিছু শেয়ার পায় না। তার অনেক কিছুই বাইরে থেকে ভিন্ন, কিংবা উল্টাপাল্টা মনে হলেও, আসলে তার জগতে সেই রাণী, তার কাছে সব ঠিক আছে। ছোটবেলায় তার খেলনাগুলো সে তার ব্যাগে রাখে, আর কাপড় কিংবা কাজের জিনিস খেলনার জায়গায়। এটা বোঝা মুশকিল, কিন্তু, এটাই তার কাছে সঠিক, এর ভিন্নটা কেউ করলে সে তার উপর ঝাল মিটিয়ে নিবেই। মেয়েরা কথা বলতে শেখার পর থেকেই তার সেই নিজের জগতের রাণী হিসেবে অভিনয় করতে থাকে, তার যা ইচ্ছে তাই। একেবারে শিশু বয়স থেকেই এই অভিনয়ের হাতেখড়ি। এজন্যই মঞ্চে না হোক বাস্তব জীবনে মেয়েরা অভিনয়ে বেশ পটু হয়। এতোটাই পটু বা দক্ষ হয় যে তারা নিজেরাও বুঝতে পারে না। খুব কম মেয়েই আছে (আমার মতে) যে ছোট বেলায় এমন জগতের সৃষ্টি করেনি এবং অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়নি।
অভিনয়ে এতোটা দক্ষ হবার কারনেও তারা এতোটা রহস্যময় হয়ে ওঠে কেবলই মায়ের ছেড়ে অন্য কোলের সন্ধানে থাকা সেই ছেলেগুলো। মেয়েটার একেকটা অঙ্গভঙ্গি, চোখের চাহুনি, মাথা থেকে বেয়ে আসা চুলে আংগুল দিয়ে চিরুনি করা কিংবা মিষ্টি করে বলা দু-একটা কথা যে মেয়েটার সেই নিজস্ব জগতের একটা অংশও হতে পারে তা কোন ছেলের জানার কথা নয়। নিজেকে অন্য থেকে আড়াল করতে পারলে মেয়েরা নিজেকে সফল মনে করে, নিজের নিজস্বতা অন্যের কাছে প্রকাশ করতে দেয় না। সে একেকজনের কাছে একেকরকম হয়ে যেতে পারে, মানিয়ে নিতে পারে প্রায় সবকিছুতেই। অন্য কারো কাছে নিজেকে ফাঁস করে দেয়া মানে হেরে যাওয়ার মতো মনে করে ওরা।
আর যাকে সে ভালোবেসে ফেলে, তার সামনেও তার আসল চেহারা প্রকাশ করতে পারে না, লজ্জায় মুখ লুকিয়ে তার উপরে তার নিজস্ব অভিনয়ের মুখোশটা পড়ে ফেলে। তবে, সেই মানুষকে তার নিজস্ব জগতে একটা জায়গা করে দেয়। তার অনেককিছুই বলে দিতে পারে সেই মানুষটিকে। তবুও সে ভাবে সেই মানুষের কাছে সে আজীবন রহস্য হয়ে থাকবে। আসলেও তাই, সেই রহস্য ভেদ করতে পারবে না কেউ।
বাইরে থেকে একটা মেয়ের যে উইথ অথবা উইথ-আউট ময়দা যে রূপ, চেহারা বা যে অবস্থা দেখা যায়, সেটি কেবল তার ছায়া মাত্র......... ছায়ার পিছনেই ছুটতে হয়, ভাগ্য ভালো হলে গোটা মানুষ ও তার জগত দুটোরই সন্ধান মিলে, আর ভাগ্য মন্দ হলে ছায়াটাই একসময় মরীচিকায় রূপ নেয়.........