আমরা বোধয় নিজেদের নিয়ে গর্ববোধ করতে পারি। কারন আমরা এখন সভ্য। আমরা যে কোন অপরাধের শাস্তি দিতে পারি। প্রয়োজনে একজন অপরাধীর চোখ তুলে ফেলতে পারি, তাও আবার নিজ পিতার হাতে মোবাইল সেট চুরির অপরাধে। এমন জঘন্য অপরাধের এরকমই শাস্তি হওয়া উচিত।
আমরা শাস্তি দেব, চরম শাস্তি দেব এমন দরিদ্র গরিব শ্রেণীর ছোট খাট চুরির জন্য। কারন আমরা সভ্য।
আমরা এতটাই সভ্য যে আমাদের চোখ শুধু এমন দরিদ্র শ্রেণীর লোকের চুরিই দেখে, দেখেনা বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর চুরি। আমাদের দেশে বড় বড় বিদেশী মোবাইল কম্পানিগুলো অবৈধ ভিওআইপি ব্যাবহারের মত চুরি করছে। শাস্তি সরূপ কিছু টাকা জরিমানা করে হচ্ছে। অথচ তারা যে দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে সেই অপরাধ আমাদের দেখার প্রয়োজন নাই কারন আমরা সভ্য। তাছাড়া অন্যান্য মাল্টিন্যাশনাল কম্পানিগুলোর ঐ একই অবস্থা দেখার প্রয়োজন নাই।
আমাদের দেশে প্রায় সব অসম্ভব কাজ ঘুষ দিয়ে করানো যায়। এ ধরনের চুরিও দেখার প্রয়োজন নাই।
আর এই ছোট খাট চুরির জন্য দরিদ্র শ্রেণীর লোকেদের এমন শাস্তি দেব যেন তারা সাড়া জীবনের জন্য অচল হয়ে যায়। তারপরও আমরা চুপ করে দেখে যাব।
চুরি অবশ্যই কোন সাপোর্ট করার মত বিষয় নয়। তা আমি নিজেও জানি, কিন্তু সে কি এত বড়ই অপরাধ করেছিল যাতে করে তারই বাবা চাচাকে বাধ্য করা হয়, তার চোখ তুলে সাড়া জীবনের জন্য পঙ্গু করে দিতে হবে।
আমি কথা বলছি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের ভদ্রাসন গ্রামের দরিদ্র সুলতান বেপারীর ছেলে মিরু বেপারীর(১৫)।
মোবাইল সেট চুরীর অপরাধে গ্রামের সমাজপতিরা তার বাবা ও চাচার হাতে তার চোখ তুলে দেয়ার শাস্তি দেয়।
তার অপরাধ কি ঐ সকল চোরদের তুলনায় কম ছিল না? তাকে কি আর অন্য কোন শাস্তি দিয়ে তার অপরাধ বুঝিয়ে দেওয়া যেত না।
আমি এসব সমাজপতিদের শাস্তি দাবি করছি। যদিও জানি এই সমাজ পতিরাই আবার ঘুষ দিয়ে চুরি করে ছাড়া পেয়ে যাবে।