গ্রামীণ ব্যাংকের কাছে দ্বিতীয়বার 10 হাজার টাকা ঋণ না পেয়ে ক্ষোভে-দুঃখে বিষপানে আত্দহত্যার চেষ্টা করেছেন 50 বছর বয়সী আব্দুল খালেক। গত সোমবার কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। খালেক এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে 4 নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনার পর গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক চোখ রাখছেন হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন খালেকের দুই ছেলের ওপর, যাতে তারা মিডিয়ার কাছে কিছু বলতে না পারেন।
খালেকের দুই ছেলে আনোয়ার ও দেলোয়ার জানান, তাদের মা রওশন আরা প্রায় 6 বছর যাবৎ গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য। 5 মাস আগে তিনি চৌদ্দগ্রাম ফকিরবাজার শাখা থেকে হাঁস-মুরগি পালনের জন্য 10 হাজার টাকা ঋণ নেন। এ টাকা দিয়ে আব্দুল খালেক স্থানীয় চিওড়া বাজারে একটি চায়ের দোকান দিয়ে ঋণের কিসত্দি নিয়মিত পরিশোধ করছিলেন।
বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অবৈধ উচ্ছেদকালে ভেঙে দেয়া হয় খালেকের একমাত্র অবলম্বন চায়ের দোকানটি। দোকানটি নতুন করে শুরু করার জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের ফকিরবাজার শাখায় স্ত্রীর নামে আবারো 10 হাজার টাকা ঋণের জন্য আবেদন করেন খালেক।
এই ঋণের জন্য গত একমাস থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পিছু পিছু ঘুরছিলেন তিনি। তাকে আশ্বাসও দেয়া হয়েছিল। সর্বশেষ গত 2 মার্চ সোমবার দুপুর 2টায় চিওড়া গ্রামে গ্রামীণব্যাংকের মাঠ কর্মকর্তা গেলে ঋণ চান খালেক। এসময় গ্রামের অন্য লোকজনের সামনে তাকে অপমান করা হয়। বেলা আড়াইটায় বাড়ি ফিরেই খালেক বিষপান করেন। খবর পেয়ে গ্রামের মানুষ ওই মাঠকর্মকর্তাকে আটক করলে গ্রামীণ ব্যাংকের স্থানীয় কর্মকর্তারা খালেকের বাড়িতে ছুটে যান। তাকে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে নিয়ে আসা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
আব্দুল খালেকের চিকিৎসক ও মেডিসিন ওয়ার্ডের রেজিস্ট্রার ডা. আজাদ জানান, খালেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিষক্রিয়ার ফলে হার্ট ও ফুসফুস মারাত্দক ক্ষতিগ্রসত্দ হয়েছে।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, খালেক অচেতন অবস্থায় ওয়ার্ডের বারান্দায় পড়ে আছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা চিকিৎসার খরচ দিচ্ছেন।
এই ঘটনা সম্পর্কে গ্রামীণ ব্যাংকের ফকিরবাজার শাখার ব্যবস্থাপক নুপুর কানত্দি দে জানান, খালেকের স্ত্রী রওশন হাঁস মুরগি পালনের জন্য 10 হাজার টাকা সহজ ঋণ নিয়ে এপর্যনত্দ নিয়মিত 18 কিসত্দি পরিশোধ করেছেন। এখনো 26 কিসত্দি বাকি রয়েছে। ফলে নতুন করে তার নামে কোনো ঋণ অনুমোদন করা হয়নি।
সৌজন্যে- আমাদের সময়
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০