



জীবনের পথে ২০১৩-১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল আমার। যদিও তাদের সঙ্গে পরিচয়টা আরও আগে, পাহাড়ে ওঠার সূত্রে। ঢাকার অভিযাত্রীদের মাঝে “নর্থফেস” ব্র্যান্ডের যে পোশাক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তার অনেকটাই সরবরাহ করত এই প্রতিষ্ঠান। সময়টা ২০০৪/০৫ সালের দিককার হবে। সেই তালিকায় যাঁরা ছিলেন, তাঁদের নাম বললে অনেকেই চেনা মুখ।
ইয়াংওয়ানের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ছবি তোলার মাধ্যমে। ওদের বেশ কিছু বিমানের ছবি আমি তুলেছিলাম, সেখান থেকেই সখ্যতা গড়ে ওঠে।
পরবর্তীতে, আনুষ্ঠানিকভাবে কাজের সূত্রে কোরিয়ান ইপিজেড এলাকায়ও যাওয়া হয়। যেন দেশের ভেতর আরেক দেশ! বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গলফ কোর্সটিও সেখানে। আধুনিকতা, শৃঙ্খলা আর ব্যবস্থাপনায় এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা।
কিন্তু মূল গল্পটা ২০১৪ সালের। (স্মৃতি বিভ্রম না হলে সেই সালই ছিল)। ইয়াংওয়ানের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একদিন সকালে দেখি আমার ডেস্কে একটা খাম রাখা, তার ভেতরে ১০০০ টাকার একটি নোট। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, এটা শুধু আমার জন্য না—সবাই পেয়েছে। হ্যাঁ, সবাই। কে কোন পদে আছেন, তাতে কিছু আসে যায় না।
আমার কৌতূহল বেড়ে যায়। বন্ধু বৎসল বসের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "বলেন তো, ব্যাপারটা কী?"
উনি বললেন, “৪০ বছরের উপহার।”
আমি একটু চমকে বললাম, “তাই বলে ১০০০ টাকা? আপনি কত পেয়েছেন?”
“১০০০ টাকা,”—একদম নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে উত্তর দিলেন।
আমি খানিকটা কৌতুক করে বললাম, “এটা কিছু হলো?”
উনি হেসে বললেন, “আসলে না। কিন্তু জানো, খিয়াক সান সাহেব ৮ কোটি টাকা খরচ করেছেন এই উপলক্ষে। প্রতিষ্ঠানজুড়ে ৮০ হাজার কর্মচারী, প্রত্যেককে দিয়েছেন ১০০০ টাকা করে—কোনো জমকালো অনুষ্ঠান ছাড়াই।”
আমি চুপ করে গেলাম।
সেই নীরবতার মধ্যেই যেন বুঝলাম, এই জন্যই তাঁরা বড় হন। সত্যিই বড় হন।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




