জুঁই
সেদিন বিকেল বেলার কথা মনে পড়ে খুব, প্রথমবার তুই
হঠাৎ ঝলমলিয়ে হেসে ওঠেছিলি আমার চোঁখের দিকে চেয়ে
তখন কেবলি মনে হলো যেনো কোনো লজ্জাবতী মেয়ে
তার শৈশবের সমস্ত সুশোভা উজার করে হাসছে
গায়ের মিষ্টি ঘ্রাণ বাতাসের পাখায় চরে ভাসছে ভাসছে
আমি জানলার সবকটা কপাট খুলে
সময়ের গতি এমনকি নিজেকেও ভুলে
কতোক্ষণ ছিলাম ডুবে জানতে পারিনি
আনন্দের সে কী তৃপ্ত অবগাহন!
এখনো তা নিখুঁত আলোক চিত্রের মতো স্পষ্ট
এবং প্রাণবন্ত হয়ে ফুটে থাকে
যেমন নদীর জল পাাক খেয়ে খেয়ে গড়িয়ে যায় বাঁকে।
জুঁই
তোর দেহের মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে
কোমল পাপড়িতে মায়াময় জড়িয়ে
ব্যাকুল টানতিস
তখন কি জানতিস
তোকে একদিন এই বাগানের মাটিতেই ঝরে যেতে হবে
বল কোন সে খেয়ালে
নিজেকে বিলিয়ে তোর কেনো এতো মাতামাতি তবে?
এখনতো বসন্তকাল
বাগানে কতোশতো ফুলের বাহার
উঠুনের এক কোণে বিলাতি ক্যাকটাস
তার পাশেই শাখা মেলে রজনীগন্ধা ফুটেছে
বারান্দা ঘেষে গোলাপের কুঁড়ি তিনটা গাছে
তিন রঙ আর আমার জানলার কাছে
যেখানে তুই ছিলি সেখানটাতে
কয়েকটা হাসনাহেনা হাওয়ায় নাচে।
চার পাশের অঢেল ফুলের মেলায়
তোর চেনা গন্ধ পাপড়ি পেলবতা
খুঁজেও কি পাওয়া যায়রে!
পরিচিত মানুষের মুখচ্ছবি
কতো প্রিয় বাল্য স্মৃতি
ভুলে যাই খুব কাছের বন্ধুদের নাম-ঠিকানা
সহজে মনে করতে পারিনা কোনো কোনোদিন
জুঁই
অথচ তুই
কবেকার কোন বসন্তের শেষ রাতে
দমকা বাতাসের সাথে
নিশ্চুপ ঝরে গেছিস
তার পরও প্রায়শই স্মৃতিতে উঁকি মেরে
ফিক করে হেসে মুখ লুকিয়ে নিস
তাজা মিষ্টি গন্ধ নিয়ে
থেকে যাস আমার হৃদয়ে
অম্লান।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৫১