somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী কী চায় - ২য়

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্বে লিখেছিলাম যে প্রেমে সফলতার ক্ষেত্রে প্রেমিক আর সাধারণ পুরুষের মধ্যে খুব ছোট অথচ অদ্ভুত রকমের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পার্থক্য দেখা যায়। আর এই বিষয়গুলো জানার ওপর নির্ভর করতে পারে একজন পুরুষের জীবনে নারী ভালোবাসা হয়ে আসবে নাকি অন্য সব কিছুর মত নারীকেউ একজন পুরুষ শুধু এমন কিছু হিসাবে দেখবে যা সে তার যোগ্যতাবলে হাসিল করেছে। এটুকু তো বলা যায় যে, শুধুমাত্র হাসিল করবার একটা বস্তু বলে যে পুরুষ নারীর পিছে ছোটে তার পক্ষে একটা নারীকে তার মত করে ভালোবাসতে পারা কখনো সম্ভব হবে না। আর যদি মনে করে থাকেন যে, আপনি এভাবে চিন্তা করেন না কিংবা নারীকে শুধুমাত্র হাসিল করবার কোন বস্তু হিসাবে দেখেন না তবে নিজেকে প্রশ্ন করুন তো, কখনো কি এমন কোন অভিযোগ করেছেন বা করেন যে, "নারী শুধুমাত্র টাকা পয়সা দেখে আকৃষ্ট হয় কিংবা গাড়ি, বাড়ি দেখেই মেয়েরা ছেলেদেরকে বিয়ে করে ?" যদি এমনটা হয়ে থাকে তবে হয়ত নিজের মনের অজান্তেই আপনি নারীকে তার মত না করে বরং সমাজ ও মিডিয়ার দাঁড় করে দেওয়া স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী তাকে পেতে চাচ্ছেন। আর এটা নারীর সাথে সতিকারের মানসিক কানেকশন তৈরির ক্ষেত্রে হতে পারে বিরাট বাধা। আপনার অজান্তেই নারীর সাথে সম্পর্ক কিংবা প্রেমে ব্যর্থতারও কারণ হয়ত শুধু আপনার নারীকে দেখার দৃষ্টিকোণ। আর আশার কথা হলো, এই ব্যপারে সচেতনতা নারীর সাথে আপনার সম্পর্কগুলোকে আমূল বদলে দিতে পারে। জীবনে আসা যে কোন নারীকে যখন একজন পুরুষ উদযাপন করতে শেখে আর তাকে প্রেরণা দিতে তথা প্রেরণা নিতে শেখে নারীরা যে তাকে একজন সত্যিকারের প্রেমিক হিসাবে সারা জীবন মনে রাখবে তা বলাই বাহুল্য। আর নারীকে বুঝতে হলে এটা জানা আবশ্যক। জানেন কি প্রেমিক ক্যাসানোভার অন্যতম গুন ছিল মেয়েদের কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শোনা, তার স্বপ্নের কথা, তার দুঃখের কথা এবং তার না বলা সেসকল কথা শোনা যা শোনার জন্য হয়ত তার স্বামী কিংবা "বয়ফ্রেন্ডের" কোন সময়ই ছিল না। আর এভাবে মেয়েদের কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতে শুনতেই কিন্তু কৌতুহলী ক্যাসানোভা প্রেমিক ক্যাসানোভা হয়েছিল। তাই মেয়েদেরকে বুঝতে হলে তাদের ব্যপারে কৌতুহলী আপনাকে হতেই হবে, তাদেরকে লক্ষ্য করতে হবে, তাদের কথা জানতে চাইতে হবে আর কোন রকম জাজমেন্ট ছাড়া তাদের কথাগুলো শুনতে হবে। চলুন এবার আরেকটু জানা যাক মেয়েদের ব্যপারে।

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন এমন একটা সময় ছিল যে মেয়েটি ছোট্ট ছিল। সে অসম্ভব সুখী ছিল, সে তখন গাইতে পারতো, নাচতে জানতো। সেই অলস সময়গুলোতে সে কত কিছুই না করতো। তার কত স্বপ্নই না ছিল। কত সুন্দর সব স্বপ্ন ছিল সেগুলো। নজেকে নিয়েই ছিল তার কত গল্প। আর নিজের এই গল্পের নায়িকা ছিল সে। নিশ্চিতই তার এই গল্পের এক নায়কও ছিল, যে নাকি তাকে সেইভাবে ভালোবাসবে, তার পৃথিবীটাকে রোমান্সে ভরিয়ে রাখবে। তার স্বপ্নের নায়ক তাকে তাড়া করবে, তার জন্য লড়াই করবে এবং সবশেষে অনেক কষ্টের পর তাকে জিতে নেবে। যে তাকে তার স্বতন্ত্রতার জন্য ভালোবাসবে, তাকে তার মত করেই দেখবে, অন্য কারোর সাথে তুলনা করে তাকে ছোট করবে না। মেয়েটির গল্পে রোমান্স থাকে, থাকে উল্লাস আর উত্তেজনায় ভরপুর সব ঘটনা।

কিন্তু পরবর্তীতে কী হলো ? কোথায় গেল ছোট্ট মেয়েটির সেই সব স্বপ্নগুলো ? কখন সেগুলো হারিয়ে গেল ? কখনই বা স্বপ্নের জায়গায় দ্বিধাদ্বন্দ, অবিশ্বাস ও অভিযোগন জায়গা করে নিল মনে ? কখনই বা লজ্জা ও অপমানে ভারাক্রান্ত হয়ে গেল তার হৃদয় ? সে ভেবেছিলো তাকে সৌন্দর্য্যের প্রতীক হিসাবে দেখা হবে, অথচ সামাজিক ও পারিবারিক প্রত্যাশা, বাধ্যবাধকতা আর দায়িত্ব যেন তার সেই স্বপ্নগুলোকে মিথ্যা প্রমাণ করে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বাস্তবতা। সমাজ ও মিডিয়া এযুগে মেয়েদের সৌন্দর্য্যের ওপর অসাধ্য সব স্ট্যান্ডার্ড সেট করে রেখেছে। যেন তাকে একই সাথে সব হতে হবে। তাকে পড়াশোনা, ক্যারিয়ারে যেমন সফল হতে হবে তেমনি সুন্দরী হতে নাকি তার নির্দিষ্ট কিছু মান থাকতে হবে যার বেশিরভাগই আবার নিজ গুনে অর্জন করা সম্ভব নয়। প্রত্যাশার পরিমাণ এত বেশী যে তা অর্জন করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। আবার তার জীবনের আসা ছেলেগুলোর সাথেও গল্পের নায়কের কোন মিল নেই। তাদের অনেকেই হয়ত তাকে কষ্ট দিয়েছে, কেউ কেউ তার বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে আর কেউ হয়তোবা তাকে ছেড়ে চলে গেছে।

তার সম্পর্কগুলো যেন ছিল বালু দিয়ে গড়া প্রাসাদের মত, কতটা আশা ও যত্ন করেই না সেগুলো শুরু হয়েছিল, একটা সময় কতটা প্রতিশ্রুতিশীল মনে হয়েছিল সেগুলোকে, কিন্তু হালকা ঢেউ এসেই হয়ত প্রাসাদ্গুলোকে একদম ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত এভাবেই যেন এককালের সেই ছোট্ট মেয়েটির স্বপ্নের মাঝে অবিশ্বাস আর সন্দেহগুলো জায়গা করে নেয়, আর স্বপ্নগুলো তার মনের গভীর থেকে গভীরে চাপা পড়তে পড়তে একটা পর্যায়ে এমন কোন জায়গায় হারিয়ে যায় যে এখন আর সে কোন স্বপ্নেই বিশ্বাস করতে পারেনা।

আর যদি এই মেয়েটির জীবনে এমন কোন পুরুষ আসে যে তাকে তার সেই হারানো স্বপ্নগুলো আরো একবার দেখার সাহস, বিশ্বাস ও প্রেরণা দিতে সক্ষম তবে এই মেয়েটি তাকে হয়তবা পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত তাড়া করবে এবং ভালোবাসতে চাইবে। কোন পুরুষ যখন একজন নারীকে কোনরকম চাওয়া ছাড়া এরকম একটা পর্যায়ে ছুঁয়ে যেতে সক্ষম হয় যেখানে তার ভেতরের মেয়েটি আরেকবার নিজেকে মুক্ত ও স্বাধীন মনে করে, নিজের সামর্থ্যের ওপর বিশ্বাস ফিরে পায়, আর নিজের সৌন্দর্য্যকে উপলব্ধি করতে পারে তবে এই মেয়েটির জীবনে যতগুলো পার্টনার অথবা প্রেমিকই এসে থাকুক না কেন সে সবসময়, সবসময় এই পুরুষটির কথা চিন্তা করবে। আর এটা আসলে একটা উপহার। যেই উপহারটি পুরুষ দেয় একজন নারীকে, আর নারী দেয় একজন পুরুষকে।

চলবে।

আগের পর্ব- Click This Link

https://www.facebook.com/DoctorXBD
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৬
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×