"নেতা"
দৃশ্য - ১
বসুন্ধরা সিটির নিচে রাস্তার পাশে লাঠি ভর করে বসে আছেন জীর্ণ-শীর্ণ আবয়বধারী বৃদ্ধা।
শরীরের শক্তি নেই বললেই চলে। পিঠ কুজো হয়ে ব্যাঙের আকার ধারণ করেছে।শরীরের উপর থেকে দেখলে বোঝা যায় মাংস থেকে চামড়ার ভাগটাই বেশি ভারী। চামড়ার উপর দিয়ে নীলাভ রেখা দেখা যাচ্ছে যা নার্ভ নামে চিনি আমরা।
পাশ থেকে হাজারো লোকজন যাচ্ছে-আসছে। মাঝে মধ্যে হাতের পুরানো থালাটায় টক-টক পয়সা পড়ার শব্দ শুনে তার মনে একটু ঢেউ বয়ে যায়।
কিন্তু ৪৫ বছর আগেও কিন্তু তার আবয়ব এরকম ছিলনা। রূপ, গুণ সব ছিল তার। হঠাত একদিন মিলিটারিরা ধরে নিয়ে গিয়েছিল বেইজ ক্যাম্পে। পাশে আরো ১৫-২০ জন মেয়ে। চোখ বাধা অবস্থায় গ্রামের চেয়ারম্যান বলল
"কাপড় খুল শালি"
সাথে সাথে নিয়ে যাওয়া হলো দারগার ঘরে।
তারপর দরজার খীলটা টেনে দেওয় হলো।
কিচ্ছুক্ষণ আর্তণাদ শোনা গেলো।
প্রায় ১৫ মিনিট পর দরজা খোলা হলো।
ঘরের এক কোনায় আগোছালো চুল আর বিষণ্ণ মুখ এবং চোখে পানি নিয়ে বিছানার চাদরে গায়ের লজ্জা ধারে রাখা সেই মেয়েটিকে দেখা গেলো।
চেয়ারম্যান : হুজুর জিনিসটা কেমন চাখলেন বলুন
দারগা: এক দাম আসলি চীজ হে, বাড়া মাজ্জা আয়ে।
চেয়ারম্যান : (মিচকি হাসতে হাসতে) তাহলে হুজুর আমি পাকাপাকিভাবে থাকছি তো চেয়ারম্যান হয়ে?
দারগা : আলবৎ
দৃশ্য - ২
সৃতির পাতায় ডুব মেরে হঠাত মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন বৃদ্ধা। কিছু তরুণ ছেলেমেয়ে তাকে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করলে জানা যায় ব্রেইন টিউমার।
অনেক খরচ করতে হবে চিকিৎসার জন্যে, এত টকা কই পাওয়া যায়?
তাই কাগজের বাক্স হাতে দাঁড়িয়ে গেলো শপিং মলের নিচে।
সেই চেয়ারম্যান এখন বিরাট নেতা।হাতে তার অনেক কাজ।
এই মিটিং সেই মিটিং। হঠাত ছেলেটার কথা মনে পড়ল।
ক্রিং ক্রিং-
"- হ্যালো বাবা
-- কি করছ এখন তুমি?
- এক মায়ের চিকিৎসার জন্যে টাকা জোগাড় কিরছি
-- আল্লাহর কাছে দোয়া করি টাকাটা তাড়াতাড়ি পেয়ে যাও তোমরা, আর কিছু বাকি থাকলে আমার সেক্রেটারি কে কল দিও, ও সরকারি ফান্ড থেকে ডোনেট করে দিবে"
সেক্রেটারি: ছোট সাহেব কোথায় আছেন স্যার?
নেতা: ছেলে আমার রোদে পুড়ে কোন মায়ের চিকিৎসার টাকা যোগাড় করছে, হুহ!!