somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন ২৩ থেকে ২৫ বছর বয়সি ছেলের আত্মোপলব্ধি

১৬ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২৩ থেকে ২৫ বয়সটি একটি ছেলের জন্য বড়ই অদ্ভুত এক সময় ! যেন কোনো বিশাল ঢেউয়ের উপর ইতিউতি ইতস্ততঃ ভেসে বেড়ানো। কি হচ্ছে সেটা উপলব্ধি করার মত যথেষ্ট জ্ঞানও নেই, কি হবে সেটা সম্পর্কেও কোনো আন্দাজ নেই ! তাদের এক্স গার্লফ্রেন্ডদের একের পর এক বিয়ে হতে থাকে চোখের অসহায় দৃষ্টির সামনে। কারো কারো ক্যারিয়ার মাত্র পথ চলতে শুরু করেছে, আর যাদের এখনো ঢের বাকি ( সামাজিক এবং প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে ) তারা কেমন যেন পরাজিত ঈর্ষাকাতর চোখে ক্যারিয়ার শুরু করা ছেলেটির দিকে তাকায়। ভাবে দোষটা কি তার, নাকি ওই ছেলের নাকি ভাগ্যের ! সিনিয়ররা ভাবেন, "তুমি তো এখনো ততটা লায়েক হয়ে উঠোনি। তুমি আর কিইবা বুঝবে !"। জুনিয়ররা ভাবে "আরে ভাইয়া আপনার দিনতো শেষ, আমগো রক্ত গরম, এখন আমগো দিন, আপনি কি অতশত বুঝবেন? ( মানে মানে কাইটা পড়েন - মনে মনে )"
খবরের কাগজ আর টিভি চ্যানেলের গুরুগম্ভীর সংবাদ গুলো ছেলেটিকে কিঞ্চিত চিন্তিত করে, আবার টম এন্ড জেরি কার্টুন দেখার অভ্যাসটাও পুরোপুরি ছাড়তে পারেনা। ফাস্টফুড শপগুলোর স্বচ্ছ কাচের দেয়াল ভেদ করে বার্গারগুলোর দিকে লোভাতুর দৃষ্টি দিতে দিতে ভাবে, এত অল্প বয়সে ভুঁড়ি বের হলে কি চলবে ? আর কোনো ফ্রীই আসলে ফ্রী না।
কোনো ছেলের সপ্তাহের অলস দিনগুলো যেন ফুরোতেই চায়না, আর কারো নতুন বসের মন যোগাতে ছুটির দিনগুলোতেও গাধার খাটনি খাটতে খাটতে মনে পড়ে, আহা ! আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম !
দেখা হলেই মমতাময়ী আন্টিরা মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে খোঁচা মারেন, " তা বাবা বিয়ে করছ কখন? তোমার মায়ের তো এখন একটু শান্তি দরকার, তোমার বন্ধুরা কিন্তু সব গুছিয়ে নিল !" আর শ্রদ্ধাভাজন আঙ্কলেররা গম্ভীর মুখে ভ্রু কুঁচকে বলেন, " ক্যারিয়ার কে হালকা ভাবে নিলে চলবে? এ বয়সে একটু কষ্ট না করলে কখন করবে? তোমাকে নিয়ে তো তোমার বাবার অনেক আশা ভরসা ! "
ছেলেটি অবাক হয়ে আবিষ্কার করে বুক ভরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে বসে থাকলেও নিজেকে প্রমাণ করার মত কোনো অর্জনই তার নেই ! সে সুযোগই বা তাকে দিল কে ? কাউকে ইতিমধ্যেই রূঢ় বাস্তবের কড়াল থাবা আঘাত করেছে, কেউ এখনো ভাবছে কখন যে বাস্তব জীবনে নেমে সংসার শুরু করবো ! সবাই অবশ্য ভালো ভাবেই বুঝে ফেলেছে যে জীবনটা স্কুলের গন্ডিতে শেখা ততটা সহজ সরল নয়, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার খাতায় লেখা জীবনের তাৎপর্য মানে গুলো নিছকই ফাকা বুলি। সারাজীবন পলিটিক্স কে ঘৃণা করে এসে দেখা যায় এই ব্যাধিটি সমাজের সমাজের প্রতিটি শিরা উপশিরা অনেক আগেই খেয়ে ফেলেছে। এটা ছাড়া কোথায়ও এক পাও ফেলা যায় না। আর রাজনীতির ছত্রছায়ায় গা বাঁচিয়ে চলিয়েরা ধীরে ধীরে উপলব্ধি করতে থাকে, আসলে কি রাজনীতি তাদের কিছু দিয়েছে নাকি সবই ছিল স্বার্থ হাসিলের নির্লজ্জ ষঢ়যন্ত্র ?
এটা বুঝতে তার একটু দেরিই হয়ে যায় যে ভালোবাসা আসলে ততটা অন্ধ নয় এবং বন্ধুত্বের মধ্যেও শর্ত রয়েই যায়। বাবা মা ছাড়া কোনো সম্পর্কই চিরস্থায়ী নয়। অন্যান্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই নিজস্ব কিছু না কিছু ত্যাগ করতেই হবে।

দিন শেষে একাকী জ্যোৎস্নালোকিত তারা ভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে সে ভাবে, যেভাবে চেয়েছিল জীবনটা ঠিক সেরকম নাহলেও, কিছু অপূর্ণতার মাঝেও জীবনটা আসলে ততটা খারাপও নয় !


( লেখাটির মূল ভাবনা আমার এক ফেসবুক বন্ধুর ছোট্ট একটা স্ট্যাটাস থেকে। লিখাটি ছিল ইংরেজিতে কয়েক লাইন । সেও তার অন্য এক বন্ধু থেকে কপি করে। আমার পড়ে মনে হল প্রতিটি লাইন যেন আমার কথাই বলছে ! সাথে সাথে আবার মনে হল কথাগুলো অস্বীকার করতে পারবে এমন কয়টি ছেলে পাওয়া যাবে ? তাই ওই বন্ধুর অনুমতি সাপেক্ষে লিখাটি আমি বাংলায় আমার মত করে লিখলাম। আপনাদের সাথে শেয়ার না করলে মনে হচ্ছে বিরাট এক দায় রয়েই যাবে।)
১৪টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:০৭




মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…
১. প্রথমে বলেছেন মৃতদের পেটে কাটাছেড়ার ডাহা মিথ্যা। পরে স্বীকার করেছেন দাগ থাকে।
২. আশ্রমে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হয় না। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×