প্রথমেই বলে নেই আমি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নই এবং নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক দল ঘেষাও নই। এর প্রমান সরূপ আমার ব্লগের পোষ্ট গুলোতে নজর দিলেই বুঝতে পারবেন।
প্রসঙ্গে আসি, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের ইতিহাসের সাথে মিলে রয়েছে জাতীয় স্লোগান, অনেক দেশে অফিসিয়াল অনেক দেশে আন অফিসিয়াল। তবে আমি ব্র্যন্ডিং মটোর কথা বলছিনা, ব্রান্ডিং মটো বাংলাদেশেরও আছে। আমি বলছি এমন একটি স্লোগান যেটা শুধু বাংলাদেশীরাই তাদের জয় বিজয় আনন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করতে ব্যাবহার করবে, যে শ্লোগানের সাথে মিশে থাকবে বাংলাদেশের ইতিহাস যে শ্লোগানে মিশে থাকবে বাংলাদেশের গন্ধ, থাকবে বাংলার একতা ও শক্তি, থাকবে বাংলাদেশের প্রতি শ্রদ্ধা। অনেক দেশের সেনাবাহিনী বা সৈনিকেরাও যুদ্ধক্ষেত্রে এমন ধরনের স্লোগান দিয়ে নিজেদের কে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিটি হামলায় কিংবা প্রতিটি প্রদক্ষেপে নিজেদেরকে উজ্জিবিত করেন।
আমাদের পার্শ্ববতী রাষ্ট্র গুলোরও এমন স্লোগান রয়েছে, যেমন ভারতের- ভারত মাতা কি জয়- জয় হিন্দ, পাকিস্তানের- পাকিস্তান জিন্দাবাদ। তবে পার্শ্ববর্তী দেশ গুলার এমন স্লোগান আছে তাই বালে আমাদেরও থাকতে হবে আমি এ ভাবে বলছিনা, আমি আগেই বলেছি বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই আছে। শুধুমাত্র সহজ করে বুঝানোর জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের উদাহরন দিলাম।
মনে পরে ২০১০ এ চিলির কয়লা ক্ষনির ধসে ৩৩ জন মানুষ আটকা পরেছিল নাসা পরবর্তিতে তাদের উদ্ধার করে ৬৮ দিন পর, আমি বিবিসিতে লাইভ দেখছিলাম একজন একজন করে বের করে আনছে আর উৎফুল্ল জনতা প্রতিবার এক সাথে একই স্লোগান দিচ্ছে।
অথবা বিভিন্ন দেশ খেলায় তাদের সমর্থকরা তাদের দেশের খেলোয়ারকে উদ্ভুদ্ধ করতে তাদের দেশের নামের বাহিরে নির্দিষ্ট স্লোগান দিতে দেখি। বাংলাদেশের কোন খেলার বিজয়ের সময় আমারো খুব ইচ্ছে হয়ে চিৎকার করে স্লোগান তুলতে, তবে এখন আমরা শুধু বাংলাদেশ বাংলাদেশ করে শ্লোগান ধরি কিন্তু এর পর আর কিছুই বলতে পারিনা শুধু হই হই করি।
কেউ কেউ বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে স্লোগান তুলেন কিন্তু সেটাতে কখনেই তেমন শক্তি দেখিনা, তাছাড়া এ্রই স্লোগান রাজাকারদের আদিনিবাস পাকিস্তানেরও ।
বাংলাদেশের যেকোন আর্জনে আমার খুবই ইচ্ছা হয় 'জয় বাংলা' বলে চিৎকার করতে, কিন্তু পারিনা একটা ভয়ে কেউ কেউ হয়ত এর মধ্যে রাজনৈতিক দলের গন্ধ পান। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় এই স্লোগান সমগ্র বাংলাদেশকে একত্রি করেছিল। বর্তমানে 'জয় বাংলা' আওয়ামীলীগ তাদের দলের হিসাবে ব্যাবহার করে, অবশ্য আওয়ামীলীগ এটা ব্যাবহার করার কারনও আছে, এই শ্লোগানটির সাথে মিশে আছে এই দলটির ইতিহাস।
তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রির কাছে একটি প্রস্তাব কিংবা অনুরোধ থাকবে অওয়ামীলিগের জন্য নতুন একটি শ্লোগান তৈরী করে 'জয় বাংলা' কে দলমত নির্বিশেষে সমগ্র বাঙ্গালী জাতীর জন্য দিয়ে দেয় হোক কিংবা উৎসর্গ করা হোক। যেন 'জয় বাংলা' বললে কাউকে একটি দলের সমর্থক না বুঝায়। 'জয় বাংলা বললে শুধু আওয়ামীলীগ না বুঝায়। যেন 'জয় বাংলা' বললে শুধু বাঙ্গালী বুঝাবে, বাংলাদেশী বুঝাবে, বাংলাদেশের সমগ্র বিজয় বোঝাবে, ৭১ বুঝাবে, মুক্তি যুদ্ধ বুঝাবে, টাইগার বাহিনী বুঝাবে।
অথবা 'জয় বাংলা' যে কোন দল তাদের নিজস্ব স্লোগানের পাশাপাশি ব্যাবহার করবে এবং স্কুল কলেজ অফিস আদালত সহ যে কোন প্রকাশনায় সমগ্র জাতী ব্যাবহার করতে পারবে। বাংলাদেশের গর্বিত সৈনিকেরাও দেশে বিদেশে তাদের বিভিন্ন মিশনে ব্যাবহার করতে পারবে।
মাননীয় বিরোধী দলীয় নেত্রী, বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ ও সমর্থক সহ বাংলাদেশের সব দলের সব মতের মানুষকে আহবান করব একবার জয় বাংলা বলে দেখনু আপনার রক্তের ধমনী কি বলে।
বিএনপির কেউ কেউ হয়ত বলবে 'বাংলাদেশ দীর্ঘজিবী হউক' এটা হলে সমস্য কোথায়? আমি শুধু বলব এটি দেশের মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা, এটা একটি দলের জন্য সম্পূর্নভাবে ঠিক আছে, কিন্তু আমি সমগ্র জাতীর জন্য বলছি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এই স্লোগানটি যদি সমগ্র বাঙ্গালী ব্যাবহার করে তবে এটা আপনাদেরই গর্বের বিষয়। জয় বাংলা শ্লোগানটি যখন থেকে প্রচলিত হয় তখন সমগ্র বাংলাদেশই একটি দল ছিল। জয় বংলা স্লোগানটি কোন ভাবেই শুধু নির্দিষ্ট একটি দলের হতে পারেনা, জয় বাংলা সমগ্র জাতীর সমগ্র বাঙ্গালীর। 'জয় বাংলা' বাংলাদেশের সকল মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সকল ধর্মের। 'জয় বাংলা' বাঙ্গালীর রক্তে মিশে আছে। আমি বিশ্বাস করি যারা এর বিরোধীতা করবে তাদের পরের প্রজন্মই 'জয় বাংলা' ধারন করবে।
মাননীয় প্রধানন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী, 'জয় বাংলা' না বলে চিৎকার করলে যে আমি শান্তি পাইনা, আমি যে তৃপ্ত হইনা। 'জয় বাংলা' না বললে আমার উৎফুল্লতা আমার জয় বীজয় আনন্দ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ সম্পূর্ন রূপে প্রকাশ করতে পারিনা।
তাই আপনাদরে প্রতি অনুরোধ প্লিজ আমাকে চিৎকার করতে দিন-
জয় বাংলা
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৪৬