somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাত কুল সবই নিল তবুও ভারতমাতাই পরম বন্ধু রইল।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি বাঙ্গালী নাকি বাংলাদেশি সেই জাতিতত্বের দিকে না গিয়ে আপাতোত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু কথা বলি। কারণ বাংলাদেশ টিকে থাকলে বাঙ্গালী বাংলাদেশি তত্ব বেঁচে থাকবে। আর বাংলাদেশ না থাকলে বাঙ্গালী তত্ব শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের একার সম্পত্তি হয়ে যাবে। তাই সেইসব ভাবের কথা আকাশে তুলে রেখে জমিনের বাস্তবতা নিয়ে কিছু কথা বলি।

কিছুদিন আগে আমার পূর্ব পরিচিত একজন প্রফেসারের কথা শুনলাম। তিনি একটি নামকরা কলেজের ইংরেজি প্রভাষক। তার মেয়ে এবার এডমিশন টেষ্ট পরীক্ষা দিচ্ছে। ইন্টারের রেজাল্টে জিপিএ ৫ দেখা হলেও ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে তেমন ‍সুবিধা করতে পারে নি। এরপর প্রফেসার সাহেব ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে চাইলেন। তিনি তার ছেলের মাধ্যমে তার প্রাক্তন এক ছাত্রের সাথে যোগাযোগ করলেন। সেই ছাত্রকে জানালেন, আমার মেয়েকে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাবো। যত টাকা লাগে দিবো। তুমি ব্যবস্থা করো। প্রফেসার সাহেবের সেই ছাত্রের মুখে এই কাহিনী শুনে সত্যিই আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এও কি সম্ভব? মানুষ গড়ার কারিগররাও আজ অন্যায়ের পথে পা বাড়াতে কার্পন্য বোধ করছে না! একজন শিক্ষক হিসেবে তিনি ঠিকই সৎ বাণী আওড়ালেও নিজের বাস্তব জীবনে সেই সৎ বাণীর কোনই প্রতিফলন নেই।

দেশের শিক্ষাব্যবস্থার যখন এই অবস্থা, ভাবতে পারেন আমরা জাতি হিসেবে কোনদিকে যাচ্ছি। চীন দেশে একটি প্রবাদ আছে, ‘যদি তুমি একশ বছরের পরিকল্পনা কর তবে গাছ লাগাও, আর যদি হাজার বছরের পরিকল্পনা কর তবে মানুষ তৈরী কর’। তবে আমরা কি করছি? সরকার ঘটা করে বৃক্ষরোপন অভিযান পালন করে গেলেও এইসব আগাছা দূর করতে মোটেও মনোযোগী মনে হচ্ছে না। উল্টো প্রশ্ন ফাঁস, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি এইসব নিয়ে যেই লিখবে তার বিরুদ্ধেই নাকি রাষ্ট্র থেকে লিগ্যাল এ্যাকশন নেওয়া হবে। এ যেন জোর করে মুখ বন্ধ রাখার পায়তারা। মুখ বন্ধ রাখলেই কি আর সব কিছু বন্ধ হয়ে যাবে?

এমন দায়সারা ভাবে শিক্ষাব্যবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যৎে আমরা একটি প্রতিবন্ধী জাতিতে পরিণত হয়ে যাবো। যার কিয়দাংশ বাস্তবতা আমরা বর্তমান সময়েই দেখতে পাচ্ছি। হীরক রাজার মন্ত্রীসভার সেই জি হুজুর নীতি আজ সমগ্র বাংলাদেশকে গ্রাস করে ফেলেছে।

এবার আসি সংস্কৃতি চর্চার দিকেঃ
অতি সম্প্রতি একদল সংস্কৃতি কর্মীকে প্রায়শ রাজপথে বিভিন্ন সভা সেমিনারে দেখা যাচ্ছে। তাদের চেতনা যেন হঠাৎ করেই কোমা থেকে জেগে উঠেছে। মামুনুর রশীদরা এতোদিন স্কয়ার হাসপাতালের শীততাপ নিয়ন্ত্রিন আইসিইউতে অচেতন অবস্থায় পড়েছিলেন। যার কারণে তারা ষ্টার জলসা কিংবা ষ্টার প্লাস অথবা জি বাংলার আগ্রাসন গুলো খেয়াল করেন নি। এসব চ্যানেলের বদৌলতে সন্ধ্যা নামলেই যে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে পশ্চিমবাংলা এবং ভারত বাংলার সংস্কৃতির লালন পালন এবং আদর আপ্যায়ন ‍শুরু হয় তা মনে হয় এই এটিএম শামসুজ্জামান, আবুল হায়াৎ প্রমুখরা জানেনই না।

যারা কথায় কথায় বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন আর ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেন, তারা কি বোঝেন না, ৫২তে উর্দূর বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হয়েছিল কি হিন্দিরে আগ্রাসন মেনে নেবার জন্য? উর্দূ আর হিন্দি কিন্তু মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। উর্দূ শুধু আরবী অক্ষরে লেখা হয় আর হিন্দি হিন্দি অক্ষরে লেখা হয়। মূল পার্থক্য এখানেই। আজ যদি আপনারা উর্দূর জ্ঞাতিভাই হিন্দিকে মেনেই নিবেন, আপনার মুখের অন্যতম প্রধান ভাষা বানিয়ে ফেলবেন তবে রফিক জব্বারদের অকালে প্রাণ দেবার কি প্রয়োজন ছিল? কয়েকটি তাজা প্রাণ বেকার চলে গেল না?

এতোদিন থেকে বাংলাদেশের সচেতন সমাজ ষ্টার জলসার বিরুদ্ধে কথা বলে আসছে তাতে সংস্কৃতি কর্মীদের কোনই আগ্রহ নেই। কিন্তু যেই কিনা দীপ্ত টিভি একটি বিদেশী সিরিয়ালকে বাংলাদেশে জনপ্রিয় করে তুলল! অন্ত্যত সুলতান সুলেমান প্রচারিত হবার দিনে বাংলার মানুষ ষ্টার জলসার পানে তাকাচ্ছে না ঠিক তখনই মামুনুর রশীদ গংরা এই দীপ্ত চ্যানেল এবং সুলতান ‍সুলেমান অনুষ্ঠানটির পিছনে লেগে পড়লেন। তবে কি আমরা ধরে নিবো মামুনুর রশীদদের এই আন্দোলনও দাদার দেশের স্বার্থ রক্ষায় আয়োজন করা হয়েছে। তা না হলে চ্যানেল আই এতোদিন থেকে নিয়মিত হলিউডের একশন সিরিয়ালগুলো ধারাবাহিকভাবে প্রচারিত করে আসলেও মামুনুর রশীদরা কোন প্রতিবাদ করেন নি কেন? অন্তত পত্রিকায় একটি বিবৃতিকো দিতে পারতেন। তবে কেন দেননি? সেই সিরিয়াল ষ্টার জলসাকে টক্কর দিতে পারেনি বলেই কি? হ্যা মূল পয়েন্ট ঠিক এখানেই। ভারতের চ্যানেলের প্রতি সাধারণ মানুষের এই আগ্রহ কমার কারণেই কি ভারতীয় চ্যানেলদের টাকা খেয়ে মামুনুর রশীদরা এই পাগলসম আন্দোলন করছে! জাত কুল সবই গেল তবু ভারতমাতা জিতে রইল। ভারত বাংলাদেশের সবই খেয়ে ফেললেও, তারাই আমাদের প্রধান বন্ধু! ঐ যে একাত্তর সালে পাক বাহিনীর রেখে যাওয়া অস্ত্রগুলো লুট করেই তো প্রকৃত বন্ধুত্বের পরিচয়টা দিয়ে গেছে!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৫
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×