গত দুই দিন ধরে জ্বড়ে ভুগছি । ঘুম আসলেও ঠিক মত ঘুমাতে পারছিনা । ভোরের দিকে ঘুমানোর ব্যর্থ চেস্টা করে মাত্র উঠলাম । পুরো শরীর ব্যথা ।ডাক্তারদের উপর একটা ক্ষোভ থেকে গত দুই বছর আমি অষুধ খাইনা ।মন খারাপের আরেকটা দিন শুরু হল । দুই বছর ধরেই এমন যাচ্ছে । অথচ এই আমিই কখনো মন খারাপ করতে পারতামনা মাধবীর কারনে ।
মাধবী নিজে যেমন চঞ্চল ছিলো তেমন আমাকেও চঞ্চল করার চেস্টা করতো সবসময় । শেষ যেবার জ্বড় হয়েছিল তখন মাধবী আর আমি একসাথেই থাকতাম । সেদিন দেখেছিলাম কতটা ভালবাসা থাকলে এরকম একটা চঞ্চল মেয়ে তার ভালবাসার মানুষের সামান্য জ্বড়ে কিভাবে ভেঙ্গে পরে ।একটা মানবী একটা মানবকে কতটা ভালবাসতে পারে তা আমি এই মাধবীকে দেখেই শিখেছি ।
আট মাসের সংসার ছিল আমাদের ।এই সংসার বলতে সাধারন বাঙ্গালিদের সংসার নয় ।আমরা কেউ কাউকে বিয়ে করিনি ।কারন আমরা ভালবাসায় বিশ্বাস করতাম একটা স্বাক্ষরে নয় । চার বছর প্রেম আর আট মাসের সংসারে আমাদের একবারের জন্যেও মনোমানিল্য হয়নি । দুজনের বাবা-মা গ্রামে থাকতো বলে তারা কিছুই জানতোনা ।
মাঝে মাঝে মাধবী মাঝ রাতে খুব কান্না করতো ,যদি বাবা-মা মেনে না নেয় !মেনে না নেয়াটাই স্বাভাবিক ।আমাদের দেশে এখনো ভালবাসার থেকে ধর্মের মূল্য যে বেশি ।দুই ধর্মের দুই মানব মানবীর বিয়ে এই সমাজ এই সংসার কখনোই মেনে নেয় না ।ধর্মান্তরিত হলে মেনে নেয় জানি কিন্তু আমি বা মাধবী কেউই এটা করতে চাইনি কিন্তু একসাথে থাকতে চেয়েছি ।
সমাজ সংসার থেকে পালিয়ে আট মাস একসাথে থাকলেও সেই আট মাসকে আট বছর বা আশি বছর আমরা করতে পারিনি । আল্লাহ-ঈশ্বর-ভগবান বাঁচতে দেয়নি মাধবীকে । দুই ধর্মের দুই ঈশ্বরের বোধহয় পছন্দ হয়নি বিষয়টা যে এই দুইটি মানুষ ধর্মের ঊর্ধে গিয়ে একে অন্যকে ভালবেসেছে । হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম ডাক্তারও বাঁচাতে পারেনি । ডাক্তার যেহেতু বাঁচাতে পারেনি তাই আমি আর ডাক্তারের কাছে যাইনা ।
প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ভাবি মাধবীর কথা আর মনে করবোনা । কিন্তু ঘুম থেকে উঠে সেই মাধবীর মুখটাই চোখের সামনে ভেসে ওঠে । আর সারাদিন মন খারাপ ভাবটা থেকে যায় ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১২