somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক মুহূর্তের সুখ

০৫ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত কয়েকদিন নিয়ম করে রাত ঠিক পৌনে তিনটার সময় দিহানের ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে। ব্যাপারটা ধীরে ধীরে বিরক্তির চরম সীমায় পৌঁছে গেছে। না, আজ এর একটা হেস্থ নেস্ত করেই ছাড়বে। কত আর সহ্য করা যায়। কিন্ত প্রতিবার এই চিন্তা করবার পরপরই আর কিছু বলা হয়ে উঠে না।
দিহান যে ফ্ল্যাটে থাকে তার সাথেই লাগোয়া পাশের বিল্ডিংটা। বড় জোর দুই/তিন হাত দূরে হবে। ঐ পাশের বেড রুমটাও এই বরাবর। প্রতিদিন ঠিক একই সময়ে পাশের ঐ বাসা থেকে ঝগড়া করার আওয়াজ আসে। আর বিপত্তিটা সেইখানেই। বেছে বেছে এই সময়টাতেই কেন ঝগড়া করে? সারাদিন কি করে কে জানে!

পরেরদিন ছুটির দিন হওয়াতে দিহান ঠিক করল পাশের ঐ বাসাতে গিয়ে অভিযোগ করে আসবে। কিন্তু নিচের দারোয়ান কিছুতেই ঢুকতে দিল না। ঐ ফ্ল্যাটের কথা বলাতে আরো বেশি গড়িমসি করতে লাগল। যদিও দারোয়ানসহ এই বিল্ডিংয়ের অনেকেই তার পরিচিত। তারপরও বর্তমানের ফ্ল্যাট সংস্কৃতির কারণে কারো সাথে কারো তেমন দেখা সাক্ষাৎ হয় না। যাই হোক, দিহান অপমানটা হজম করে চলে আসল। আর রাতের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল।
ঐদিন রাতে কিছুই হল না। যাক কিছুটা নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। মনে হয় দারোয়ানটা কিছু বলেছে। কিন্তু দুইদিন না যেতেই আবার শুরু হল তাদের স্বামী-স্ত্রীর উত্তেজিত টক শো। আশপাশের আর কেউ কিছু বলছেও না। সব দায় যেন দিহানের একার। বিছনা ছেড়ে উঠে সে জানলার কাছে যেতেই দেখল, আজকে ঐ বাসার জানলাটার পর্দাও নেই। মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেল তার। একবার ভাবলো এইখান থেকেই ডাক দিবে তাদেরকে। পরক্ষণে কি ভেবে লাইট না জ্বালিয়ে দেখাfর চেষ্টা করতে লাগল কি হয়!
দেখা গেল, বাড়ির কর্তা খুব দ্রুত পায়চারি করছে আর রাগে গজগজ করে চলেছে। স্ত্রী বেচারীকে দেখা যাচ্ছে না। তবে তার উপস্থিতি টের পাওয়া যাচ্ছে। একটু পরে জোড়ে চড় মারার শব্দ পাওয়া গেল। ঠিক তখনি মহিলা মানুষটিকে জানলা বরাবর দেখা গেল। আর দেখেই দিহান বুঝতে পারল, মহিলাটি প্রেগন্যান্ট। ইচ্ছা করছিল তখনি গিয়ে ওই বদমায়েশ লোকটাকে একটা উচিত শিক্ষা দিয়ে আসে।
কিছুক্ষণ কোন সাড়া শব্দ নাই। দিহান তবুও অপেক্ষা করল কিছুসময়। কয়েক মিনিট বাদে লাইট জ্বালালো সে। সিদ্বান্ত নিল, ওদেরকে ডেকে তার অসুবিধার কথা বলবে। কিন্তু আলো জ্বালানোর সাথে সাথে, হঠাৎ করেই হরর মুভির মত আচমকা ঐ বাসার লোকটি জানলার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল। তাও আবার লাল টকটকে ইয়া বড় চোখ করে। দেখলে যে কারোর পিলে চমকে উঠবে। দিহানতো প্রচন্ড ভয় পেয়ে উলটে প্রায় পড়েই যাচ্ছিল। কোনমতে নিজেকে সামলে নিল সে। কিন্তু এরপর সে যা দেখল, তাতে তার রীতিমত হার্টবিট বেড়ে গেল। ভয়ংকর সে লোকটার হাতে একটা পিস্তল। তা দিয়ে সে ইশারা করছিল জানলার ধার থেকে সরে যেতে। কি আর করার অত রাতে। বাধ্য ছেলের মত দিহান সরে গিয়ে, খাটে গিয়ে শুয়ে পড়ল। আর এই অনাকাংখিত ভয়ের মুহূর্তটা ভুলে থাকার একটা ব্যর্থ চেষ্টা করতে লাগল।
এরপর দিনকয়েক বেশ ভালভাবেই কেটে গেল। সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে গেল। যেন কিছুই হয়নি। দিহানও কারো সাথে ব্যপারটা শেয়ার করল না। কদিন না যেতেই আবার বিপত্তি। এবার যা হল তা আরো মারাত্মক।
একদিন ভার্সিটি থেকে ফিরছিল দিহান। শর্টকাট করার জন্য যে ব্লকে থাকে তার পিছনের রাস্তা দিয়ে আসছিল সে। ঢোকার মুখে ডাস্টবিনটার সাথে অনেক মানুষের জটলা। কাছে গিয়ে যা দেখল তার জন্য কোনভাবেই প্রস্তুত ছিল না সে। পলিথনে মোড়া একটা সদ্যজাত মৃত বাচ্চা শিশু। মাথাটা বের হয়ে আছে। পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। খোঁজার চেষ্টা করছে কিভাবে কি হল।
দিহানের মাথা ঝিমঝিম করছে। আর বেশি সময় নষ্ট না করে বাসায় চলে আসলো। পুরো বিষয়টা তার মনে খুব প্রতিক্রিয়া তৈরি করল। এতদিন টিভিতে নিউজ দেখতো এসবের। আজ নিজ চোখে দেখল। বর্তমানে এইসমস্ত ঘটনা মানুষের মনে তেমন আলোড়ন তোলে না। কয়েকদিন একটু আলোচনা করে। পরে আর মনেই থাকে না। নতুন কোন টপিক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। রাস্তাঘাটে লোকজন মারা গেলে বা খুন করে কয়েকটুকরা করলে অল্প একটু সময় হু হা করেই ভুলে যায়। সবাই যার যার নিজের ব্যক্তিগত সুবিধা অসুবিধা নিয়েই পড়ে আছে। তাই স্বার্থপরতার এই সমাজে অনুভূতি সব ধারবিহীন ভোঁতা চুরিতে পরিনত হয়ে গেছে। কেউ একবারের জন্যও ভাবে না, যদি অন্যের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিজের জীবনে হয় তাহলে কি হবে! সবাই ধরেই নিয়েছে অন্যের হলে হোক, তার কিছু হবে না। আরে দূর, কি হবে!কিছুই হবে না। নিজে ভালো আছি তাতেই হবে। কার কি হল,তা দেখার সময় কই! সারাদিন এত ব্যস্ত,সময়ই পাই না। কিন্তু যখন নিজের ক্ষেত্রে ঘটে, কেবল তখনি টনক নড়ে। আর তখন যত পারে অন্যের অভিযোগের থালা নিয়ে পড়ে। ভাবখানা এমন, নিজে একশভাগ সঠিক, কোন ভুল নেই। ভুল তার হতেই পারে না। সব ভুল অন্যের। আর ব্যাপার হচ্ছে প্রত্যেকে যার যার ক্ষেত্রে একই কথা ভাবে। কিন্তু সেটাতো যুক্তিযুক্ত নয়। সবাই তো একসাথে সঠিক বা একসাথে ভুল হতে পারেনা। আর সবসময় নির্ভুল হওয়াটাতো বাস্তবসম্মত হতে পারেনা।
যাই হোক, এক্ষেত্রে দিহান কেন জানি ব্যতিক্রম। বাসায় এসে সে একদম গুম হয়ে পড়ল। দুপুরে ভাল করে খেল না। সন্ধ্যার দিকে তার মা জিজ্ঞেস করাতে সে সবকিছু বলল। এমনকি কয়েকদিন আগে রাতের বেলা ঘটে যাওয়া ঘটনাটাও আজ তার মায়ের কাছে খুলে বলল। মা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করল যে, দুটি ঘটনা আলাদা হতে পারে। এইসব নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু দিহানের বার বার মনে হতে লাগল এই দুটো ব্যাপার একই সূত্রে গাঁথা।
ঐ দিন রাত্রে সে খেয়াল করে দেখল, পাশের সেই বাসা থেকে কোন রকম সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। এতে তার সন্দেহ আরো ঘনীভুত হল। পরের দিন সকালে সে ওই বাসার দারোয়ানের কাছে আবারো গেল। এবং যথারীতি সে আগের বারের মত অসহযোগিতা করল। দিহান ভাবতে লাগল কি করা যায়। হঠাৎ তার মনে পড়ল, তাদের ড্রাইভারের সাথে এই বিল্ডিং এর ই২ ফ্ল্যাটের ড্রাইভারের ভালো খাতির আছে। সেই ড্রাইভারকে সে পাড়ার মোড়ের একটা দোকানে দেখা করতে বলল। একসাথে বসে কিছুসময় কথা বলল তারা। কথা বলে দিহান ঐ ফ্ল্যাটের ব্যাপারে কিছু তথ্য জানতে পারল।
ই৩ ফ্ল্যাটের বাসিন্দা মাত্র দুই/তিন মাস আগে এই ফ্ল্যাটে আসে। আসল মালিক সেটা ভাড়া দিয়েছে। সে দিনের সেই পিস্তল হাতে লোকটির নাম বেলায়েত হোসেন। বিদেশ ফেরত সে। কিন্তু দেশে তার কি ইনকাম সেটা ই২ ফ্ল্যাটের ড্রাইভার বলতে পারল না। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় লোকটি নাকি অবিবাহিত। তাহলে ওই প্র্যাগনেন্ট মহিলা কে? না, দিহানের কৌতুহল আরো বেড়ে গেল। কিভাবে কি করা যায়? এই ব্যাপারেও ঐ ড্রাইভারটিই তাকে সাহায্য করতে পারল। কারন বিল্ডিংটির কেয়ারটেকার তার দুরসম্পর্কের ভাই। দিহান তাকেও ডেকে আনল কায়দা করে। বাকী ঘটনা তার কাছেই জানতে পারল।
বেলায়েত হোসেন বিদেশ যাওয়ার আগে টেন্ডারবাজির সাথে জড়িত ছিল। পরে বিভিন্ন ঝামেলা থেকে বাঁচার জন্য দেশ থেকে পালিয়ে যায়। তার বাবাও বিরাট ধনী ব্যাক্তি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে আসে। এরপর সে তার এক বন্ধু শাহাদাতের সাথে ব্যবসা শুরু করে। সে সূত্রেই বন্ধুর বাসায় নিয়মিত যাতায়াত শুরু। ধীরে ধীরে ওই ফ্যামিলির একজন হয়ে উঠে বেলায়েত। এরপর একসময় সেই বন্ধুর বিয়ে হয়। কিন্তু তার কুনজর পরে বন্ধুর বউয়ের (নাসরিন)উপর। আস্তে আস্তে ভাব জমাতে শুরু করে সে। আর বিভিন্ন কাজের ছুতোয় নানাভাবে ব্যস্ত রাখত বন্ধুকে। এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জেলাভিত্তিক শাখা খুলে সেসব দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে দিল। বন্ধুর অনুপস্থিতির সুযোগ নিতে লাগল সে। সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকে। মনের চাহিদা স্বাভাবিক ভাবেই জৈবিক চাহিদায় রুপ নেয়। এভাবে বেশ চলছিল লুকোচুরি গল্প। কিন্তু একসময় প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়ে নাসরিন। চাপ দেয় বেলায়েতকে বিয়ের জন্য। কিন্তু কিছুতেই রাজি হয় না সে। ঘটনা চক্রে একদিন ফোনে তাদের দুইজনের কথাবার্তা শুনে ফেলে শাহাদাত। ব্যস,সংসারটার সেখানেই ইতি ঘটে। উপায়ন্তর না দেখে নাসরিন সরাসরি হাজির হয় বেলায়েতের বাবার কাছে। লোকলজ্জার ভয়ে তিনিই নিজ বাড়িতে না রেখে আলাদা এই ফ্ল্যাট ঠিক করে দেন। মূলতঃ ফ্ল্যাটটি বেলায়েতের বাবারই। আর কেয়ারটেকার তাদের একজন অনেক পুরনো কর্মচারী। তাই সে এতকিছু জানত। আর দারোয়ানকেও বলে রেখেছে এই ফ্ল্যাটের ব্যাপারে যেন কাউকে কিচ্ছু জানতে না দেয়।
কিন্তু এদিকের সবটা জানতে পারলেও ডাস্টবিনের ঐ মৃত বাচ্চাটি কার সেটা জানা যাবে কিভাবে? মনে মনে ভাবছিল দিহান। আর কেয়ারটেকারও কেন তাকে সব এইভাবে বলে দিল? জিজ্ঞেস করাতে আর কিছু না বলে একটা ঠিকানা দিল তাকে। সেখানে যোগাযোগ করতে বলল আর বলে দিল সেখানে গেলে বাকীটা জানতে পারবে। এবং সেই পর্যন্ত যেন সবকিছু গোপন রাখে।
ও মাই গড!ঠিকানাটা কক্সবাজারের। যাবে কিভাবে? বাসা থেকে কোনভাবে যেতে দিবে না। কি করা যায়? এক বন্ধুর মামা থাকে সেখানে। শেষমেশ বেড়াতে যাওয়ার নাম করে ঐ বন্ধুকে সাথে নিয়ে চলে গেল।
ঠিকানা বরাবর গিয়ে দিহান যার দেখা পেল, সে আর কেউ নয়। স্বয়ং নাসরিন। তার মুখেই শুনল বাকী ঘটনা। বেলায়েতের বাবা ফ্ল্যাটতো ঠিক করে দিল। কিন্তু সেভাবে দেখাশুনা কিছুই করতনা। বেলায়েত সব সময় থাকতো না। মাঝে মাঝে আসতো। তাও বেশিরভাগ সময় মাঝরাতে। আর নিয়মিত চাপ দিত বাচ্চা অ্যাবোরশন করার জন্য। রাজি হতনা বলে চলত নির্যাতন। মাঝে মাঝে বেলায়েতের বাবাও ফোন করে হুমকি দিত। সবসময় চোখে চোখে রাখার জন্য একজন কাজের লোকও ছিল। তাই কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারত না। একরকম বন্দীদশাতে পরে গেল সে।
একদিন খেয়াল করে দেখল, পাশের বিল্ডিংয়ের জানলা রয়েছে এই বরাবর। কায়দা করে জানলা খোলা রাখত রাতের বেলা। যাতে ঝগড়া করলে শুনতে পাওয়া যায়। ঠিক তাই হল। বেলায়েত আসতো রাতের বেলা। আর ঝগড়া যেটুকু না হত তার চেয়ে আরো বেশি উসকে দিত লাগল নাসরিন। যাতে কোন না কোনভাবে পাশের বাসার লোকজন বুঝতে পারে বা বিরক্ত হয়ে তাদের কাছে আসার চেষ্টা করে। আর সেই সুযোগে সব জানাবে নাসরিন। কিন্তু একদিন জানতে পারল কেউ একজন আসলেও দারোয়ান ঢুকতে দেয়নি। আর সেটা বেলায়েতকে বলে দিল। বেলায়েতও কায়দা করে দুইদিন কিছু না করে ইচ্ছে করে পর্দা সরিয়ে রেখে পরেরদিন এমনভাবে ঝগড়া করছিল যেন পাশের বাসা থেকে কেউ কিছু বলে। আর পিস্তল নিয়ে অপেক্ষা করছিল। এরপরতো দিহানকে ভয় দেখালো। এই কয়েকদিনের পরিচয়ে নাসরিন কেয়ারটেকারকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করাতে চাইলে মন গলে তার। কিন্তু সাহায্য করতে চাইলেও পারলনা। বাসার কাজের লোকটি ঠিকই বলে দিল। তাই ঠিক করল দিহান আসলে তাকে যেন সব জানায় কেয়ারটেকার। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না। অবস্থা হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে পরের কয়েকদিন চুপচাপ থেকে বেলায়েত পরিস্থিতি বুঝার চেষ্টা করল। আর তার পরে জোর করে ঐ ফ্ল্যাটেই ঘটানো হল অনুশোচনাহীন সেই ঘটনা। পৃথিবীর আলো দেখার আগেই যার আলো নিভিয়ে ফেলা হল। মায়ের কোলের বদলে জায়গা হল ডাস্টবিনে।
আমাদের কাছে এখন দীর্ঘমেয়াদী সুখের চেয়ে শর্টকাট বা এক মুহূর্তের সুখটাই প্রাধান্য পায় বেশি। সাময়িক মোহটাকেই সবাই এখন বড় করে দেখে। যার ফলাফল নিয়ে নাই কোন মাথাব্যথা, নাই কোন অনুশোচনা। মনের চেয়ে শরীরের আহবানটাই সাড়া দেয় বেশি। শুধু নিজের ভাবনাই আসল। সবসময় নিজেকেই ডমিনেন্ট করতে হবে। অন্যের ভালো বা মন্দ লাগার কোন মূল্যই নেই আমাদের কাছে। কি নারী, কি পুরুষ সবাই সবাইকে মানুষ হিসাবে না; নারী, পুরুষ হিসাবে দেখতেই অভ্যস্ত। কোন কাজের সুদূরপ্রসারী প্রতিফলন কি, তা নিয়ে কোনই গভীরতা বোধ নেই। ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে বর্তমানে শিক্ষিত(তথাকথিত পাশ করা)আর অশিক্ষিত লোকের ভাবনা চিন্তার মধ্যে তেমন কোন পার্থক্যই নেই। কোন রকমে কাজটা সেরে ফেলতে পারলেই হয়ে গেল। অনাগত যে অথিতি তাকে নিয়ে একবারো ভাবার কোন ফুরসত নেই। জীবন দর্শনটা আমাদের একেবারেই ছোট্ট একটা গন্ডিতে আবদ্ধ। শুধু খাও, দাও, টাকা ইনকাম কর আর শরীরের সুখ মিটিয়ে নাও। তার বিশাল বড় ব্যপ্তিতে প্রবেশ করতে আমরা চাইওনা অথবা জানিও না। তাই সেখানে অনুশোচনা একেবারেই অর্থহীন। একটা জীবন নষ্ট করার নুন্যতম অনুতাপ বা প্রতিবাদ একদমই অনুপস্থিত। আমরা আসলেই কি চাই? মাত্র কয়েক মিনিটের মোহের ঘোরে থাকা নাকি জীবনের ঐ বিশালতা? আমার আমি কি একমাত্র আমার জন্যই? আমিও কি বিশালতার অংশ নই? শুধুই নিজেকে নিয়ে না ভাবার মধ্যে পরিপূর্ণ সুখ কি হয় না? তবে কি মোহাবিষ্ট এক মুহূর্তের সুখ, সেটাই আসল?
(ছবি গুগল থেকে নেওয়া)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৩২
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×