somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রীক ট্রাজেডীঃ হারকিউলিসের প্রেম কাহিনী

০২ রা এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
গ্রীক পর্বত অলিম্পিয়াসে দেবরাজ জিউস এবং দেবী হেরার ঘরে জন্ম নেয় হারকিউলিস ।


ছোটবেলা থেকেই হারকিউলিস ছিলো বেশ শক্তিশালী , তার বাল্যকালের একমাত্র বন্ধু ছিলো পাখাওয়ালা ঘোড়া পেগাসাস।


সকল দেবতা হারকিউলিসকে খুব পছন্দ করতো , শুধু ব্যাতিক্রম ছিলো জিউসের ভাই হেডস । হেডস জিউসকে ঘৃণা করতো । হেডস জিউসের মত অলিম্পিয়াসের রাজা হতে চেয়েছিলো , অলিম্পিয়াসের রাজা হওয়ার জন্য হেডস তিন ভাগ্যদেবীর (ক্লোতো , ল্যাচেসিস ,এট্রোপোস) সাহায্য চায় ,

সেই তিন ভাগ্যদেবী যারা কিনা অতীত ,বর্তমান এবং ভবিষ্যত জানতেন। কিন্তু ভাগ্যদেবীরা তাকে জানায় ১৮ বছর পরে , টাইটান নামক এক দৈত্য দ্বারা জিউসকে হত্যা করা গেলেও , হারকিউলিস সেই দৈত্যকে হত্যা করবে ।
এর পর হেডস বিকল্প ভাবতে লাগলেন , হেডস হারকিউলিসকে হত্যার জন্য একধরনের বিষ তৈরী করেন , কিন্তু তিনি হারকিউলিসকে সেই বিষ সম্পূর্নরূপে পান করাতে ব্যার্থ্য হন ।
পরবর্তীতে হারকিউলিস , তার পালিত পিতা মাতার (আনফিট্রাইয়ন ও আলকেমিন) কাছে বড় হন।
ছোটবেলা থেকে হারকিউলিস মোটামুটি নিঃসঙ্গ ছিলো , এবং তার শক্তি ছিলো তার অন্যতম সমস্যা , সে যা কিছুই ছুয়ে দেখার চেস্টা করতো সেটাই ভেঙ্গে যেত :(
হারকিউলেস একাকীত্ব এবং অন্যান্য সমস্যা তার পালিত মা বাবা বুঝতে পারে , এবং তাকে সত্য বলে দেয় , তাকে বোঝানো হয় সে দেবতার ঘরে জন্ম নেওয়া এজন্যই সে অন্যদের থেকে ভিন্ন রকম ।
হারকিউলিস তার জন্মের রহস্য উন্মোচনের জন্য সে জিউসের মন্দিরে যায় , এবং সেখানে গিয়ে সে অবাক হয় যখন সে দেখতে পায় জিউসের এবং হেরার মূর্তি জীবিত হয়ে গেছে । এবং জিউস এবং হেরা স্বীকার করে যে তারাই তার আসল পিতামাতা।
হারকিউলিস , তার আসল পিতামাতার কাছে থেকে যেতে চায় , কিন্তু জিউস তাকে বলে “এখানে শুধু দেবতারাই থাকতে পারবে , তুমি যদি কোনদিন নিজেকে এই পৃথিবীর সত্যিকারের বীরে পরিনত করতে পারো , তবেই তুমি এখানে থাকতে পারবে” ।
হারকিউলিস নিজেকে সত্যিকারের বীরে পরিনত করার জন্য তার বাবার কথা অনুযায়ী , বীর তৈরীর শিক্ষক ফিলোকটেসের কাছে যায় ,তার কাছে দীক্ষিত হবার পর জীবনের প্রথম পরীক্ষার জন্য থেবসের দিকে রওনা হয় ।

পথিমধ্যে সে দেখতে পায় অর্ধমানব এবং অর্ধ ঘোড়ার সংমিশ্রনে এক দৈত্য একটি সুন্দরী মেয়ে আক্রমন করছে ।


হারকিউলিস , ঐ দৈত্যটা বধ করে মেয়েটিকে উদ্ধার করে । মেয়েটির নাম ছিলো মেগার । হারকিউলিস মেয়েটির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তার প্রেমে পড়ে যায় ।


এদিকে হেডস (জিউসের ভাই ), হারকিউলিসকে হত্যা করার জন্য একের পর এক দানব পাঠাতে থাকে । হারকিউলিস সবগুলিকে পরাজিত করে , পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী বীরে পরিনত হয় ।



কিন্তু তারপরও সমস্যা থেকে যায় , হারকিউলিস অমরত্ব পায়না , পারেনা অলিম্পিয়াসে গিয়ে তার পিতা মাতার সাথে থাকতে । হারকিউলিস তার পিতাকে জিজ্ঞেস করে , সে এত দৈত্য বধ করার পরেও কেনো অমরতে পাচ্ছেনা জিউস তাকে বলে তুমি যত সাহসী হও না কেনো যতদিন তোমার হৃদয়ে কোন দুর্বলতা থাকবে ,ততদিন তুমি অমরত্ব পাবেনা ।
হারকিউলিস খুজতে থাকে তার আসল দুর্বলতা কোথায় , অবশেষে হারকিউলিস বুঝতে পারে তার একমাত্র দুর্বলতা মেগারা ।
হেডস এই কথা জেনে যায় , এবং বুদ্ধি করে মেগারাকে বন্দী করে ।
অবশেষে মেগারাকে মুক্ত করার জন্য হারকিউলিস একদিনের জন্য তার শক্তি সমর্পন করতে রাজী হয় । এইসময় হেডস সাইক্লোপস নামক এক চোখা দৈত্যকে পাঠায় হারকিউলিসকে হত্যা করার জন্য ,


কিন্তু হারকিউলিস ফিলোকটেসের সহায়তায় সাইক্লোপসকে হত্যা করে , কিন্তু সাইক্লোপ্সের যুদ্ধের সময় মেগারা আহত হয় । ফলে হেডসের সাথে চুক্তি অনুযায়ী হারকিউলিস তার শক্তি ফিরে পায় , কারন শর্ত ছিলো মেগারাকে সম্পূর্ন অক্ষত অবস্থায় ফেরত দিতে হবে।
এদিকে হেডস টাইটান নামক এক দৈত্যকে অলিম্পিয়াসে পাঠায় , দেবতা জিউসকে হত্যা করার জন্য। হারকিউলিস আহত মেগারাকে ফিলোকটেসের কাছে রেখে ,জিউসকে রক্ষা করতে চায় । হারকিউলিস কোন অস্ত্র ছাড়াই টাইটানকে হত্যা করে , তার পিতাকে রক্ষা করে ।
যখন হেডস দেখলো , তার কোন পরিকল্পনা কাজে আসছে না , তখন সে হারকিউলিসকে বললো , মেগারা মারা গেছে , এই কথা শুনে হারকিউলিস ভেঙ্গে পড়ে এবং সেই সাথে মেগারার সাথে সহমরনের ইচ্ছা জানায় এবং একই সাথে মেগারার আত্মা যেখানে থাকবে সেখানে যেন তার আত্মা রাখা হয় সেই দাবী জানায় ।

অবশেষে , ভালোবাসার জন্য এই আত্মাহুতির ইচ্ছার জন্য হারকিউলিস দেবতাদের কাছে সত্যিকারের বীরের মর্যাদা পায়, এবং হারকিউলিস এবং মেগারা অমর হয়ে দুজনে একসাথে পৃথিবীতে বসবাস করতে লাগলো ।



**********************************

গ্রীক ট্রাজেডীঃ ইকারুসের ডানা
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:০৩
৬১টি মন্তব্য ৬১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দাসপ্রথার নিগড় ভেঙে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলে দ্বিগুণ উৎপাদন

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৪:২০

দাসপ্রথার নিগড় ভেঙে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলে দ্বিগুণ উৎপাদন

এআই এর সহায়তায় তৈরি ইমেজ।

প্রায় ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার অপশাসনের সময়টা ছিল এক অলিখিত আধিপত্যবাদের ছায়া। সাধারণ নাগরিকদের এক কাপ চা পান... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন দেশ সেরা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১৯ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৪:২১

সদ্য প্রকাশিত (year 2026) কিউএস র্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 584 তম স্থান অর্জন করে দেশ সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করেছে। । দ্বীতিয় স্থানে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খামেনিকে হত্যা করা হলে ইরানে গৃহযুদ্ধ লেগে যাবে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৭


খামেনেইকে হত্যা করা ইজরায়েলের অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য : স্পষ্ট করলেন নেতানিয়াহুর প্রতিরক্ষামন্ত্রী ।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির মৃত্যু দেশটির জন্য কেবলমাত্র একটি নেতৃত্ব পরিবর্তনের প্রশ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডঃ ইউনুস তারেক রহমান বৈঠকঃ কতটুকু নিশ্চয়তা দিলো সুষ্ঠু, নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক উত্তরণের?

লিখেছেন শেহজাদ আমান, ১৯ শে জুন, ২০২৫ রাত ৯:২৫



তারেক রহমানের সাথে ডঃ ইউনুসের সাম্প্রতিক বৈঠকের ফলাফল নিয়ে বিএনপিসহ দেশের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলগুলোর অনেকেই অনেক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, অনেকেই দারুণ আনন্দিত। অনেকেই, বিশেষ করে যারা বিএনপি করেন, মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাইপাঁশ

লিখেছেন আরোগ্য, ২০ শে জুন, ২০২৫ রাত ২:০৭

মধ্যিরাতে আমি আর আমার গাঁথা। না কবিতা প্রসব করার মত শক্তি নেই। মস্তিষ্কে চাপ দিতে ইচ্ছে করছে না। শব্দগুলো যেন মরুভূমির ধু ধু প্রান্তরে হারিয়ে গেছে। সেগুলো খুঁজে আনার সাধ্যি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×