somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যৌতুকবিরোধী সামাজিক আন্দোলন চাই

৩০ শে মে, ২০০৬ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েক দিন আগের ঘটনা। বাংলাদেশে অবস্থান কালীন কোন এক আত্মীয়ার বিয়ের অনুষ্ঠানেযোগ দেয়ার সুযোগ হয়েছিল। আমি ছিলাম কনে পক্ষের লোক । অনুঠানস্থল ছিল ধানমন্ডীর সোবহানবাগ কমিউনিটি সেন্টার। কনের বাবা সামান্য স্কুল শিক্ষক ("সামান্য" বিশেষণটির জন্য ক্ষমা প্রাথর্ী; অন্যভাবে পড়ে নিবেন "সামান্য বেতনের স্কুল শিক্ষক " অথবা "প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক")। কনে মাশাআল্লাহ লেখাপড়ায়, রূপে-গুনে র্বমান সমাজে এক কথায় প্রসংশনীয়। তথাকথিত যৌতুক দেয়ার মত সামথর্্য আমার ঔ স্কুল শিক্ষক আঙ্কেলের নাই। এটা আমরা আত্মীয় মহল খুব ভালভাবেই জানি । পাত্র আমেরিকান সিটিজেন। ইয়া................ পয়সার মালিক। বাড়ি -গাড়ি, হোমড়া চোমড়া আত্মীয় স্বজন, একেবারে সোনায় সোহাগা। হোক না পাত্র বয়ষ্ক (37+) , টাক্কু; ইন্টার পড়ুয়া পাত্রীর জন্য এমন সুযোগ হাতছাড়া করবে কোন বোকায়!

পাত্রপক্ষ যৌতুক বিরোধী । কারন তারা সমাজপতি , গরীব স্কুল শিক্ষকের কাছে কেন হাত পাতবে। প্রেস্টিস বলে একটা কথা আছে না। তাদের এমন রূপসী -গুনবতী মেয়ে হলেই চলবে। এটা ভলো কথা। তাদের এমন যৌতুক বিরোধী অবস্থানে যে কোন প্রগতিশীলই সাধুবাদ জানাবে।

পাত্রপক্ষের ভিআইপি গেষ্টরা থাকবে বিয়ে অনুষ্ঠানে। আর তাই পাত্রের অভিবাকদের কড়া নির্দেশ কনের বাবা যেন খাওয়ার কোালিটি মেইনটেইন করে এবং পাত্রপক্ষের 450 জনের খাওয়ার ব্যবস্থা করে। পাছে তাদের আবার জাত না যায় গরীব ঘরে বিয়ে করে!

এই যে পাত্র পক্ষ 450 জনের খাওয়ার অ্যারেঞ্জমেন্ট এর শর্ত জুড়ে দিল পাত্রী পক্ষকে এটা কি যৌতুক নয়? নিশ্চয়ই এটা যৌতুকের পযর্ায়ে পড়ে। গত পরশু বাংলাদেশ ত্যাগের সময় বিমানের জানালা দিয়ে যখন সাদা মেঘে ভেসে আসছিলাম কানাডাতে তখনই আমার আঙ্কেলর ধারদেনায় জর্জরিত অভাবী ও করুন চেহারা (কিন্তু রুচিশীল ও হাসিখুশি) আমাকে বারবার কষাঘাত করছিল। হায়! সমাজ আলগা ফুটানি আর কত দেখাবি? 450 জনের ভালো মন্দ খাওয়ার ব্যবস্থা আর কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের আয়োজন যে একজন সামান্য বেতনের শিক্ষকের পক্ষে কতটা দূরুহ তা পাত্র পক্ষকে কে বোঝাবে!

1980 সালের যৌতুক নিরোধ আইনানুযায়ী যৌতুক বলতে, 'বিবাহের একক্ষ কর্তৃক অপরপকে অথবা বিবাহের কোনো একপক্ষের পিতামাতা বা অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক অপরপক্ষকে বিবাহকালে বা বিবাহের আগে বা পরে যেকোনো সময় বিবাহের পণ হিসেবে প্রত্য ক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রদত্ত বা প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ যেকোনো সম্পত্তি বা মূল্যবান জামানতকে বোঝায়।
তবে মুসলিম ব্যক্তিগত আইন বা শরিয়ত মতে প্রদেয় দেনমোহর এর অন্তর্ভুক্ত নয়'। এ সংজ্ঞার ব্যাপক পরিধিতে নগদ অর্থ বা অন্য কোনো সম্পদ, প্রকাশ্যে বা গোপনে এবং বিবাহের সময় বা পরে সর্ব প্রকার লেনদেন যৌতুকের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে। বৈবাহিক ক্ষেত্রে বরপক্ষ ও কনেপক্ষের মধ্যে আর্থিক ও বৈষয়িক লেনদেন বিশ্বের বহু সমাজে প্রচলিত রয়েছে প্রাচীনকাল থেকেই। সাধারণ ভাষায় এটিই আমাদের সর্বনাশ-যৌতুক প্রথা। এই ঘুণেধরা সমাজে নারীর সম্মান, সামাজিক প্রতিষ্ঠা ও আত্মউন্নতি লাভে বড়ো ধরনের প্রতিবন্ধক হচ্ছে যৌতুক কুপ্রথাটি। অমানবিক এ প্রথাটির শেকড় সমাজের গভীরে প্রোথিত বলেই এর পূর্ণাঙ্গ উচ্ছেদ কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে সর্ব ঐক্যের কাছে যতো কঠিনই হোক না কেন তা নিরোধ কিংবা প্রতিরোধ করা তেমন কোনো ব্যাপার নয়।

এই বিষয়ে আমার আকুল আবেদন, আমরা যারা সমাজ সচেতন বলে দাবি করি তাদের কাছে, তারা যেন স্ব-স্ব অবস্থান থেকে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করি আজ এবং এখন থেকেই। আমাদের মনে রাখতে হবে 'সমাজের সকলে কাজ করে না, করতে হয় না, প্রথমে 1/2 জনেই আরম্ভ করে; পরবতর্ী সময়ে অন্যসব সৃষ্টিশীল মানুষরা এ পতাকাতলে সমবেত হয়ে কাজের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করে কাঙ্তি লক্ষ্যে পেঁৗছে দেয়। সুতরাং আমরা এখন থেকে এই যৌতুকপ্রথার ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পেতে জোরালো আন্দোলন শুরু করবো ব্যক্তি-পরিবার-সমাজ তথা সমগ্র দেশ জুড়ে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×