somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্য রকম মিনিগল্প৬

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রুশি >Hi
নীল >hi
>কেমন আছেন ?
>চিনি পানির মিশ্রণের ন্যায় ।
আপনি ?
>ভালই ।কিন্তু চিনি পানির মত
মানে !!
>শরবতের মাঝে চিনি আর পানি যেমন
একত্রে থাকে আমিও তেমন ভাল
খারাপ মিলিয়ে আছি ।
বুঝেছেন ?
>আসলে এত কঠিন কথা আমি হজম
করতে পারি না ।
>কি করলে কথাটি হজম
হবে আপনার !
>হজম ক্যান্ডি খাওয়ালে..
>কিন্তু আমার কাছে তো এখন হজম
ক্যান্ডি নেই ।একটা সেন্টার
ফ্রুট
আর একটা মেন্টস আছে..
>তাহলে তাই চলবে ।দেন
খেয়ে দেখি হজম হয় কি না..
>তা কি করে দিব আপনাকে !
>ওমা সে আর এমন কি কঠিন কাজ ?
আপনি ছবি তুলে পাঠিয়ে দিন ,আমি ডাউনলোড
করে খেয়ে নিচ্ছি...
>হা হা হা..আচ্ছা দিচ্ছি..
ছবি তুলে পাঠানোর পর..
নীল >পেয়েছেন !
রুশি >জি পেয়েছি ।
ধন্যবাদ..
>হুমম..
>কঠিন একটা কথাকে হজম
করে দিলেন ,সেই
খুশীতে আপনাকে তো কিছু
খাওয়ানো দরকার..
>কি খাওয়াবেন ?
>আইসক্রিম খাচ্ছি খাবেন ?
>এই ঠান্ডায় আইসক্রিম !
>হুম খেলে দেখবেন কত মজা..
>আচ্ছা দিন ,খেয়ে দেখি..
ছবিটা পাওয়ার পর..
নীল >ইয়েচ্ছি ,আপনার
খাওয়াটা কি করে খাবো..
রুশি >আসলে আমার কাছে একটাই
ছিল ।
সমস্যা নেই ,পানিতে ধুয়ে খেয়ে ফেলুন..
.
.
বাসে বসে বসে স্মৃতির
পাতাগুলোর
উপর দিয়ে হেটে যাচ্ছে নীল ।
রুশির সাথে তার প্রথম পরিচয়
হয়েছিল এভাবেই ।
নীল যখন
ফেসবুকের নিউজ ফিড ঘাটছিল
তখন ফেসবুকে ফাইন্ড ফ্রেন্ডস এ
একটা আইডির নাম দেখে আটকে যায়
তার চোখ আটকে যায়
।নামটা ছিল ,'আরুশি জারা রাইজা (রুশি)
'[রুশি নামের অর্থ তারা...]
.
নীল জাস্ট নামের
প্রতি আকষর্ণেই রিকুয়েস্ট পাঠায়
রুশিকে । রুশিও
সাথে সাথে রিকুয়েস্টটি এক্সেপ্ট
করে ।
রুশিই প্রথম মেসেজ পাঠায় ।
তাদের প্রথম চ্যাট
টি তো উপরে দেওয়ায় আছে...
.
রুশি খুবই চটপটে আর নীল
গম্ভীর প্রজাতির ছেলে ।কিন্তু
অনুকূল পরিবেশে আকাশও অনেক
সময় নানা ধরনের দুষ্টুমি করতো..
.
একটা কথা প্রচলিত
আছে যে ফেসবুকে খুব সহজেই
কাউকে পটানো যায় কেননা সকাল
বিকাল সবসময় যদি কেউ আপনার
খোঁজ নেয় এমনিতেই আপনি তার
প্রতি অনেকাংশে দূর্বল
হয়ে উঠবেন...
.
চ্যাটিং করতে করতে একসময় নীল
এবং রুশির মাঝে খুব ভাল
একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে ।সেই
সম্পর্কটা একেবারে যে ভালবাসার
সম্পর্ক
তা বলা যাবে না ,তবে এটা ঠিক
যে তাদের সম্পর্কটা দশ
পাঁচটা বন্ধুত্বের সম্পর্কের মত
ছিল
না ।
.
প্রতিদিনকার রুটিন অনুযায়ী নীল
একদিন
ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুকে লগইন
করে দেখলো একটা মেসেজ ।
সে জানে মেসেজটা কে দিয়েছে কারণ
প্রতিদিনই রুশি তাকে গুড
মর্নিং জানায় ।কিন্তু নীল যখন
মেসেজটা সিন করলো তখন
দেখলো একটা মনুষ্য পরীর
ছবি পাঠিয়েছে রুশি।মোবাইলের
স্ক্রিন থেকে একটি মেয়ে তার
দিকে ডাগর ডাগর
চোখে তাকিয়ে আছে এবং বলছে ,"এই
পাজি ,এভাবে হা করে দেখার
কি আছে !আমি আকাশের তারা..."
>ওই এটা কার ছবি পাঠিয়েছো...
>কেন যে পাঠিয়েছে তার ছবি...
>তুমি এত্ত সুন্দর...
>Thanks
>আরে শেষ করতে দাও ।তুমি এত্ত
সুন্দর ,দেখতে ঠিক চিড়িয়াখানার
চিরচেনা সেই
বান্দর.....
>আমি বাঁদড় না ।তুমি বাঁদড়.....
>তাহলে তুমি কি !
>বাঁদড়ের বাঁদড়নী...
>মানে !
>মানে মানে মান কচু ,
যা খেলে গলা ধরে..
.
.
¤¤অবরোধের
মধ্যে ঢাকা কুমিল্লার নতুন
হাইওয়েতে নীল দের
Green Line পরিবহনের বাসটি সাঁই সাঁই
করে ছুটে চলেছে ঢাকা অভিমুখে ।
সেই
বাসের B2 সিটে বসে আছে নীল ...
.
এই প্রথম
সে রুশিকে দেখতে যাচ্ছে ।
কিন্তু
তারপরেও নীলের মুখে হাসি নেই ।
চোখেমুখে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা...
.
.
নীল আর রুশির দশ পনের দিনের
সুখের ভেলাটা গতকাল রাতেই
ডুবে যায় ।কারণ সুখ জিনিসটাই
ক্ষণস্থায়ী...
তখন রাত বাজে প্রায় আড়াইটা ।
ফেসবুক থেকে রুশির
সাথে কথা বলে যখনই শুতে যাবে তখনই
নীলের ফোনে সেট করা মেসেজ
টোন টি বেজে ওঠে...
নীল নিশ্চিত যে রুশির ই মেসেজ
দিয়েছে ।কারণ রুশিএকটু
আগে নীলের নাম্বার নিয়েছিল...
.
ফোনের স্লাইড লক
খুলে মেসেজটা পড়ছে নীল আর সেই
সাথে নীলের চোখের জলগুলো টপটপ
করে ঝরে পড়ছে...
চলুন আমরাও পড়ি সেই মেসেজটা...
""কথাগুলো শোনার পর তোমার
কি অবস্থা হবে তা আমি জানি না ।
কিন্তু কথাগুলো সত্যি ।প্রথমেই
বলি আমি তোমাকে খুব
ভালবাসি নীল ,খুব ভালবাসি ।
তবে আমাদের এই
ভালবাসাটা কোনদিনই
পূর্ণতা পাবে না ।কারণ
আমি যে মৃত্যু পথযাত্রী ।মরণ
আমাকে ডাকছে ।হয়ত কিছুক্ষণের
মধ্যে আমি সত্যিই আকাশের
তারা হয়ে যাবো...ডাক্তার
আমাকে ৬০দিনের টাইম দিয়েছিল ।
আমি তখনই
ফেসবুকে আইডি খুলে মৃত্যুর ক্ষণ
গুনছিলাম ।আর তখনই বড় অবেলায়
পেলাম তোমাকে । বিশ্বাস কর
নীল ,আমি তোমাকে ভালবাসতে চাই
নি কিন্তু কিভাবে কিভাবে যেন
আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলছি ।
আমাকে ক্ষমা করে দিও ।আমার
না তোমাকে খুব
দেখতে ইচ্ছে করছে ।কিন্তু
জানি এটা সম্ভব না ।ভাল থেকো ।
সুখে থেকো ।আকাশের তারার
কথা মনে রেখ...""
.
মেসেজটা পড়া শেষ করেই
রুশিকে ফোন দেয় সে ।কিন্তু
ফোন বন্ধ ।তৎক্ষণাৎ ফেসবুক
থেকে রুশির ছোট কাকাত ভাই এর নাম্বার
নিয়ে জানতে পারে রুশিকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হচ্ছে ।
ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই
ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয় সে...
.
.
দুটি পাখি ঝগড়া করুক আর
গলাগলি ধরে উড়ুক না কেন পাখির মল
গুলো কিন্তু সাধারণ মানুষের উপরই
পড়ে...এটাই নিয়ম আর এটাই বাস্তবতা...
.
নীলদের বাসটা যখনই ঢাকায় প্রবেশ
করছে তখনই অবরোধকারীদের
ছোড়া পেট্রোল বোমায় বাসে আগুন
ধরে যায় ।মোট পয়ত্রিশ জন অগ্নিদগ্ধ
হয় তার মধ্যে নীল ও আছে ।তবে তার
অবস্থা খুবই মারাত্মক ।শরীরের
আশি শতাংশ পুড়ে গিয়েছে ।
তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হল...
.
রুশির কেবিনে যখন
রুশি শেষবারের মত চোখটা বন্ধ
করছে তখন হয়ত সে নীল কে দেখেছে ।
কারণ নীল কে তার কেবিনের
সামনে দিয়েই নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।
কিন্তু নীল কে দেখে চেনার উপায়
নেই যে এটা নীল ।আর রুশিও তখন
বোঝার সাধ্য নেই...
.
দু মিনিটের মধ্যেই রুশির মৃত্যু
হয় আর বার্ন ইউনিটে কিছুক্ষণ পর
মারা গেল নীল ও । নীল আর রুশির
যে সম্পর্ক তা ছিল অদৃশ্য বন্ধন ।
কারণ রুশি যে নীল আকাশের তারা ।
তারা দুজন যে এক ও অভিন্ন সত্তা...
.
.
.
#POST_১৪
.
__________ #নাউশীন_রুম্পা_অাফরিন ®
#AlwaYs_RocKzzz
.
__________২৭/০১/২০১৫ইং
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×