somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধন্যবাদ, ফুয়াদ ভাই.... আমাদেরকে গালি দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই লেখাটা লিখব কি লিখবনা অনেকক্ষন ভেবেছি। জানি লিখাটা পোস্ট করলে আমার জন্ম, আমার বাপ-মার জন্ম এই গুলি নিয়া প্রশ্ন চলে আসবে। রাজাকার, দেশদ্রোহী, নাস্তিক(আজকালকার কমন গালি), বেজন্মা... ইত্যাদি ইত্যাদি ভদ্র গালির পাশা-পাশি খাটি বাংলায় আমাকে গালি খেতে হতে পারে। এইটাই স্বাভাবিক। কারন, অনলাইনে আমরা ইচ এন্ড এভ্রিওয়ান হিমালয় পর্বত কিসিমের দেশপ্রেমিক। আর অনলাইন এখন ফুয়াদকে মন খুলে গালি দিয়ে নিজের দেশপ্রেম জাহির করছে। তাই সুস্থ মস্তিষ্কে ফুয়াদকে সাপোর্ট করে আমি কিছু গালি আশা করব না সেটাতো ঠিক না, তাইনা ?

চলেন দেখে আসি কিছু ফেসবুকিয়-অনলাইন দেশপ্রেমঃ



বাহ!আপনি, আমি ,সমগ্র অনলাইনবাসি তো চমৎকার মানুষ, আদর্শ দেশপ্রেমিক। বাংলাদেশ নিয়া কেউ কিছু লিখলেই ঝাপায়া পড়ি। কত্তবড় সাহস দেশ “ফাক” করবে? আমাদের মত সাধু পুরুষ, মহান দেশপ্রেমিক থাকতে এইটাকি পসিবল নাকি?

আচ্ছা আমরা কি অনলাইনে এতই সাধু নাকি? তাইলে নিচের নোংরামি গুলো কে করে? গুগল নিশ্চিত আমাদের শত্রু, নাইলে এগুলি কি দেখায়!



এর দায়ভার কিভাবে অস্বীকার করতে পারবেন? মোস্ট ইম্পরটেন্টলি, কাকে গালি দেয়া যায় বলেন তো ? আমাদের তো গালি দেয়ার জন্য একটা ফিগার লাগবে তাই না ? ফুয়াদ একলা আর কত গালি খাবে? শেষ পর্যন্ত আর আপনাদের গালি আর নিতে পারে নাই , পোস্ট সরায়া দিছে? এইবার খুশি? হয়ত আমাদের গালির জন্যেই রাগের মাথায় দেশ ছেড়ে চলে যাবার কথাটা সিরিয়াসলি নিয়ে নেবে বেচারা।

ভাই গালি দিতে ইচ্ছা হইলে দিয়েন প্রব্লেম নাই, কিন্তু তার আগে একটু মনযোগ দেন, বুঝার চেষ্টা করেন আমার পয়েন্টটা। নিচের প্রশ্ন গুলি দেখেন কাইন্ডলি। প্রশ্ন তিনটা হলেও উত্তর অনলি একটা।

১। বাংলাদেশকে নিয়া সবচেয়ে খারাপ কথা কারা বলে?

২। বিদেশের কাছে এদেশের ভাবমূর্তি কারা বেশি ছোট করে?

৩। কোন দেশি মানুষ বিদেশে যাওয়ার সবচেয়ে বেশি স্বপ্ন দেখে? এবং কোন দেশি মানুষ বিদেশে গেলে মাতৃভূমির টান অবজ্ঞা করে সেখানেই মাটি কামড়ে পড়ে থাকে?

উত্তরঃ আমরা, যারা জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক।

দয়া করে এই উত্তরের জন্য আমার কাছে লিঙ্ক বা তথ্যসূত্র চাইবেন না। আমি দিতে পারব না।

দেয়ার দরকার আছে বলেও মনে করিনা। কারন, বাসে যাতায়াত করার সময় একদিন হলেও আপনার কানে ভেসে এসেছে, “এইজন্যেই এই চুলের দেশের কোন উন্নতি হয় না। সব শালা মাদারচো* খালি নিজেরটা বুঝে”

অথবা, কদিন আগের থার্টি ফার্স্ট নাইটে পার্টিতে কাউকে বলতে শোনেন নাই, “মামা দুইটা বোতল জাস্ট কিন্না ব্যাগে ঢুকাইলাম আর ঘাড় ঘুরাইয়া দেখি পুলিশ। টাকা তো দিতে হইছেই বোতল গুলাও লয়া গেছে। এমন একটা *দার দেশে থাকি মন্ত্রি-এম্পিরা মদ খাইয়া টিভিতে ভাষন দিয়া যায় আর আমাগো হাতে বিড়ি দেখলেই পাড়া-প্রতিবেশীর খাড়ায়া যায়।“

অথবা, ধানমন্ডি বসে আছেন গার্লফ্রেন্ড নিয়ে এমন সময় বেদে মেয়েগুলি এসে জোড় করে চাদা নিয়ে যাওয়াতে গার্লফ্রেন্ডের বিরক্তি প্রকাশ কখনো শোনেন নি? “ধুর! মানুষ থাকে এই দেশে।” আপনি তখন সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বলেন নি? “সোনামনি, মাইন্ড কইরো না। জানোই তো এই দেশের প্রধান অকুপেশন ভিক্ষাবৃত্তি... সব শালা ভিক্ষুক! ... জানি এখন অস্বীকার করবেন। বলবেন, এই সব পারসোনাল বেপার ক্যান লিখতেছি! কারন, ইটস গেটিং মোর এন্ড মোর পারসোনাল। ইটস টাইম টু থ্রো এওয়ে আওয়ার ফেক-এনোনিমাস-দেশপ্রেমিক-সুশীল বুলশিট।

অস্বীকার করবেন একটা বারও কি আপনার সামনে হতাশায়-গাজা-ধরা বেকার বড় ভাই আক্ষেপ করেনি? “এই দেশের নাম বাংলাদেশ না রাইখা ফরেনদেশ রাখলে মনে হয় ভালো হইতরে। ঘুষের টাকা জোগাড় করতে একটা কিডনি বেইচা দেয়ার কথা মাথায় আসত না আর”। তাকে ওয়ার্কিং ভিসায় মালয়শিয়া যাওয়ার প্লানটা কিন্তু আপনারই দেয়া। ভুলে যাই, আমরা অনলাইনে আসলে সব ভুলে যাই।

আপনি হরতালের ভিতরে জান হাতে করে বাসা-অফিস-বাসা করেন আর বাসায় এসে ফেবুতে পোস্ট দেন, “সাত-সমূদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে বাসায় আসলাম... বউয়ের মুখ দেখে সব কষ্ট দূর হয়ে গেল”। কোনদিন চিন্তা করছেন পিকেটারদের ছোড়া ইটটা যদি আল্লাহ না করুক তার সুন্দর মুখটা বিকৃত করে দেয় তাইলে আপনি হয়ত সেদিন ফেসবুকে বাংলাদেশ বা বাংলাদেশিদের নিয়ে কিছু লিখবেন না কিন্তু হাজার টাকা বাজি যে ডাক্তার বন্ধুটা আপনার বউয়ের চিকিৎসা করছিলো তাকে জিজ্ঞেস করলেই পাওয়া যাবে কয়বার আপনি “দুচলাম না এই চুলের দেশ” বলেছেন।

আমি জানি আপনি আবার অস্বীকার করবেন। কারন, আমরাতো এমনি তাইনা? “বাং-গা-লি কুনুদিন নিজের দোষ স্বীকার করছে নাকি, এই দেশে মানুষ সৎ থাকে খালি সুযোগ না পাইলে” এই কথাটা নিশ্চয় পরিচিত লাগছে তাইনা? আপনি কি শিওর কোন দুষ্টুমি করে ধরা খাবার পরে আপনার পিতা অথবা স্কুলের স্যারের কাছে এই কথাটা শোনেন নাই?? নাকি আপনার নয় বছর পরে বিয়ে করতে দেশে ফেরা মামার মুখে শুনেছেন?? না, আপনি এবারো অস্বীকার করবেন। স্বীকার করলেতো আমাদের ডুয়েল স্ট্যান্ডার্ড ধরা খেয়ে যাবে। মুখোশ খুলে যাবে। দেশপ্রেমের মুখোশ।


আচ্ছা এখন আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাবেন কাইন্ডলি? এইযে আমরা ভণ্ডামি-সুশীলতা-দেশপ্রেমের মুখোশ পড়ে থাকি এইটাতে কি লাভ? দেশপ্রেম দেখানোর জন্যে আরেক জনের “ফাকের” দিকে তাকায়া থাকি ক্যান আমরা? ফুয়াদের “Fuck this bloody hell hole” আমাদের গায়ে আগুন জ্বেলে দেয়, ওরে গালি দেয়া আমাদের পবিত্র অনলাইন অ্যাভাটার এর জন্য ফরজে আইন হয়ে যায়। সত্যিই কি তাই ?

একবারো কি গালি দেয়ার আগে বেচারার এই লাইনের শেষের আশ্চর্যবোধক চিহ্নটায় কতটুকু হতাশা, আক্ষেপ আর দুঃখমেশানো ছিলো তা ভাবার চেষ্টা আপনার ছিলোনা ? “We were just out doing groceries!” . অথবা, “This place is beyond repair. I am done here” এই লাইনটা লিখার পিছনে কোন স্বপ্নভঙ্গের ছায়া, আশাহত মানুষের দীর্ঘশ্বাস অনুভব করার চেষ্টা করবেন কি একটু?


আর ভাই একটা সামান্য মানুষের কথায় আমাদের দেশপ্রেম যদি একটু বেড়ে যায় তাহলে তো আমাদেরই লাভ তাইনা। স্টপ বিয়িং এ অনলাইন হিপোক্রিট এন্ড স্টপ ফেকিং ইউর সিজনাল লাভ ফর দিস কান্ট্রি। এই বাংলাদেশ একাত্তরে লাখো শহীদের পবিত্র রক্তে জন্মানো। এই দেশ তার প্রেমিক চিনে, এই রকম সুশীল দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ োদেনা।


পুনশ্চঃ পোস্ট উপরে শেষ, এই অংশ ইগ্নোরেবল।

আমি বাংলাদেশি। বিশ্বাস করেন ভাই, আমি একজন গর্বিত বাংলাদেশি। সাকিব আর মুশফিকের সাথে সাথে সেদিন আমিও কাঁদছিলাম, আশেপাশে কে আছে, কেউ দেখছে কিনা কিছুই কেয়ার করি নাই। হাউমাউ করে কাঁদছিলাম।


কোন বিদেশী বন্ধু যখন নাক সিটকায়, অবজ্ঞা করে মাথায় আগুন ধরে যায়। কাউরে কোনদিন ছাইড়া কথা বলি নাই। কতদিন অনলাইনে অযথা তর্ক করছি আল্লামালুম।

I am not another hypocrite, neither another brick in the wall. And trust me, the honorable freedom fighters were not any “random online hypocrite”; not a single one of them. Or, those who really love Bangladesh and attend the responsibilities or duties towards Bangladesh can’t be hypocrite.

Yeah there were some hypocrites in ’71 too, most of them resurfaced after ’71 so damn rich, pretending they had found gold mine during the liberation war; some of them became Razakar. And I hate them. I always hated Razakars and now started to hate hypocrites. I fucking hate them. I really do.



সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:২৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×