অনেক উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা সেখানে পরিবার প্রথা অথবা সমাজ বলতে আর কিছুই বাকী নেই, যেমন জার্মানি, ফ্রান্স আর যুক্তরাজ্য।
আর আমেরিকাও সেই সমাজ-পরিবার প্রথা থেকে উঠে আসতে চাইছে।
আসলে দিন যতই যাচ্ছে, আমরা আগের চেয়ে বেশী প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পরছি, তাই অন্যের উপর আর আমরা নির্ভরশীল থাকতে চাচ্ছি না আর সেটার দরকারও পড়ছে না।
যেমন ১৫ বৎসর আগের কথা চিন্তা করুন, যখন মোবাইল সহজলভ্য ছিল না, যেমন: যে প্রতিবেশীর বাসায় T&T লাইন ছিল, সপ্তাহে একবার হলে তার বাসায় যাওয়ার প্রয়োজন হত, সেই ফাকেঁ খোজ খবরও নেওয়া হয়ে যেত, অনেক সময় প্রতিবেশীর সাথে রক্তের সম্পর্কের চেয়ে বেশী ছিল।
আর এখন সবাই স্বনির্ভর, পাশের বাসার কে থাকে সেটাও কোন খবর নাই।
একপ্রকার কর্পোরেট হয়ে পড়েছি,
এই রকম আরো অনেক উদাহরন দেওয়া যাবে।
এখনতো আমাদের এমন একটা অবস্থা যে, নিজের ফ্যামিলির মানুষেরই খোজ-খবর ভাল করে বলতে পারবে না, এমন অনেক পরিবার আছে, হয়তো একই ছাদের নিচে থাকে কিন্তু কারও সাথেই ভাল সম্পর্ক নেই।
উন্নত ও ধনীগুলো বলে তারা নাকী আমাদের থেকে অনেক বেশী সভ্য আর স্বাধীন।
ওদের সবগুলো কথার মধ্যে যুক্তি আছে।
আপনার হয়তো মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে কিছুদিন আগেইতো আমেরিকায় সমকামী বিবাহ বৈধ করলো, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে দেশ
জুড়ে এটা বৈধতা পেল।
কিন্তু কিভাবে সম্ভব, এটার পক্ষে এত জনমত কিভাবে?
মূল কথায় ফিরে আসি যে, আমরা অতিমাত্রায় স্বনির্ভর হওয়ার ফলে দিন দিন একা হয়ে যাচ্ছি,
আবার পরিবারও থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছি, আর সমাজতো অনেক দূরের কথা।
এর ফলে আমরা এক প্রকার অবচেতন মনেই বন্ধু খুজতে আর একাকীত্ব দূর করতে সামাজিক সাইটগুলোর দিকে যাচ্ছি।
আর আপনার মত যে মানুষটা অপর প্রান্তে আপনার মত একাকীত্বের সাথে লড়াই করছে সেও ধরুন আপনাকে খুজে পেয়েছে বন্ধু হিসাবে, হয়তো দেখা যাবে সে আর আপনি একই লিঙ্গের।
আর এই রকম ঘটনা বাইরের দেশগুলো এতটাই কমন হয়ে পড়েছে যে, শুধু সামাজিক সাইট না, বাস্তব জীবনে ক্যাম্পাস কিংবা কর্মস্থলের বন্ধু অথবা কলিকের সাথে এই রকম অসম সম্পর্ক গড়ে উঠছে।
কিন্তু শুধুমাত্র আইনে বাধা থাকার কারনে এই সম্পর্কগুলো প্রকাশ পাচ্ছিলো না।
***তাই এতে ব্যক্তি স্বাধীনতা চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছিল(বারাক ওবামার মতে)।
তাই কোন ছেলে যদি কোন ছেলেকে বিয়ে করে, সেখানে বাধা দেওয়ার কেউই থাকবে না, কারন সে পরিবারে থাকে না, আর সমাজের কেউই তাকে চিনে না।
আর চিনলেই বা কি, আপনি আপনার মতন আমি আমার মতন,
হয়তো আর কিছুদিন পর পরীক্ষাগারে কৃত্রিম জরায়ু ভাড়া পাওয়া যাবে, যেখানে মানুষ জন্ম দেওয়া হবে, আর সমলিঙ্গের মানুষই সেগুলো ভাড়া করে তাদের সন্তানের চাহিদা মিটাবে।
তবে এত কিছুর জন্য সোশাল সাইটগুলোকে দায়ী করলে ভুল হবে, কারন বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এটার কারনে দূরের সম্পর্কগুলো এছাড়া কর্মস্থলের মানুষের সম্পর্কে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রক্ষা হচ্ছে, তার ব্যাক্তিত্ব বুঝা যাচ্ছে।
***উইকিলিক্সের একটা তথ্য থেকে জানতে পারলাম যে ২০১৪ সালে এদেশে সমকামী বৈধ করার জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো দেশের কয়েকটি এনজিও সাহায্য চেয়েছিল এবং তারা এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তবে আশার কথা হল এখনো কোন মুসলিম দেশ এর কোন প্রকার বৈধতা দেয় নি।
**তবে আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে নীরবে এইটা নিয়ে একটা আন্দোলন চললে, আপনি যদি গুগলে সার্চ করতে পারেন, তাহলে দেখবেন সেখানের বেশীর ভাগ অনলাইন পত্রিকাগুলো সরাসরি না লিখলেও......।
তবে এইটা ঠিক যে আমরা যদি সঠিকভাবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলি, তাহলে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারবো, নতুবা একটা সময় আমরাও..........।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ ভোর ৫:১৭