somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণজাগরণ মঞ্চ থেকে অনেকেই কোটিপতি হয়েছেন: মামা

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




শাহবাগকে সামনে রেখে অনেকেরই ভাগ্য বদলে গেছে। অনেকে কোটিপতি হয়েছেন। এই শাহবাগের জন্ম দিলাম আমি। জীবন বাজি রেখে সুইডেন থেকে এসে সাক্ষী দিলাম। কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই, সব যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই। একসময় দেখলাম, তথাকথিত এই জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র এবং এই নাসির উদ্দিন ইউসুফরা আমাকেই বললো- এই মঞ্চ থেকে চলে যান। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এরা আদালতে সাক্ষী হয় নাই। আপনারা তো 'সোনার চান পিতলা ঘুঘু' রাজধানীর বুকে থাকেন। আমি কিছু পাওয়ার জন্য আসিনি, কিছু দেওয়ার জন্য এসেছি। বঙ্গবন্ধু যেমন দলের জন্য তার জীবন-যৌবন শেষ করে গেছেন, জীবনে কখনো ভোগ করেন নাই, আমি তার সেই রাজনৈতিক শিষ্য। সম্প্রতি এক বেসরকারি টেলিভিশন সাক্ষাতকারে মুক্তিযুদ্ধের সময় 'মামা বাহিনী'র প্রধান কমান্ডার সৈয়দ শহীদুল হক মামা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শাহবাগ যখন জেগে উঠলো তখন লাখো লাখো মানুষের ঢল। তখন আমার কণ্ঠ ছিল প্রতিটি মানুষের কাছে হৃদয়ে দাগ কাটার মতো। অনেক লোক মা-বাবা-ভাইবোনকে নিয়ে আসলো। হাজার হাজার পরিবার তাদের প্রেমে আমাকে বন্দি করে রাখলো। তাদের ভালোবাসা আমি পেয়েছি। অনেকে আসলো- মামার সঙ্গে ছবি তুলব। কিন্তু, এক পর্যায়ে দুঃখের সাথে বলতে হয়, 'আমি যখন জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু' বলি এই শাহবাগ চত্বরে অনেকেই তখন নাখোশ হয়। আমাকে অনেকেই বলতো 'জয় বঙ্গবন্ধু' বলতে পারবেন না। আমি বলি কেন বলবো না?

তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, শাহবাগকে সামনে রেখে আপনারা কামায়ে গেলেন। এমন কিছু কর্মকাণ্ড করলেন যে, জাতীয় নেতাদের বোতল ছুঁড়ে মারলেন। আমি মুক্তিযোদ্ধা। আমার নেতৃত্বে মিরপুর-মোহাম্মদপুর মুক্ত হয়েছে। বুদ্ধিজীবীদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছি। ট্রাইব্যুনালে গিয়ে এসব কথা বলেছি এবং রায় প্রত্যাখ্যান করে এসেছি শাহবাগ চত্বরে। লাখো মানুষ জড়ো হয়েছিল শাহবাগে। আজ সেই শাহবাগ ফাঁকা। কেন ফাঁকা হয়েছে সেটা আমি নতুন করে কিছু বলবো না। আমার কাছে অনেকে কেঁদেছে। একজন রিটায়ার্ড কর্নেল বললেন, সারাক্ষণ মামাকে দেখেছি টেলিভিশনে, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে। আজ তার সাহসী ভূমিকার জন্য তাকে সাইড করে রাখা হয়েছে। আজ নিশ্চয়ই এরা জামায়াত-শিবিরের অর্থ খেয়েছে। মামাকে আটকাও। নাসির উদ্দিন ইউসুফের বড় ভয় মামা কোন সময় কী বলে দেয়। শাহবাগের ছেলেমেয়েরা এখনো ফোন করে আমাকে ডাকে, মামা আসেন। আমি বলেছি, যে থুথু আমি ফেলি, সে থুথু আমি চাটি না।

শহিদুল হক মামা বলেন, আমি রাজাকার, আলবদর, আল শামস এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যারা মসনদে আরোহন করেছিল, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিল, তার হত্যার বিচার আমি নেবোই। এই কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন ফাঁসির রায় হয়েছে। কখন ফাঁসিতে ঝুলবে আমি সেই দিনটির প্রতীক্ষায় আছি। আল্লাহ পরিষ্কার বলেছেন, আমি অত্যাচারীদের পছন্দ করি না। একাত্তরের দালালরা জায়নামাজ বিছিয়ে বলেছিল, পাকিস্তানকে রক্ষা করো। আল্লাহ তাদের হেফাজত করে নাই। পৃথিবীতে আল্লাহ ইনসাফের জন্য ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন, এই রগকাটা-গলাকাটা জামায়াতের জন্য না। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জনতার কাছে ক্ষমা চান, আরেকটিবার সুযোগ চান, বলুন আশা আকাঙ্ক্ষা আমি পূরণ করবো। এই জামায়াত-শিবিরের কবর বাংলার মাটিতে হতেই হবে।

মামা বলেন, একদল মানুষ শেয়ারবাজার লুণ্ঠন করেছে, এই নিরীহ মানুষের অর্থ লুটে নিয়েছে, অনেকে পথের ফকির হয়েছে, আত্মহত্যা করেছে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) তাদের বিচার করুন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেন। তা না হলে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া কঠিন হয়ে যাবে। শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমার ভয় হচ্ছে। আমি চাই না ২০০১-এর মতো এই ধরনের ফলাফল আবার এই দেশে ঘটুক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস হয়ে যাক। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। 'জয় বাংলা' স্লোগান ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান, 'জয় বঙ্গবন্ধু' ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। তারপর একটা মূল্যবান স্লোগান ছিল, ধর্মনিরেপেক্ষ বাংলাদেশ। সব ধর্মের মানুষ এই দেশের জন্য লড়াই করেছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের জন্য নয়। আমি ইসলাম বিশ্বাস করি, আল্লাহ রাসুলে বিশ্বাস করি। আমি আস্তিক, নাস্তিক না।

মুক্তিযুদ্ধের সময় 'মামা বাহিনী'র প্রধান কমান্ডার এই সৈয়দ শহীদুল হক মামা ১৯৮৬ সালে সপরিবারে সুইডেন চলে যান। বর্তমানে সেখানেই বাস করছেন। অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও কাদের মোল্লার বিচারের সাক্ষ্য দিতে তিনি বাংলাদেশে আসেন। কিন্তু, কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পর শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তবে হঠাৎ করেই এই আন্দোলন থেকে নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন তিনি।
http://www.bd-pratidin.com/2013/09/24/18109

- See more at: Click This Link
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×