প্রতিদিনের মতো আজও লেগুনাতে করে অফিসে যাচ্ছিলাম। ভদ্রমহিলা ঠিক আমার উল্টোদিকের সিটে বসা ছিলেন। আমি লেগুনার ফাঁকা জায়গা দিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে আছি কোন জ্যাম আছে কিনা দেখার জন্য। কিছুদুর সামনেই দেখলাম লোকের জটলা। লেগুনা আরেকটু সামনের দিকে এগুতেই হেলপার বললো এ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। প্রতিদিন "সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু" এই সংবাদটি শুনতে শুনতে আমিও যেন অনুভুতিহীন হয়ে গিয়েছিলাম। তাই হেলপারের এই কথাটি শুনে প্রথমে কষ্ট পেয়েছিলাম কিন্তু আশ্চর্য হয়তো হয়নি আবার হয়েছিও। কারণ আমার অফিসের কাছে একটি দুর্ঘটনা স্বভাবতই মনে ভীতির সঞ্চার করেছিল। যাই হোক, লেগুনা আরো সামনের দিকে এগুতেই আমাদের সবার দৃষ্টি কি এ্যাকসিডেন্ট করলো সেটা দেখার জন্য। আমরা দেখলাম একটি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা আর একটি মাইক্রোবাস মুখোমুখি। মাইক্রোবাসটি রং সাইডে ছিলো। একজন মারা গিয়েছে আর মৃত ব্যক্তিটিকে ঘিরে রেখেছে উৎসুক জনতা। উৎসুক মানুষগুলোর ফাঁক দিয়ে মৃত মানুষটিকে দেখা যাচ্ছে।
আমার সামনের সিটে বসা মহিলাটি হঠাৎ করে চিৎকার দিয়ে বলতে লাগলো গাড়ি থামাও গাড়ি থামাও আমার ছেলের মতো দেখা যাইতেছে। আমার ছেলেওতো গাড়ি চালায়। লেগুনা থেকে মহিলা নেমেই চিৎকার দিলো। আমি পরবর্তী দৃশ্য দেখার জন্য আর চোখ খোলা রাখতে পারলাম না।
আজকে সকাল বেলা অফিসে যাওয়ার আগে "চ্যানেল ২৪" এ দেখলাম বরিশালে সড়ক দূর্ঘটনার প্রতিবাদে ২৪ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট চলছে। প্রতিদিন সারা দেশে শুধু সড়ক দূর্ঘটনাতেই নিহত হচ্ছে ১০-১৫ জন মানুষ। এ যেন গণহত্যাতে পরিণত হয়েছে। আর আহতের সংখ্যা তো অজানাই।
প্রিয় পাঠক, আমি জানি আমার লেখা হয়তো কর্তৃপক্ষের কোন কর্তা ব্যাক্তির চোখে পড়বে না। কিন্তু তাই বলে কি এই মৃত্যুর মিছিল চলতেই থাকবে???????????????
অনুগ্রহপূর্বক বন্ধ করুন এই গণহত্যা।
বিঃদ্রঃ আমার প্রিয় ব্লগ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ আপনারা পবিত্র ঈদের আগে অন্তত একটি মানব বন্ধন অথবা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়ার চেষ্টা করুন, যাতে করে কমপক্ষে হলেও ঈদ যাত্রা এবং পরবর্তীতে আবার কর্মস্থলে কিংবা বাসায় ফিরে আসাটা নিরাপদ হয়। আমাদেরকে যেন এই আনন্দঘন মুহুর্তে কোন দূর্ঘটনার খবর শুনতে না হয়। প্লিজ সামু, প্লিজ।