somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবেক বনাম জ্ঞানপাপী চেতনা

১১ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সঠিক মনে করতে পারছি না, তবে সম্ভবত ২০১০ সালে এসে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত চিহ্নিত ব্যাক্তিদের বিচার প্রকিৃয়া শুরু হয়। এ দেশের আপামর জনাতা সে বিচার প্রকিৃয়াতে সর্মথন জানায়; বিশেষত তরুণরা। কিন্তু জনতার এই অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতাসীনদের একটা অংশ তাদের যে কোন অপকর্ম আড়াল, বিরোধী মত দমন এবং রাষ্ট্রীয় কিংবা সমাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে কোন যৌক্তিক প্রতিবাদ কিংবা সমালোচনাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী, রাজাকার কিংবা স্বাধীনতা বিরোধী ইত্যাদি ট্যাগ দিয়ে দমন করতে চেয়েছে। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষমতাসীনদের মধ্যকার বিবেকবান অংশ এবং দেশের সচেতন মহল তখন থেকে এই রাজনৈতিক অপকৌশলের সমালোচনা করে আসছেন। তারা বরাবরই বলেছেন, যে কোন ইস্যুকে দমাতে ঢালাও রাজাকার কিংবা স্বাধীনতা বিরোধী ট্যাগ মুক্তিযুদ্ধের মতো গৌরবউজ্বল অধ্যায়কে খাটো করে। কিন্তু সচেতন মহলের এ কথা কানে তোলা হয়নি! এরমধ্যে জল বহুদূর গড়িয়েছে। একটা কথা আছে, 'মানুষের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যায়, তখন সে পাল্টা আঘাত করে।' রাজাকার ইস্যুটা ঠিক তেমনই হয়ে গেলো। কোটা সংস্কার আন্দোলনে এসে তারুণ্যের অনেকেই দাবি করে বসলো, "ইয়েস, আমি রাজাকার।" কিন্তু সে দাবির পিছনেও একটা কিন্তু ছিলো; আর সে কিন্তুটা হচ্ছে অন্যায় এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাতে তুমি যদি আমাকে রাজাকার বলো, তবে আমি রাজাকার। এখন তারুণ্যের দোষটা কোথায়? কিন্তু এতে করে চেতনার ব্যবসা করে আখের গোছানো এক শ্রেণীর লোক প্রচন্ড হতাশ হলো। তাদের এক মোক্ষম অপকৌশল মাঠে মারা গেলো। তাই এখন তারা নতুন মায়াকান্না জুড়ালো, 'তারুণ্য রাজাকারে মতো ঘৃণিত একটা শব্দকে আজ আপন করে নিয়েছে! ছি ছি ছিহহ!' কিন্তু এই চেতনাবাজ শ্রেণী একটা বিষয়কে খুব সচেতন ভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে; কারা এমন প্রেক্ষাপট তৈরি করে প্রতিবাদের ভাষা হিসাবে রুপক অর্থে "আমি রাজাকার" কথাটি তারুণ্যকে ব্যবহারে বাদ্ধ করলো? পাশাপাশি এই জ্ঞানপাপীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ইনিয়ে বিনিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী বলে প্রচার করে বিতর্কিত করতে চাইছে। কারন হিসাবে তুলে ধরছে ছাত্রদের সড়ক অবরোধকে! কিন্তু ভুলেও বলছে না, তারুণ্যের প্রানের দাবিকে কেন এখনো পরিপূর্ণ ভাবে মানা হচ্ছে না? ছাত্র সমাজ তো এ দফায় প্রায় চার মাস একরকম নিরীহ কর্মসূচি পালন করে এসেছে। তখন কি নীতিনির্ধাকরা পারতো না তারুণ্যের মনের আকুতি উপলব্ধি করতে? তা না করে বরং এ আন্দোলনে সহিংসতা চালিয়েছে রাষ্ট ও ক্ষমতাসীনরা; শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিজিয়েছে রক্ত স্রোতে! তবু রাস্তা অবরোধ এখন ইস্যু! অথচ এই আন্দোলনের সময় ছাত্ররা কি ভাবে এম্বুলেন্স এবং অসুস্থ রুগীকে হাসপাতালে পৌছাতে সহায়তা করেছে, তার সচিত্র প্রতিবেদন জাতীয় দৈনিকগুলোর মাধ্যমেও মানুষ জেনেছে। কিন্তু জ্ঞানপাপী হিপোক্রেটরা এসব চোখে দেখবে না। কারন দালালী এবং চাটুকারিতার মাধ্যমে নিজের আখের গোছানো এবং জন-আকাঙ্খা বিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়নই এদের কাজ। এ জাতির দুর্ভাগ্য, টগবগে তরুণ হওয়া সত্বেও যারা গর্তের ভিতর লুকিয়ে ছিলো মুক্তি সংগ্রামের পুরোটা সময়; তাদের কাছ থেকে আমাদের আজ মুক্তিযুদ্ধের আবেগী বয়ান শুনতে হয়। আর যারা রনাঙ্গনে শুত্রুর বুলেটের মুখোমুখি দাড়িয়ে জীবন বাজি রেখে লড়েছে; তারা আজ অবহেলিত প্রতিটি ক্ষেত্রে! যুদ্ধের ময়দানের লড়াকু সৈনিকরা আজ জীবন যুদ্ধে পরাজিত; সমাজের প্রতিটি স্তরে কোনঠাসা!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:৩০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×