অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার এবং প্রতিক্ষার পরে অনেক জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে নির্বাচনটা হয়েই গেল। এবং বলা চলে খুব স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে,এবং জনগণ ও তাই রায় দিয়েছে। নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ব্যপকভাবে বিজয়ী হয়েছে।এই নির্বাচনের রায় থেকে এটাই প্রমানিত হয়েছে যে জনগণ সব সমই পরিবর্তন চাই, সুশাসন চাই, সৎ মানুষ চাই, যোগ্য নেতৃত্ব চাই,গণতন্ত্র চাই, স্বাধীণ ভাবে বাঁচতে চাই এবং সর্বপরী সবকিছু ভালো চাই। জনগণ কোন সময়ই বেশি ভুল করে না। ভুল আসলে রাজনীতি বিদরাই করে। তারা নির্বাচনের আগে এক কথা বলে নির্বাচনের পর আর এক কথা বলে। ভুলে যায় সব ওয়াদা। পাল্টে ফেলে তাদের চেহারা। নতুন রুপে তারা আর্বিভুত হয়। তাদের হিংস্র, অগ্নি রুপ নির্বাচনের পর দেখা যায়। দুরত্ব বেড়ে যায় সরকার ও জনগণের মধ্যে। এবারও জনগণ পরিবর্তন চেয়েছে। ফলও পেয়েছে । জনগণ চাই নির্বাচিত সরকার তাদের দেওয়া ওয়াদা পূরণ করুক।কিন্তু এর পূর্বেও আওয়ামী লিগ জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে ক্ষমতায় এসেছিল,বিনিময়ে আওয়ামী লীগ দেশবাসীকে কি উপহার দিয়েছিল তা হয়তো সবারই মনে আছে।সেই জয়নাল হাজারী, শামিম ওসমান, দলীয়এমপি,এবং দলীয় নেতা কর্মীরা দেশের মধ্যে কিসের রাজ্যত্ব করেছিল তা সবার কি মনে আছে? এমন কি দলীয় নেত্রী পর্যন্ত সরকারী গণভবন দখল করে নিয়েছিল। তখন তাদের অত্যাচারে মানুষ শান্তিমত ঘুমাতে পারে নাই, পথ চলতে পারে নাই। সর্বত্রই ছিল দখলদারিত্বের দখলে।মানুষ তখন সেই কষ্টের কথা জানাতে পেরেছিল ২০০১ সালের নির্বাচনে। ফলে আজকের মতই সেদিন বিএনপি সরকার ক্ষমতায এসেছিল।আজ গণমানুষের যে দাবি সেই একই দাবি ছিল ২০০১ সালে। কিন্ত হাই সবই হল অন্তঃসার শুন্য।বিএনপি সরকারের সেই লুটেরা -সন্ত্রাসী কার্যক্রম, সরকারের মধ্যে আলাদা মিনি সরকার গড়ে তোলা ,হাওয়া ভবনের সন্ত্রাসী তৎপরতা , গডফাদার, সর্বক্ষেত্রে কমিশন খাওয়া , দলীয় এমপিদের স্বেচ্ছাতারিতা ,নানা কর্মকান্ড মনে রেখে জনগণ সেই একই রায়এবারও দিয়েছে। দলগুলো এবারও বিভিন্ন টোপ জনগণের সামনে ফেলেছিল। স্বাধীনতার ৩৭ বছর পর আমরা কি বার বার সেই একই লোভের টোপ গিলে যাব? রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের কি কোনদিনই হুস হবে না? মাঝেমাঝে খু্বই অবাক লাগে ,সরকার রাজনৈতিক দল,এবং নির্বাচন কমিশনের কথা শুনে। যেমন উনারা বার বারই বলে থাকেন যে,এবার গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হল, জনগণ উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছে। কিন্ত আমরা বলতে চাই, জনগণ তো ঠিকই উৎসব মুখর পরিবেশে বার বার ভোট দেয় শান্তির জন্য, দেশে স্থিতিশিলতার জন্য, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত থাকার জন্য।দেশ তিমিরে রাখার জন্য কেও ভোট দেয় না।আর প্রতি পাঁচ বৎসর পর পরই যদি গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয় তবে তা বিকশিত হয়ে ফুল ফল দেবে কবে? রাজনীতিবীদরা কোন বারই উৎসবমুখর পরিবেশে দেশ চালান না । বরং প্রতিবারই আমরা জ্বালাও-পোড়াও ,হরতাল, হত্যা, স্কুল-কলেজ,সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,মিলখারখানা বন্ধ, মানুষকে গৃহবন্দীরাখা, এবং লাশের রাজনীতি পাই। তাই নির্বচিত সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যশা, শুধু নির্বাচনের মধ্যে জনগণকে সিমাবদ্ধ না রেখে দেশকে সমৃদ্ধশালী,উন্নত করতে যা যা করার প্রয়োজন তাই করুন।।গণতন্ত্রকে শুধুই যেন নির্বাচনের মধ্যে বেধে ফেলা না হয়। নেত্রীরা যেন দল থেকে মুক্ত হয়ে দেশের কল্যাণে বিরাট অবদান রাখতে পারেন।নিজের বিবেককে যেন রাজনীতি বিদরা বির্সজন না দেন।অন্যায়ের কাছে যেন পরাজয় বরণ না করেন। জনগণের যা প্রত্যশা তা যেন উনারা পূরণ করতে পারে। আমরা চাই ন্যায়ের শাসন,সন্ত্রাস মুক্ত ,দূর্নীতিমুক্ত এবং জবাব দিহিতা মূলক শাসন ব্যবস্থা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১:০৭