somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্ল্যাক হোল-৩(ব্ল্যাক হোলের প্রাথমিক ধারণাসমূহ) (collected)

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রায় সবাই ব্ল্যাক হোলের কথা শুনেছেন...কিন্তু যারা বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রী নন তারা কিন্তু জানেন নাই যে এই অদ্ভুত বস্তু ব্ল্যাক হোল আসলে কি করতে সক্ষম।এর একটা কারন হলো এর নামটা কিছুটা বিভ্রান্তিকর। ব্ল্যাক হোল কিন্তু কোন গর্ত ও না আবার স্পেসে শুন্যতাও না।বরঞ্চ এটা প্রচন্ড ভরের একটা মহাজাগতিক বস্তু।যদিও ব্ল্যাক হোলে গর্ত বা সুড়ঙ্গ আছে তবে সেটা সাধারন গর্তের মত না;এর বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে।যার মধ্যে কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য মানুষের তৈরী যন্ত্রপাতির সাহায্যে নির্ণয় করা সম্ভব।যেমন উদাহরনের জন্য বলা যায় যে ব্ল্যাক হোলের প্রচন্ড ভর প্রবল মহাকর্ষ বল সৃষ্টি করে যেটা বিজ্ঞানীরা নির্ণয় করতে পারেন।মহাকর্ষ হল একটা সার্বজনীন আকর্ষণ বল।কিন্তু পরমাণু,পাথরের টুকরা,মানুষ এবং ঘর-বাড়ি সবকিছুর মধ্যেই এই আকর্ষন বল কাজ করলেও তা খুবই সামান্য।এই বল এতই সামান্য যে মানুষের তৈরী কোন যন্ত্রের সাহায্যে তা নির্ণয় সম্ভব নয়।কিন্তু যদি আমরা গ্রহ-নক্ষত্রের মত বিশাল ভরের বস্তুর কথা চিন্তা করি তাহলে যেই মহাকর্ষ বল আমরা পাব তা খুবই বড় এবং যন্ত্রের সাহায্যে তা খুব সহজেই নির্ণয় সম্ভব।যেমন পৃথিবীর মহাকর্ষ চাঁদ কে তার কক্ষপথে স্থাপন করে,একইভাবে সূর্যের মহাকর্ষ পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহকে তাদের কক্ষপথে পরিভ্রমন করতে সাহায্য করে।সুতরাং একইভাবে ব্ল্যাক হোলের মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র ও যে সকল বস্তু ব্ল্যাক হোলের কাছাকাছি থাকবে তাদের আকর্ষন করবে।এ বিষয়ে জোতির্বিদ থমাস আর্নি বলেছেন,
“একটি ব্ল্যাক হোলের তৈরি মহাকর্ষীয় বল একই ভরের অন্য একটি বস্তু থেকে কোনভাবেই আলাদা নয়।উদাহরনস্বরুপ বলা যায়, যদি কোন কারনে আমাদের সূর্য হঠাৎ করে ব্ল্যাক হোলে পরিনত হয়(যেটা আসলে সম্ভব নয়) তাহলেও পৃথিবী এবং সৌরমন্ডলের অন্যান্য গ্রহ একে কেন্দ্র করে একই কক্ষপথে আবর্তন করতে থাকবে।”
মহাকর্ষীয় বলের সৃষ্টিঃ

ব্ল্যাক হোল শুধু তীব্র মহাকর্ষ বলই সৃষ্টি করে না, বরং তারা এমন একটা প্রক্রিয়ার সাহায্যে সৃষ্ট হয় যে মহাকর্ষ বিশাল পরিমান পদার্থকে খুবই অল্প যায়গায় দুমড়ে-মোচড়ে দেয়।যার ফলে ব্ল্যাক হোল একটি প্রচন্ড ঘনত্বের বস্তুতে পরিণত হয়।এর ভর এবং ঘনত্ব এতই বেশী যে এর মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র সাধারন গ্রহ নক্ষত্র থেকে অনেক অনেক গুন বেশী।বস্তুত ব্ল্যাক হোলের মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র এতটাই তীব্র যে মহাবিশ্বের সবচাইতে দ্রুততম বস্তু আলো ও এর থেকে বের হতে পারে না।এই কারনেই ব্ল্যাক হোলকে কাল বা অন্ধকার দেখায়...কারন এর থেকে এমন কোন আলোকরশ্মি বের হয় না যা মানুষের চোখ বা টেলিস্কোপের কাছে এর অস্তিত্বের জানান দেবে।মহাকর্ষীয় বল আর ব্ল্যাক হোলের এই নিবিড় সম্পর্কের কথা বিবেচনা করে এদের মহাকর্ষিয় বলের সৃষ্টি বা “ক্রিয়েচার অফ গ্রাভিটি” ও বলা হয়।কাজেই মহাকর্ষ কি এবং কিভাবে কাজ করে তা সম্পর্কে সম্যক ধারনা না থাকলে কারো পক্ষে ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে পুরোপুরি বোঝা সম্ভব নয়...
মহাকর্ষ বলের উপর প্রথম গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব আসে ১৬৬৬ সালে আইজ্যাক নিউটনের কাছ থেকে।নিউটনের মাথায় আপেল পড়ার আগে মানুশজের ধারনা ছিল যেই আকর্ষন বল মানুষ ,ঘর-বাড়ি , গাছ-পালা এগুলোকে পৃথিবীতে আটকে রাখে এবং যে বল পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহকে সূর্যের চারদিকে ঘুরতে সহায়তা করে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন...(এই শালার জন্যই আজকে এত বই পড়তে হয়।মাঝে মাঝে চিন্তা করি নিউটনের মাথায় নারিকেল কিংবা কাঁঠাল পড়লে কি ভালোই না হইত)।মাথায় আপেল পরার পর নিউটন একখান সূত্র আবিষ্কার করলেন এবং এই সূত্রের সাহায্যে দেখালেন কিভাবে মহাকর্ষ বল কাজ করে।যেহেতু নিউটন বাঙ্গালী ছিলেন না তাই মাথায় আপেল পরার পর খাওয়ার চিন্তা না করে চিন্তা করলেন আপেল নিচে পড়ল কেন?(আফসোস)।উনি চিন্তা করলেন পাহাড়ের উপর থেকে ফেললেও যেহেতু আপেল নিচের দিকেই পড়বে সুতরাং যে বল আপেলের নিচে পড়ার জন্য দায়ী তা অনেক দূর পর্যন্ত কাজ করে।কাজেই তিনি ধারনা করলেন যে এই একই বল চাঁদকে তার কক্ষপথে আর প্রিথিবীকে সূর্যের চারপাশে তার কক্ষপথে বজায় রেখেছে।তার এই সূত্রই পরে মহাকর্ষের সার্বজনীন সূত্রে পরিনত হয়।এই সূত্র পদার্থবিজ্ঞান এবং জোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।
বিজ্ঞানী জন গ্রিবিন বলেন;
“নিউটন আসলেই একটি সূত্রের সাহায্যে আপেলের মাটিতে পড়া আর চাদের পৃথিবীর চারপাশে পরিভ্রমন ব্যাখ্যা করেছেন।এবং এর সাহায্যে তিনি মহাজাগতিক বস্তুসমূহের গতির রহস্য সমাধান করেছেন এবং বিজ্ঞানীদের সামনে গ্রহ-নক্ষত্র এবং পুরো মহাবিশ্বের আচরণ ব্যাখ্যা করার পথ উন্মোচন করেছেন।”

পরের পর্বে থাকছে “মুক্তি বেগ এবং অদৃশ্য তারকারাজি”
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×