somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনার জন্য ভালবাসা

২৫ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনে আপনাকে সামনাসামনি দেখেছি মাত্র দুইবার। প্রথমবার ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরির সামনে বইমেলায় খুব কাছ থেকে পরের বার ২০০২/০৩ সালে একুশে বই মেলায় অন্য প্রকাশের স্টলে অনেক দূর থেকে। তবে আপনার সাথে পরিচয় সেই আশির দশকে স্কুলে পড়ার সময় থেকেই। নন্দিত নরকে থেকে শঙ্খনীল কারাগার কিংবা তোমাদের জন্য ভালবাসা গোগ্রাসে গিলেছি সবই। যে আপনার লেখা পড়ে কিশোর থেকে পরিণত বয়সে এসেছি সে আপনাকে নিয়ে লিখতে হবে .... না, এমনটা কখনো ভাবিনি।

১৯ জুলাই রাত ৯.০০ টা থেকেই খবর আসছিল আপনার শারিরীক অবস্থার অবনতি হয়েছে। অজানা আশন্কায় মন কেঁপে উঠেছিল। তবে আপনার শারিরীক অবস্থার খবর নিয়ে লুকোচাপাও হচ্ছিল বেশ। অবশেষে ১১.৩০ টার সময় জানতে পারলাম আপনি সকল লুকোচাপার উর্দ্ধে চলে গেছেন। বেশ কিছুক্ষণ মাথাটা ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। কিছুই ভাবতে পারছিলাম না। জীবনে অনেক কাছের মানুষকে হারিয়েছি তবে খুব কমই চোখের পানি ফেলেছি। কিন্তু সেদিন দূরের আপনাকে হারিয়ে মনে হচ্ছিল খুব কাছের কাউকে হারিয়ে ফেলেছি। অশ্রু কিছুতেই বাধঁ মানছিল না। আমি জানি আমার মতো আপনার হাজারো ভক্ত এভাবেই চোখের পানি ফেলেছে। আমাদের চোখের পানি কোন টিভি ক্যামরার অপেক্ষা করেনি, প্রত্যাশা করেনি কোন ফটো সাংবাদিকের ক্যামরার শাটার টেপার। আপনি আর নেই শুনেই আপনার প্রতি আমাদের ভালবাসা অশ্রু হয়ে ঝরে পড়েছে।

ব্যক্তি জীবনে আপনি কী করেছেন, কী কী ভুল করেছেন এটা ভেবে আমাদের ভালবাসার কখনো ছেদ পড়েনি। আপনার লাখো ভক্ত যারা আপনার কাছে লেখা ব্যাতিত কোন কিছুই প্রত্যাশা করেনি তাদের হৃদয় চূর্ণ হয়েছে আপনার না থাকার সংবাদে। তবে আমি হতবাক হয়ে দেখেছি আপনার খুব কাছের মানুষ বলে খ্যাত কিছু লোকের কর্মকান্ড। নেত্রকোনার এক অখ্যাত শিল্পী যাকে নিজ অঞ্চলের বাইরে তেমন কেউ চিনত না। তাকে আপনি দেশব্যাপি পরিচিতি দিয়েছেন। নেত্রকোনার ভাঙ্গা ঘরের পরিবর্তে যিনি এখন ধানমন্ডির ফ্ল্যাটে থাকেন। সেই তাকেই দেখলাম আপনার মৃত্যুর দিনই একটি চ্যানেলে লাইভ অনুষ্ঠানে গান গাইতে। আপনার মৃত্যু সংবাদে যেখানে আমাদের মতো হাজারো ভক্ত বাকরুদ্ধ সে অবস্থায় আপনার তৈরি এই শিল্পী কিভাবে টিভি অনুষ্ঠানে গান গায় বোধগম্য হয়নি। শুধু তাই নয় মৃত আপনাকে বিক্রি করে ভিন্ন ভিন্ন চ্যানেলে এ শিল্পী গান গেয়েছে পরপর চার দিন। আপনার খুব কাছের এক অভিনেতাকে দেখলাম দেশ টিভির একটি অনুষ্ঠানে আপনাকে নিয়ে রসিকতা করে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। অথচ তখনও আমরা হাজারো ভক্ত উদ্বিগ্ন হয়ে প্রতীক্ষা করছি আপনার দাফন কোথায় হয় এটা জানার জন্য। নুহাশ পল্লী, মিরপুর, বনানী না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কোথায় আপনার শেষ গন্তব্য এটা নিয়ে আপনার পরিবারের সদস্যদের রশি টানাটানিতে আপনার বিদেহী আত্মা যেমন কষ্ট পাচ্ছিল তেমনিভাবে রক্তাক্ত হচ্ছিল আমাদের হৃদয়। যদিও জানি আপনি অনাদিকাল বেচেঁ থাকবেন লাখো পাঠক হৃদয়ে। যেমন শরৎচন্দ্র বেচেঁ আছেন দেবদাস হয়ে জীবনানন্দ বেচেঁ আছেন বনলতা সেনে তেমনি আপনি পাঠক হৃদয়ে বেচেঁ থাকবেন হিমু, মিসির আলী, শুভ্র, রুপা ইত্যাদি চরিত্রে।

কোন বিশেষজ্ঞ আপনাকে নিয়ে কোন চ্যানেলে কি বললো, কোন শিল্পী আপনাকে নিয়ে কি স্মৃতিচারণ করলো এ দিয়ে আমরা কখনো আপনাকে মূল্যায়ন করবো না। আপনি আমাদের কাছে কি ছিলেন তা আমরা বুঝতে পারি যখন দেখি আপনার জানাযায় শরিক হওয়ার জন্য পাট কাটা ফেলে রেখে ঢাকা ছুটে যান সুদূর মাদারীপুরের এক কৃষক। আপনার মৃত্যুতে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বুকভাঙ্গা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নাম না জানা এক স্কুল ছাত্রী। এদের মাঝেই আপনি চিরকাল বেচেঁ থাকবেন। আপনার জন্য আমাদের বুক ভরা ভালবাসা চিরকালই জাগরুক খাকবে হে বাদশাহ নামদার
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারা এমন মেধাবী এদেশে দরকার নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৩২



২০০১ সালে দেলাম ঘরে আগুন দেওয়া ও মন্দীরে হামলার জঘণ্য কাজ। ২০০৪ আবার দেখলাম ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারার জঘণ্যতম ঘটনা।জাতি এদেরকে মেধাবী মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষাঙ্গনে অপ্রীতিকর ঘটনার মুল দায় কুৎসিত দলীয় লেজুরভিত্তিক রাজনীতির

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫

সোস্যাল মিডিয়ার এই যুগে সবাই কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবি সাজতে চায়। কিন্ত কেউ কোন দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে রাজী নয়। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটা মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে । এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোমলমতিদের নিয়ে আমি কি বলেছিলাম?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



আমি বলেছিলাম যে, এরা ভয়ংকর, এরা জাতিকে ধ্বংস করে দেবে।

ড: ইউনুসের সরকারকে, বিশেষ করে ড: ইউনুসকে এখন খুবই দরকার; উনাকে টিকিয়ে রাখতে হলে, কোমলমতিদের থামাতে হবে; কিভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটিয়ে মানুষ মারার জাস্টিফিকেশন!

লিখেছেন সন্ধ্যা প্রদীপ, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩

এদেশে অনেক কিছুই সম্ভব।বর্তমান এলোমেলো সয়য়ে যা সম্ভব না বলে মনে করতাম তাও সম্ভব হতে দেখেছি।তবে মানুষকে কয়েক ঘন্টা ধরে পিটিয়ে মারাকে ইনিয়েবিনিয়ে জাস্টিফাই করা যায় এটা ভাবিনি।তাও মেরেছে কারা?
একদল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আহা তোফাজ্জল

লিখেছেন সামিয়া, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪




মৃত্যু এখন এমনি সহজ
ভিডিও করতে করতে;
কথা বলতে বলতে
ভাত খেতে দিতে দিতে;
কনফিউজড করতে করতে
মেরে ফেলা যায়।

যার এই দুনিয়ায় কেউ অবশিষ্ট নাই
এমন একজনরে!
যে মানসিক ভারসাম্যহীন
এমন একজনরে!
যে ভবঘুরে দিক শূণ্য
এমন একজনরে!
যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×