somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

THANK YOU AND GOOD BYE : পাঁচ বছর পূর্তির পোস্ট কিংবা বিদায়ী মর্সিয়া বিলাপ !

০৮ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা রাত জাগতাম । আমাদের সঙ্গে চাঁদও জাগতো । আমরা তারা গুণতাম । সাত কোটি সাত লক্ষ সাতাত্তর হাজার সাতটি তারা গোণা শেষে যখন আমাদের মাথা আউলা হতো, তখন তারার সঠিক সংখ্যা এবং আমাদের গণন পদ্ধতি নিয়ে আমাদের সন্দেহের তীব্রতা যখন আমাদের ক্লান্ত করতো , আমরা তখন কি-বোর্ডে হাত রাখতাম,বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ-এ নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতাম । আমরা তখন কি-বোর্ডে তড়িৎ হাত চালিয়ে তীব্র আবেগ এবং মমতায় , কখনওবা তীব্র ঘৃণায় বিস্তর হাতি-ঘোঁড়া মারতাম ! এভাবে আমরা কি-বোর্ড বিপ্লবী বা কি-বোর্ড সিপাহী উপাধি পেয়ে যেতাম । বিপ্লবী বা সিপাহী বনে যাবার আনন্দে আমরা কিতার্থ হতাম বা বেদনায় নীল হতাম, ঠিক সে অর্থে সেই অনুভূতির প্রকাশ না ঘটিয়েও ইতিহাসের মীরজাফর- জগৎশেঠদের আত্মতৃপ্তি আর বিমলানন্দ আমরা উপভোগ করতাম !

আমরা তখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এর কথা ভুলে দেশ গড়ার ফতোয়াকে অস্বীকার করতাম । যুদ্ধাপরাধীদের পরবর্তী প্রজন্ম ভার্চুয়াল রাজাকার, যারা মুক্তিযুদ্ধে ৩০লক্ষ শহীদ হলো কী হলোনা, অগুণতি মা-বোন ধর্ষিতা হলো কী হলোনা, সে বিষয় সন্দেহ প্রকাশের স্পর্ধা পায় , শহীদ বা ধর্ষিতার সংখ্যা আরো কম হলেও যে আদতে কোন ফারাক পড়ে না, প্রকৃতপক্ষে একেকটা বলিদান যে একেকটা বিশাল ত্যাগ, একেকটা পরিবারের নিঃস্ব হয়ে যাওয়া, যারা বুঝেও বুঝতে চায়না, তাদের বিরুদ্ধে আমরা শব্দপাতের লড়াই এ উত্তীর্ণ হতাম । পাকী পতাকাখচিত পোস্ট প্রথম পাতা থেকে বিতাড়ণের জন্য আমরা দু'লাইনের ছন্দবদ্ধ কবিতা বা এক লাইনের গালাগাল সমৃদ্ধ পোস্ট এর প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতাম । সেই বিশেষ প্রজাতিটির জন্য আমরা কাঁঠালপাতা এবং অমসৃণ বাঁশ এর নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ অটুট রাখতাম । আমরা ব্যান খেতাম এবং সোলেমানী বান এর কবলে কখনও আমাদের একেকটা নিক চিরতরে নিহত হয়ে যেতো । আমরা তবু, স্বার্থের জন্য হাসিনা-খালেদার মতো যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে আঁতাত করতাম না । আমরা স্বপ্ন দেখতাম ক্ষমতার চেয়ার বদল হলে, অনেক কিছুরই বদল হবে। ক্ষমতার চেয়ার বদল হলে অনেক কিছুরই বদল হয়, বিমানবন্দরের নাম বদল হয়,ক্ষমতার পকেট বদল হয়, কিন্তু চরিত্র বদল হয়না । যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এর মূলোটিকে আমাদের নাকের সামনে বিভৎসরূপে ঝুলে থাকতে দেখি । ঝুলন্ত মুলোর আঘাতে এখন আমাদের নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত ঝরে !

'ভারত বিশাল রাস্ট্র,ভারতীয়রা থু থু দিয়া বাংলাদেশরে ডুবায়া দিতে পারে'- এই জাতীয় ম্যাৎকার করতো যেসব ভাছা বা ভারতীয় ছাগল, তাদের জন্য ছিলো আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সুখপ্রদ সুশীল বচন । আমরা তাদের আহ্বান করতাম,"নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর সঙ্গে ব্লেড এর মূল্যও কিঞ্চিত অধিক হারে বৃদ্ধি পাওয়াতে বাংলাদেশীদের নিম্নাঙ্গের কেশরাজী দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে । হে ভারতীয় বন্ধুগণ ! বঙ্গদেশীদের নিম্নাঙ্গের দীর্ঘ কেশরাজী উৎপাটনে যেন আপনাদের সদয় মর্জি হয় ।"

বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ-এ হয়তো তখন আমরা একটা পরিবারের মতই ছিলাম , পরিবারের ধারণাটাও হয়তো ভুল ছিল, কারণ আমাদের অগ্রজদের আমরা হতাশ হতে দেখেছিলাম এবং হাতি-ঘোড়া মারা ছেড়ে তাদের বেদনাবিদ্ধ প্রস্থান দেখেছিলাম, বা বলা ভালো, নিজেদের গোয়ালের গরুটির জন্য ঘাসের সন্ধানেই হয়তো তারা বেরিয়ে গিয়েছিলেন । পরের ঘরে বাতি জ্বালানোর দিন শেষ,-এই সত্য উপলব্দির সঙ্গে সঙ্গে হয়তো সবাইকেই নিজের ঘরের বাতি এবং তার জন্য তেল এর সন্ধানে বেরিয়ে পড়তে হয়

Click This Link কারণ, আমাদের অগ্রজ, সমসাময়িক এমনকি অনুজদের এভাবে চলে যেতে দেখেছিলাম । এভাবেই চলে যেতে হয় একদিন । আমিও যাই । আজ এলো যে নতুন, তার জন্য জায়গা করে দিয়ে যাই ।

আফসোস: প্রিন্ট মিডিয়ার আট টাকার বড় বড় পাতাগুলোতে লেখে ভড়িয়ে ফেলেন যেসব লেখকরা, বা অসফল সাহিত্যিক এবং তথাকথিত সফল সাহিত্য সম্পাদকের সাহিত্যপাতায় নিত্য সাহিত্যের ছা'পোনা প্রসব করেন যেসব বিদগ্ধ লেখক- কবি, তাদের নাকখানি বিভৎসরকম উঁচু । উঁচু নাকের জন্য অনেক দৃশ্যমান বস্তুও তাদের অদেখা থেকে যায় । ফলে, ওয়েবলগ এর লেখকদের তারা দেখেন না বলে নাকচ করে দিতে চান । আদতে, সাহিত্যের ছা-পোনা প্রসব করা সেইসব ফরমায়েশী লেখকদের চে' দশগুণ ভালো লেখেন এরকম অন্তত শ'খানেক ব্লগার বিভিন্ন ব্লগে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন । এসব ব্লগারদের একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হতে পারতো বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ । হতে-হতেও হয়নি , ভুলের জন্য । আফসোস !

অপূর্ণ ইচ্ছা :
আমার প্রিয় পোস্টের তালিকাকে সমৃদ্ধ করা লেখাগুলোকে মলাটবদ্ধ করবার সুপ্ত একটা ইচ্ছা ছিল এবং আছে । সময়-সুযোগ করে লেখকদের অনুমতি নিয়ে যদি লেখাগুলোকে মলাটবদ্ধ করবার সৌভাগ্য হয় তো, সঙ্গে এই ব্লগের আরো কিছু লেখা থাকবে , যেগুলো স্মৃতিতে গেঁথে রয়েছে ।

ধন্যবাদ হে ভালোবাসা : ভালোবাসার জন্য আমরা হাতের মুঠোয় প্রাণ নেইনি, তবে, বাংলাভাষার প্রথম ব্লগ-বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ এর জন্য আমাদের ভালোবাসার খামতি ছিল না কোনদিন ! ভাষাকে আরো বেশী করে ভালোবাসবার সুযোগ করে দেবার জন্য - ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ।


শু ভ বি দা য় । থ্যাংক য়্যু, গুড লাক এ্যন্ড গুড বাই ।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৯:২৩
৩৯টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×