somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সংখ্যা তত্ত্ব, আবেগ খালেদা জিয়া এবং

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খালেদার বক্তব্যের সাথে দ্বি-মত করার মত পরিসংখ্যান কেন আমাদের থাকবে না। শুধু আবেগ দিয়ে কেন, আমরা জাতির এত বড় একটা অবদানকে তর্কের মধ্যে রেখে বিভাজন তৈরি করবো। প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে।

খালেদার বক্তব্যের খণ্ডিতাংশ নিয়ে তর্ক হচ্ছে। বিডিনিউজ জানাচ্ছে--- খালেদা গতকাল বলেছেন, '“আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।”

খবরটিতে আরো জানাচ্ছে, খালেদা বলেছেন, “সরকার নানারকম মুক্তিযোদ্ধা তালিকা তৈরি করছে। যাদের অন্যায়ভাবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে; আমরা ক্ষমতায় আসলে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করে তাদের যথাযথ সন্মান ও সন্মাননা দেব।”

একাত্তরে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা নয়, ক্ষমতা চেয়েছিল দাবি করে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার জেনারেল জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বলেন, “তিনি (জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি।”

বিস্তারিত লিঙ্কে Click This Link

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের পরিসংখ্যান কম বেশি হলে আমাদের স্বাধীনতা প্রশ্ন বিদ্ধ হবে না। হতে পারে না। জাতি সম্মিলিতভাবে একটা স্বাধীন দেশ নির্মাণে ঐক্যবদ্ধ-মনোবল আর বঙ্গবন্ধুর প্রেরণা নিয়ে যুদ্ধ করেছে।

এর পরেও সংখ্যার হিসাবটা কেন তুললেন খালেদা? এর আগে সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান ও ভারতীয় গবেষক শর্মিলা বসুও একই রকম বলছেন। আমার ধারণা খালেদা বিষয়টি তুলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, শহীদ পরিবারে ভাতার নামে হয়রানি-বঞ্চনার বিষয়টি সামনে আনতে। নিশ্চয় তিনি বা তার দল এটার মূল ব্যাখ্যাটা দিতে পারবেন।

একটা পরিসংখ্যান নিয়ে কথা উঠলে, আমরা সেটার যৌক্তিক প্রতিবাদ না করে 'আক্রমণ' করার সংস্কৃতি কতটা গ্রহণযোগ্য সেটা আবেগের কাছে বিবেচ্য নয়; তবে বিবেক তাড়িত মানুষ এটি বুঝতে পারবেন, নিশ্চয়!

তবে এ রকম প্রশ্ন সামনে আরো উঠতে পারে। সে শঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। সংখ্যা ভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর নিশ্চয় আবেগ নয়; সংখ্যা দিয়েই দেওয়া উচিৎ।

দেশে বিদেশে যারা গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধি অপরাধ নিয়ে গবেষণা করেছেন, করছেন এবং সামনে করবেন তাদের জন্য এটা খুবই জরুরি। যদিও আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পড়াশোনার জন্য এখনো দেশে কোনো্ বিশেষায়িত ইন্সটিটিউট গড়ে উঠেনি; সামনে নিশ্চয় উঠবে; তখন এ সব তথ্যের দরকার পড়বে।

মনে রাখা দরকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কিন্তু 'রাজাকার বান্ধব' খালেদার করা। যেটি করার কারণে সরকারি লোকজন বিদেশিদের সম্মাননা জানানোর সোনা চুরিও করতে পেরেছিলেন। খবরের লিঙ্ক Click This Link


খালেদা বক্তব্যটা দিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে । যারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন, তারা যদি তার বক্তব্য অসঙ্গত মনে করতেন -তাহলে তারা প্রতিবাদ করতেন। যেহেতু সংখ্যা তত্ত্ব এখানে অচল; আবেগ তত্ত্ব হিসাব করলেও মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেয়াদের বীরদের চে আমাদের আবেগ নিশ্চয় বেশি নয়। হলে , সেটাকে গ্রামবাংলার প্রবাদ---' মা'র চে মাসির দরদ বেশি' গণ্য হতে বাধ্য।

খালেদার অনুষ্ঠান থেকে কি কেউ তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করে নীরবে চলে গেছেন? এমন কোনো তথ্য সরকারি জনসংযোগ-গণমাধ্যমেও খুঁজে পেলাম না।

খালেদা যে, একই সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য মর্যাদা ও সম্মান নিশ্চিত করার কথাও বলেছেন। সেটা নিয়ে কথা হচ্ছে না। ৪৪ বছর পরেও মুক্তিযোদ্ধারা অসহায়; তা নিয়ে কেউ ভাবছে না। খবর হলো, ২০১৩ সালেই বিদেশে পাচার হয়েছে ৭৫ হাজার কোটি টাকা। সূত্র Click This Link




কোটার দাক্ষিণ্য মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমানের। এ দেশ তাদের রক্ত, শ্রম- জীবন-বাজিতে স্বাধীন। সে স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব যাদের হাতে অর্পিত, তারা বিভেদ বিসম্বাদ নিয়ে ব্যস্ত! সে বিকারগ্রস্থতার মাঠে আমরাও সরব-কিম্বা নীরব দর্শক।

গ্যালারির দর্শখ হিসাবে আমার ব্যক্তিগত মত, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থাকলে কিন্তু সরকারি সুবিধা থেকে সরকার ভেদে বঞ্চনার ঘটনা ঘটতো না ।

খালেদা রাজাকার বান্ধব মেনে নিলাম; কিন্তু তার বিপরীত জন? গেলো ১৬ ডিসেম্বরও ইনডিয়া ইন্দোপাকওয়ার৭১ হ্যাশ ট্যাগে বিজয় উৎসব শেয়ার করেছে, ফেসবুক ও টুইটারে । ইন্ডিয়ান সেনাবাহিনীর ভেরিফাইড পেজ থেকে । চেতনার সর্বস্ব উজাড় করা সরকার তার প্রতিবাদ করার সাহস পেলো না । আর ফেসবুকে এখন যারা হাউকাউ করছে তারা তখন কেন চুপ ছিল; কেন রে ভাই। বঙ্গীয় দালাল হও। ভারত-পাপিস্তানের নয়।
সূত্র ---

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৭
২১টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×