বেশিরভাগ লোকই মনের লোভ সামলাতে না পেরে পরিকল্পনা করে চুরি করে।আপনি জানেন কি,
এনোরেক্সিয়া নার্ভোসায় আক্রান্ত রোগী ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকেও খাবার বা অন্য জিনিসপত্র চুরি করে, কিন্তু মজার ব্যাপার হল, সবাই সেটা খায় না বা ব্যবহার করে না; ফেলেও দেয়।.
প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত রোগী পছন্দের কিছু দেখে বাস্তব জ্ঞান ও বুদ্ধি হারিয়ে সেটা নিয়ে তার বাসায় চলে যায়।এটা অনিচ্ছাকৃত; নিজেকে সামলাতে পারে না।রোগীর মনে জিনিসটি চুরি করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।(এছাড়া আরো নানা কারণে হতে পারে।)
আমাদের এই সমাজে অনেকেরই এ ধরনের সমস্যা থাকতে পারে। মনোচিকিৎসকের পরামর্শ নিলে উপকৃত হতে পারেন।কিন্তু যারা সুস্থ হয়েও চুরি করেন, তাদের অসুখ তো সারানো কঠিন। ফেসবুকেও বর্তমানে অনেক রকম চুরি হয়ে থাকে। আর এই চুরিটা করা হয় অন্যের লেখা নিজের নামে চারিয়ে দেয়ার মাধ্যমে। যারা এই চুরিটা করেন তারা এটাকে চুরি বলতে নারাজ; এটাকে তারা কপি পেস্ট বলেন এবং মজার ব্যাপার হল, অনেকেই কপি করার সময় কিছু লাইন কিংবা চরিত্রের নাম বদলে দেন, যাতে তারা মনে করেন, ধরা পড়বেন না।
এখন দেখা যাক তারা এ কাজ কেন করেন? অন্যের প্রশংসা পাবার জন্য, কিছু লাইকের জন্য, মানুষ তাকে বড় মাপের লেখক ভাবুক, কিংবা সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের খাতিরে এ কাজটা করেন।
ফেসবুকে এক ছোটবোন আছে সোনিয়া।মেয়েটা ভীষণ ভালো লেখে।একদিন শুনলাম, পত্রিকায় তার লেখা ছাপা হয়েছে, কিন্তু মজার ব্যাপার হল, লেখাটা অন্য একজনের নামে। আমি জানি না মেয়েটা ঠিক কতটুকু কষ্ট পেয়েছে।
আমি এমনও দেখেছি, বড় সাহিত্যগ্রুপে সে আছে, নিজেকে লেখক পরিচয় দিচ্ছে এবং দেদারসে চুরি করছে।একজন লেখক চুরি করতে পারেন না। তিনি অন্যের কথা নিজের নামে চালাতে পারেন না।
এটা যে অন্যায়, সেটা তিনি বোঝেন না।কেউ যখন এমন চুরি করা শুরু করে, আপনি তাকে যত লজ্জা দেন না কেন,
সবার ক্ষেত্রে কাজ হয় না। চুরি করা যদি হয়ে যায় তার নেশা। কিন্তু এই ব্যাপারটি একজন মানুষের জন্য কতটা আত্মঘাতী, কতটা ক্ষতিকর তা মানুষ নিজেও জানে না।
আপনি লিখতে না পারেন, বা কোনো লেখা আপনার খুব ভালো লাগতে পারে, তাহলে সেটা তুলে ধরুন, কোন সমস্যা নেই; তবে অবশ্যই কার্টেসিসহ।এতে করে আপনার প্রতি অন্যের সম্মান বেড়ে যাবে।একটুও কমবে না। বাবুই পাখির সেই কবিতাটা মনে আছে?
"কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা"
আপনি তাই লিখুন, যা আপনার মনে আসে।অন্যের লেখা নিজের নামে দিয়ে আত্মতৃপ্তি মেলে না।নিজের লেখা যেমনই হোক, তাতে একটা সুখ পাবেন।আর অন্যের লেখা ভালো লাগলে তাঁর নাম / কার্টেসিসহ পোস্ট করবেন। চুরি তো চুরিই, সেটা লেখাই হোক আর অ্ন্য জিনিসই হোক। অন্যায় সেটা কেবলি অন্যায়। এই অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়ে নিজেকে অন্যের কাছে ছোট করবেন না কেউ। আমার এমন কথায় সাময়িক কষ্ট লাগলেও আপনাকে ভালোবেসেই কিন্তু এটা বলতে বাধ্য হয়েছি। আমার ব্যক্তিগত কোনো লাভের জন্য নয়।
নীল রুবাইদা গুলশান মনি
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:২৩