somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে কারণে আমি হেরে যাই, সে কারণেই আমি জিতে যাই!

০২ রা মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
সকাল বিকাল আমার মাথার মধ্যে প্রচুর প্রশ্ন ঘুরে। যখন কোন ক্লাস বা ট্রেনিং করি, আমার মাথার মধ্যে প্রশ্ন গিজগিজ করে।



প্রতি ক্লাসে একটা মানুষ অন্তত এমন থাকবেই যে অহেতুক প্রশ্ন করে অন্যদের জন্য যন্ত্রণার কারণ হয়ে উঠে। আমি এদের উপর চরম বিরক্ত হই, আবার খুশিও হই। আমার মাথায় প্রচুর প্রশ্ন আসলেও আমি ক্লাসের মধ্যে শিক্ষককে প্রশ্ন করি খুব কম। আমি সাধারণত নিজেই উত্তর খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করি। ক্লাসের মধ্যে অন্যরা যে সব প্রশ্ন করে, সাধারণত আমার তাতেই প্রায় সব উত্তর চলে আসে।

দু একটা যা থাকে, আমি খুব গভীরে চিন্তা করে তারপর প্রশ্ন করি। অনেক টিচার পেয়েছি যারা আমার প্রশ্নের অপেক্ষায় থাকতেন। আমি প্রশ্ন করলে খুশি হতেন।

স্কুলে একজন বিজ্ঞানের স্যার ছিলেন, তিনি আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে খুব ভালোবাসতেন।

চাকুরী জীবনেও আমি প্রশ্ন খুব কম করি। কোন বিষয়ে আলোচনা হল খুব কম কথা বলি। যা বলি, সেটা বলার আগে বহুত ভেবে বলি। সাধারণত কোন সমস্যার জন্য আমার দেওয়া সমাধান ফেলা যায় না। অথরিটি আমার সমাধান পছন্দ করে।

আমার বর্তমান প্রতিষ্ঠান আমি মোট তিনটি ডিপার্টমেন্টে কাজ করেছি। আগের ডিপার্টমেন্টের ম্যানেজাররা তাদের বর্তমান সমস্যা সমাধানেও আমাকে প্রায়ই মিটিং এ ডাকেন। বিভিন্ন বিষয়ে সমাধান চান।

আমার একজন কলিগ আছে, বর্তমানে যে ডিপার্টমেন্টে কাজ করছি, সেটায় সে আমার সাথে একই কাজ করে। ঐ কলিগ খুব বেশী চটপটে। আমর মত ধীরে কাজ করে না। কোন একটা বিষয়ে কোন ইন্সট্রাকশন আসার সাথে সাথে সে কাউকে কিছু না বলে ঝাপিয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০-৮০% সময়ই তার এই অতি উৎসাহ হিতে-বিপরীত হয়েছে।

গত বছর যখন আমি প্রমোশন পেয়ে এই পজিশনে আসি, তখন আমাদের একটা অডিট চলছিলো, ডিপার্টমেন্টের অবস্থা বেহাল। মোট ১৮টি পয়েন্টে অডিটে আমরা চরম খারাপ করেছিলাম। মোটামোটি পজিশনে ছিলো মাত্র ২টি পয়েন্ট। আমার ম্যানেজার আমাকে দ্বায়িত্ব দিলেন যে এই ১৮টির মধ্যে ১০টি আমাকে সমাধান করতে হবে ৩মাসের মধ্যে, বাকি ৮টি ৬মাসের মধ্যে। আমার কলিগ বেঁকে বসলো, সে নিজেই সব কিছুর দ্বায়িত্ব নিলো, এবং বললো যে মাত্র ২মাসে সব সমাধান হয়ে যাবে।

তার দ্বায়িত্ব গুলি এসে আমার ঘাড়ে পড়লো, আমি কাজ কাম গুছিয়ে নিতে লাগলাম। আর সাথে সাথে নিজে নিজে এনালাইসিস করতে থাকলাম যে কেন ঐ ১৮টি পয়েন্টে সমস্যা হয়েছে। আমাদের যে বিশাল কর্মীবাহিনি আছে, তাদের সাথে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বললাম।

২মাস পর দেখা গেলো ঐ ১৮ পয়েন্টের ১৮টিরই অবস্থা আরও খারাপ। এবার ম্যানেজার আমাকে দ্বায়িত্ব দিলেন। আমি মোট ৩মাস করবার পর অপর অডিটে দেখা গেলো ঐ ১৮টির ১৬টিতে দুর্দান্ত অবস্থা। বাকি গুলিও ইম্প্রুভ করেছে।

-------------------------------

আমার কাজের একটা পন্থা আছে। আমা যদি কোন কাজ করতে ২মাস সময় পাই, তাহলে আমি কাজের প্লানিংএ ২-৩ সপ্তাহ ব্যায় করি। প্রথম ২-৩ সপ্তাহ কাজের কোনই দৃশ্যমান অগ্রগতী হয় না। অনেক সময় ম্যানেজমেন্ট এটাকে ধরে নেয় যে কাজ এগুচ্ছে না। প্রতিবার ম্যানেজার চেঞ্জ হলে তাকে বা তাদের এটা বুঝাতে আমার বেশ সময় লেগে যায়।

এরপর আমি কাজে নামি, এবং সাধারণত ডেডলাইনের আগেই সুন্দর ভাবে কাজ শেষ করি। আমার কোন কাজ প্লানিং ছাড়া হয় না। প্লানিং ছাড়া করতে গেলে আমি মন মত কাজ করতে পারি না।

অপর দিকে আমার কলিগ হচ্ছে ধর তক্তা, মার পেরেক টাইপের। এতে তক্তা নষ্ট হলো কি ঠিক ভাবে লাগলো তা সে দেখার সময় রাখে না।

তার এই কারণে ডিপার্টমেন্টে সে হচ্ছে দ্রুত একশনে যাওয়া লোক, এখানে আমি হেরে যাই।
আর তার দ্রুত একশনের কারণে সৃষ্ট সমস্যা দূর করতে আমি হচ্ছি সমাধানকারী লোক, এখানে আমি জিতে যাই।


--------------------

দুনিয়ার অন্য (প্রায়) সবার মত আমি মনে করি আমার পন্থটা সঠিক। আপনি কি মনে করেন?

Photo by Yves Cedric Schulze on Unsplash
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:২৮
৩টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×