ইতিহাস জানেন? নাকি হুজুগেই স্বাধীনতা, স্বাধীনতা বলে চিল্লান?
স্বাধীনতা কেনো দরকার ছিল জানেন?
মুক্তিযুদ্ধ কেনো করা হয়েছিল, মনে আছে?
স্বাধীনতার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত আছেন?
দেশভাগটাই ছিল অসম একটা বণ্টন। প্রথমত এভাবে একটা রাষ্ট্র স্থায়ী থাকতে পারে না, আজ অবধি পারতও না। দেশভাগ থেকে মুক্তিযুদ্ধ এই সময়কাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্থানিরা ছিল অবহেলিত, নিগৃহীত, অত্যাচারিত।
কাদের দ্বারা?
তাদেরই শাসক দ্বারা। ভূখণ্ড দু ভাগে থাকলেও রাষ্ট্র ও শাসক তো একটাই ছিল!
২৩ বছরের এই নিপীড়ন, অত্যাচারই ধীরে ধীরে স্বাধীনতার বীজ বপন করে। ৭৯ এর গনঅভ্যুত্থানের ফলে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
১৯৭০ এর নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্থান থেকে মনোনীত দল আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেলেও ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অপারগতা জানায়। এর পরেই আসে ৬ দফা দাবি ও পাকিস্থানকে না মেনে নেয়া ৭ ই মার্চের ভাষণ।
তারপর পূর্ব পাকিস্থানিদের উপর হামলা (২৫ এ মার্চ)। মনে করেছিল ভয় ভীতি দেখিয়ে ক্ষমতা নিজেদের অধীনেই রাখা।
এর পরেই তো স্বাধীনতার ঘোষণা। এবং স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া, অবশেষে স্বাধীনতা অর্জন।
✍︎ এখানে আমি ইতিহাস বলতে আসি নাই। আমার লেখার সারমর্ম হচ্ছে কিসের প্রেক্ষিতে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত। যে উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, সে উদ্দেশ্য কি আমাদের পূরণ হয়েছে?
- তখনকার সরকার দ্বারা জনগণ অত্যাচারিত হয়েছিল, এখনো হচ্ছে।
- তখনকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের না হয়ে সরকারের হয়ে কাজ করেছিল, এখনো এর ব্যতিক্রম নাই।
- তখনকার সরকার মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছিল, এখনো করতেছে।
- ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবের সাথে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য বৈঠকে বসেছিল। কিন্তু তলে তলে অস্র গোলাবারুদ পাঠিয়ে আক্রমণ করেছিল। আজকের সরকারও জনগণের সাথে একই প্রতারণাটা করে যাচ্ছে।
- জনগণের উপর নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে সরকারী ইন্সট্রুমেন্ট ব্যাবহার করত, আজকেও তাই হচ্ছে।
- ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখতে পশ্চিম পাকিস্থানিরা এহেন অত্যাচার নাই যা তারা করে নাই। আজও মানুষ এর থেকে মুক্ত হতে পারে নাই।
স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও আজকের সরকার আর পাকিস্থান সরকারের মধ্যে তপাত কোথায় দেখান?
আপনারা যারা আজ নিজেকে স্বাধীনতা স্বপক্ষের দাবি করেন, স্বাধীনতার উদ্দেশ্য কতটুকু পূরণ করতে পেরেছেন? লাখো শহীদের রক্ত ও কোঠি মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা টা তো পেয়ে গেলেন। কিন্তু একে ব্যবহার করে চললেই, স্বাধীনতার স্বপক্ষের হওয়া যায় না। এ জন্য কাজ করা লাগে।
আজ খুনি, দুর্নীতিবাজ, অধিকার হরণ করা, গণতন্ত্র হরণ করাও যদি একটি নিদৃস্ট দলের হয়ে থাকে তাকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের বলে দাবি করেন। এটা কি স্বাধীনতাকে কলঙ্কিত করা নয়?
আর যাকে তাকে স্বাধীনতার বিপক্ষের বলার অধিকার আপনাদের কি দিয়েছে? আপনি ঠিক করবেন কে স্বাধীনতা স্বপক্ষের আর কি বিপক্ষের?
স্বাধীনতা স্বপক্ষের সে ই যে স্বাধীনতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে চলে। এর বাহিরে যে চলবে সে ই বিপক্ষের। সে যেই হোক না কেনো। স্বাধীনতা কোনো ইনহেরিটেড চেতনা নয় যে নিজের স্বার্থে তা ব্যাবহার করবেন। এর জন্য জীবন বাজি রেখে মানুষ যুদ্ধ করে নাই।
এটা গনপ্রজাতন্ত্রিক বাংলাদেশ। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। জনগণকে ঠিক করতে দিন সে কি চায়। কে স্বাধীনতার স্বপক্ষের আর কে বিপক্ষের তা জনগণ ঠিক করবে।
আপনি স্বাধীনতার কথা বলেন কিন্তু গণতন্ত্র মানেন না
আপনি স্বাধীনতার কথা বলেন কিন্তু অন্যায়কে অন্যায় বলেন না
আপনি স্বাধীনতার কথা বলেন কিন্তু তাঁবেদারি করে চলেন
আপনি স্বাধীনতার কথা বলেন কিন্তু দাস হয়ে পড়ে থাকেন
আপনি স্বাধীনতার কথা বলেন কিন্তু ক্ষমতার মালিক জনগণ তা জানেন না
আপনি স্বাধীনতার কথা বলেন কিন্তু আপনার অধিকার আপনি জানেন না
তাহলে আপনি স্বাধীনতার মর্মার্থটাই বুঝতে শেখেন নি। যার কারণে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও শাসক শ্রেণী আপনাকে নিয়ে তামাশা করার স্পর্ধা দেখায়। যা দেখিয়েছিল স্বাধীনতা পূর্ববর্তী শাসকেরা।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৮