somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপরিকল্পিত নগরায়ন - অজুহাতই একমাত্র ভরসা

৩০ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগুণ, পানি, ভূমিকম্প, ভবন ধ্বস, সড়ক দুর্ঘটনা, যানজট এসব থেকে মুক্তির একমাত্র পথ, অজুহাত। অজুহাত দিয়েই দায়মুক্তি। আমাদের অজুহাত কি? জনসংখ্যা বেড়ে গেছে, ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়ে উঠেছে - এখন তা ভেঙ্গে নতুন শহর করা সম্ভব না, যখন সময় ছিল তখন পরিকল্পনামত শহর গড়ে তোলা হয় নাই ইত্যাদি ইত্যাদি। এমন নানাবিধ অজুহাত।

অতীতের ঘাড়ে দোষ দিতে দিতে কত বর্তমানকে যে অতীত করে দিয়েছি তার হিসেব নাই। ২০ বছর আগে যে কথা বলে এসেছি, ২০ বছর পরে এসেও বলব, ঈশ যদি ২০ বছর আগে ওই প্ল্যান টা করা যেত!

বর্তমান এখনই বর্তমান। অতীতে না হয় পরিকল্পনাকারীদের অভাব ছিল, এখন কি বিজ্ঞ পরিকল্পনাকারী আছে? উত্তর হল, না, মোটেও নাই। থাকলেও পরিকল্পিত নগর বা দেশ গড়ার সদিচ্ছা কারো নাই।

কেন্দ্রীয় ঢাকাকে পরিকল্পনামাফিক গড়ে তোলা যায় নাই। যায় নাই যায় নাই। কিন্তু ঢাকা তো বর্ধিত হচ্ছে ক্রমাগত। ঢাকার উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিমে বহু আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা গড়ে উঠেছে গত ২০ বছরের ব্যবধানে। যা সম্পূর্ণ অগোছালো ও অপরিকল্পিতভাবে। সরকার চাইলে আরো ভালোভাবে গড়তে পারত। এখন বলবে ২০ বছর আগে হইলে হয়ত সম্ভব হইত।

যাক, ঢাকার পারিপার্শ্বিক এলাকাগুলা তো শেষ, এতে আর হাত দেয়ার জো নেই। ঢাকা এখন বর্ধিত হয়ে সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত পরিব্যপ্ত হবার পথে। পরিকল্পিত শহর গড়তে মূল ঢাকার বাহিরে ওইসব শহর বা ঢাকা থেকে ওই শহর পর্যন্ত জায়গাগুলোকে ব্যবহার করতে, সরকার কি কোন পদক্ষেপ নিয়েছে? উত্তর হল, না, মোটেও নেয় নি।

কয়মাস আগে সোনারগাঁ তে যাওয়া হয়েছিল। ওইখানে একটা আবাসিক এলাকায় ছিলাম ২ দিন এর মত। ঢাকা চট্রগ্রাম প্রধান সড়ক থেকে ১৫-২০ মিনিট দূরত্বে। ওই এলাকায় রিকশা ছাড়া কোনো গাড়ি ঢুকে না। কারণ রাস্তা বলতে কিছুই নাই, অথচ সারি সারি বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে। এখন ওই এলাকায় আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিস ঢুকবে না, এ্যাম্বুলেন্স যাবে না, পুলিশের গাড়ি যাবে না, বাসা পরিবর্তন করলে বড় গাড়ি ঢুকবে না। যার জায়গায় যে তার মত করে বাড়ি করে রেখেছে, কারণ প্রশাসন অ্যালাউ করতেছে ওইগুলা করতে, অথবা প্রশাসন নির্বিকার।

আর বড় বড় খালি জায়গা দখল করে আছে বড় বড় হাউজিং এজেন্সি নামধারী ভূমি ধস্যুরা। যেখানে একসময় গড়ে উঠবে গতানুগতিকের মত ইট পাথরের জঞ্জাল। খালি মাঠ, নদী, কিছুই আর থাকবে না আজকের ঢাকার মত।

অথচ ওইসব এলাকাগুলাকে নতুন করে পরিকল্পিত করে সাজানো যেতো। কিন্তু সরকার এ ক্ষেত্রেও উদাসীন। আজ থেকে ২০ - ৫০ বছর পরে ওইগুলাও অজুহাত হিসেবেই চালিয়ে দেয়া হবে।

এই দিকে আমাদের দেশ গড়ার কাজে যারা নিয়োজিত তারা এসব দিকে নজর না দিয়ে, অজুহাত দিয়েই দায়মুক্ত হচ্ছে। কারণ সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনাতে তাদের লাভ নেই। তাদের চিন্তা হল, যাতে তাদের লাভ নাই তা করে কি হবে? ১০০ বছর ৫০০ বছর এর পরিকল্পনা করে কি লাভ, তারা তো আর থাকবে না। ওমর খৈয়াম একদা বলেছিল; ‘’নগদে যা পাও হাত পেতে নাও, বাকির খাতা শুন্যই থাক’’। তাই যে কাজে নগদ প্রাপ্তির সম্ভাবনা সে কাজ করেই তারা ক্ষান্ত যাচ্ছে। কতিপয় লোক নাম, ধাম, অর্থ কামিয়ে নিয়ে দেশের বারোটা বাজিয়ে যাচ্ছে আর কি।

অপরিকল্পিত নগরায়নের মাশুল এখন জনগণ দিচ্ছে। ভবিষ্যতে এর অবস্থা হবে আরো ভয়াবহ। এ নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। মাথা থাকলে তো মাথা ব্যাথা!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৬
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×